হজরত আলী (আ.) ছিলেন বিভিন্ন নবীর গুণে গুণান্বিত

হজরত আলী (আ.) ছিলেন বিভিন্ন নবীর গুণে গুণান্বিত

hussain, mohammad, imam mahdi, সিফফিন, জামালের যুদ্ধ, নারওয়ানের যুদ্ধ, খলিফা, খেলাফত, ইমামত, আলী, সিদ্দীক, ফারুক, মোর্তযা, বদর, ওহদ, খন্দক, খায়বার, বণী Shia, Sunni, Islam, Quran, Karbala, najaf, kufa, mashad, samera, madina, makka, jannatul baqi, kazmain, ali, Fatima, hasan, সাকিফা, বণী সায়াদা, সাহাবী, হিজবুল্লাহ, ইসরাইল, ড্রোন, বিমান, হাসান নাসরুল্লাহ , লেবানন, ইরান,  চীন, মালয়েশিয়া,  স্যাটেলাইট, কুয়ালালামপুর, বেইজিং, ভিয়েতনাম, মার্কিন, গোয়েন্দা, ইরাক, সিরিয়া, মিশর, আল কায়েদা, তাকফিরী, ইখওয়ানুল মুসলেমিন, বাংলাদেশ, ভারত, জিহাদ, ফিলিস্তিন, ইহুদি, গাজা, শহীদ, জিহাদ, ক্ষেপণাস্ত্র, দূতাবাস, সৌদি আরব , কুয়েত, রাশিয়া, ফ্রান্স, ব্রিটেন, আমেরিকা, ভিয়েনা, পরমাণু, বাহারাইন, আফগানিস্থান, থাইল্যান্ড, হজরত ফাতিমা, মার্জিয়া, সিদ্দিকা, মোহাদ্দেসা, বাতুল, উম্মে আবিহা, যাহরা, মুবারেকা, যাকিয়া, তাহেরা, রাযিয়া, জিহাদুন নিকাহ, পোপ, পাদ্রি, বাইতুল মোকাদ্দাস, ওহাবী, সালাফি, মুফতি, ড্রোন, পাকিস্থান, এজিদ, মাবিয়া, আবু সুফিয়ান, আলী আকবর, হুসাইন, শাবান, আমল, শবে বরাত, রমজান,
নিঃসন্দেহে আমাদের শেষ নবী (সা.) হচ্ছেন সকল নবীদের সর্দার এবং সম্মান ও মর্যাদার দিক থেকেও তিনি ছিলেন সবার উর্দ্ধে। দ্বীনে ইসলাম দুনিয়ার বুকে আসার পরে সকল দ্বীন বাতিল হয়ে যায় এমনকি হজরত নূহ, হজরত ইব্রাহিম, হজরত মূসা, হজরত ঈসা (আ.) এর শরীয়ত সমূহও বাতিল হয়ে গেছে। হজরত ঈসা (আ.) যিনি লোক চক্ষুর অন্তরালে রয়েছেন তিনি যখন আবির্ভূত হবেন তখন তিনিও হজরত মোহাম্মাদ (সা.) এর শরীয়তের উপরে ঈমান আনবেন এবং ইমাম মাহদী (আ.) এর পিছনে নামাজ আদায় করবেন। রাসুল (সা.) এর উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম ব্যাক্তিত্বগণ হচ্ছেন আহলে বাইত (আ.) গণ। পবিত্র আহলে বাইত (আ.) এর সদস্য ইমাম মাহদী (আ.) যখন আবির্ভূত হবেন তখন যে কজন নবীই আবির্ভূত হবেন তাঁরা ইমাম মাহদী (আ.) কে ইমাম হিসেবে মেনে নিবেন। কেননা তাদের নবুওয়াতের পর্ব শেষ হয়ে গেছে এবং এখন হচ্ছে ইমামতের সময় তাই তারাও রাসুল (সা.) এর আহলে বাইত এর ইমামদের নেতৃত্বকে মেনে নিবেন।
আমরা বিভিন্ন দিক থেকে আহলে বাইত (আ.) দের সম্মানকে আলোচনা করতে পারি।
১- আহলে বাইত (আ.) এর অস্তিত্বঃ
قَالَ يَا إِبْلِيسُ مَا مَنَعَكَ أَن تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ بِيَدَيَّ أَسْتَكْبَرْتَ أَمْ كُنتَ مِنَ الْعَالِينَ
আল্লাহ বললেন, হে ইবলীস, আমি স্বহস্তে যাকে সৃষ্টি করেছি, তার সম্মুখে সেজদা করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি অহংকার করলে, না তুমি তার চেয়ে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন? (সূরা ছোয়াদ, আয়াত নং ৭৫)

لِقَوْلِ النَّبِيِ‏: كُنْتُ‏ نَبِيّاً وَ آدَمَ‏ بَيْنَ الْمَاءِ وَ الطِّين‏
রাসুল (সা.) বলেছেনঃ আমি তখন নবী ছিলাম যখন আদমের অস্তিত্ব পানি ও মাটির মধ্যে ছিল। (মানাকেবে আলী ইবনে আবি তালিব, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ২১৪)
২- মানবীয় মর্যাদার দৃষ্টিতে
কোরআনের বর্ণিত হয়েছে যে আহলে বাইত (আ.) কে খোদা ঐশী জ্ঞান দান করেছেন। বিভিন্ন স্থানে আহলে বাইত (আ.) কে নাতিক্বে কোরআন বলা হয়েছে।
وَيَقُولُ الَّذِينَ كَفَرُواْ لَسْتَ مُرْسَلاً قُلْ كَفَى بِاللّهِ شَهِيدًا بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ وَمَنْ عِندَهُ عِلْمُ الْكِتَابِ
কাফেররা বলেঃ আপনি প্রেরিত ব্যক্তি নন। বলে দিন,আমার ও তোমাদের মধ্যে প্রকৃষ্ট সাক্ষী হচ্ছেন আল্লাহ এবং ঐ ব্যক্তি, যার কাছে গ্রন্থের জ্ঞান আছে। (সূরা রা’দ, আয়াত নং ৪৩)
وَكُلَّ شَيْءٍ أحْصَيْنَاهُ فِي إِمَامٍ مُبِينٍ
আমি প্রত্যেক বস্তু স্পষ্ট কিতাবে সংরক্ষিত রেখেছি। (সূরা ইয়াসীন, আয়াত নং ১২)

ইমাম সাদিক্ব (আ.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেনঃ আমাদের কাছে খোদার রহস্য এবং জ্ঞানের মধ্যে থেকে কিছু রহস্য এবং জ্ঞান আছে যা নিকটবর্তি মালায়েকা এবং অন্যান্য নবীগণ এবং ঐ সকল মুমিন যারা পরিক্ষিত হয়েছে তাদের মধ্যেও ও উক্ত রহস্য ও জ্ঞানকে ধারণ করার ক্ষমতা নেই। খোদাকে আমরা (আহলে বাইত) ছাড়া আর কেউ উক্ত জ্ঞানের মাধ্যমে ইবাদত করেনি। (কাফি খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৪০২)
৩- ক্ষমতা বা শক্তিঃ
ক্ষমতা বা শক্তি হচ্ছে জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ। খোদা পবিত্র কোরআনে বলেছেনঃ আমি প্রত্যেক বস্তু স্পষ্ট কিতাবে সংরক্ষিত রেখেছি। (সূরা ইয়াসীন, আয়াত নং ১২)
যদি আহলে বাইত (আ.) গণ সেই জ্ঞানের অধিকারী হন তাহলে অবশ্যই তারা হবেন সবচেয়ে বেশী শক্তিশালী ব্যাক্তি।
৪- খোদার প্রতি ভরসা এবং তাকওয়ার দৃষ্টিতেঃ
যদি কারো কাছে খোদার দানকৃত বিভিন্ন ধরণের জ্ঞান থাকে তাহলে অবশ্যই তার ফযিলতও হবে বেশী।
لَوْ كُشِفَ‏ الْغِطَاءُ مَا ازْدَدْتُ يَقِينا
যদি আমাদের চোখের সামনে থেকে পর্দাকে সরিয়ে নেয়া হয় তাহলেও আমার বিশ্বাসে কোন প্রভাব ফেলবে না। (ইরশাদুল কুলুব, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ১৪)

৫- রাসুল (সা.) এর ন্যায় আহলে বাইত (আ.) ও ফযিলতের অধিকারী ছিলেনঃ
فَمَنْ حَآجَّكَ فِيهِ مِن بَعْدِ مَا جَاءكَ مِنَ الْعِلْمِ فَقُلْ تَعَالَوْاْ نَدْعُ أَبْنَاءنَا وَأَبْنَاءكُمْ وَنِسَاءنَا وَنِسَاءكُمْ وَأَنفُسَنَا وأَنفُسَكُمْ ثُمَّ نَبْتَهِلْ فَنَجْعَل لَّعْنَةُ اللّهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ
অতঃপর তোমার নিকট সত্য সংবাদ এসে যাওয়ার পর যদি এই কাহিনী সম্পর্কে তোমার সাথে কেউ বিবাদ করে, তাহলে বল-এসো, আমরা ডেকে নেই আমাদের পুত্রদের এবং তোমাদের পুত্রদের এবং আমাদের স্ত্রীদের ও তোমাদের স্ত্রীদের এবং আমাদের নিজেদের ও তোমাদের নিজেদের আর তারপর চল আমরা সবাই মিলে প্রার্থনা করি এবং তাদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত করি যারা মিথ্যাবাদী। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং ৬১)

৬- হজরত ঈসা (আ.) ইমাম মাহদী (আ.) এর পিছনে নামাজ আদায় করবেন।
২০শে রমজান ৪০ হিজরীতে যখন ইমাম আলী (আ.) চেহারায় মৃত্যুর আলামত প্রস্ফুটিত হয়। তিনি তাঁর পুত্র ইমাম হাসান (আ.) কে বলেনঃ আমাদের বাড়ির দরজার যে সকল শিয়ারা একত্রিত হয়ে আছে তাদেরকে আমার কাছে আসতে দাও যেন তারা আমার সাথে সাক্ষাত করতে পারে। দরজা খুলে দেয়ার সাথে সাথে শিয়ারা ইমাম আলী (আ.) এর চারিদিকে ঘিরে ক্রন্দন ও আহাজারী করতে থাকে। তখন ইমাম আলী (আ.) তাদেরকে বলেনঃ আমার মারা যাওয়ার পূর্বে তোমাদের কিছু জানার থাকলে আমাকে প্রশ্ন করতে পার কিন্তু শর্ত হচ্ছে তোমাদের প্রশ্ন যেন ছোট এবং সংক্ষিপ্ত হয়। ইমাম আলী (আ.) এর একজন সাহাবী সাআসাআ বেন সোহান যিনি শিয়া ও সুন্নী আলেম উভয়ের কাছেই বিশ্বস্ত ব্যাক্তি ছিলেন। তিনি ইমাম (আ.) কে প্রশ্ন করেন যে আপনার ফযিলত বেশী না হজরত আদম (আ.) এর? ইমাম (আ.) তার উত্তরে বলেনঃ মানুষ নিজের প্রশংসা নিজেই করা বিষয়টি ঠিক না। কিন্তু স্বয়ং খোদা বলেছেনঃ
وَأَمَّا بِنِعْمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثْ
এবং আপনার পালনকর্তার নেয়ামতের কথা প্রকাশ করুন। (সূরা দোহা, আয়াত নং ১১)
তাই বলছি যে হজরত আদম (আ.) এর চেয়ে আমার ফযিলত বেশী। (হজরত আদম (আ.) এর জন্য বেহেস্তে সকল ধরণের নেয়ামত আরাম আয়েশের ব্যাবস্থা ছিল শুধুমাত্র তাকে গন্দুম খেতে নিষেধ করেন। কিন্তু তারপরেও তিনি গন্দুম খান এবং তাকে বেহেস্ত থেকে দুনিয়ার বুকে পাঠিয়ে দেয়া হয়। যদিও আমার জন্য গন্দুমকে নিষিদ্ধ করা হয়নি কিন্তু যেহেতু আমি দুনিয়াকে পছন্দ করি না সেহেতু তা আমার জন্য হালাল থাকলেও তা আমি পছন্দ করতাম না। উক্ত কথা দ্বারা তিনি হজরত আদম (আ.) এরর ফযিলত কমাতে চাননি বরং তিনি বুঝাতে চেয়েছেন যে, মানুষের কেরামত ও ফযিলত তার জোহদ এবং ইবাদতের মাধ্যমে বৃদ্ধি পায়। যে ব্যাক্তি দুনিয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখবে অবশ্যই সে খোদার নিকট ততই প্রিয় হবে।
অতঃপর সাআসাআ জিজ্ঞাসা করেন আপিনি উত্তম না হজরত নূহ নবী?
ইমাম (আ.) জবাবে বলেন আমি। কেননা যখন হজরত নূহ (আ.) তাঁর গোত্রতে দাওয়াত দেন কিন্ত তারা তার অনুসরণ করেনি উপরন্তু তার উপরে অনেক জুলুম ও অত্যাচার করে। হজরত নূহ (আ.) তাদেরকে অভিসম্পাত করেন এবং বলেনঃ হে খোদা! কোন কাফেরকে দুনিয়ার বুকে জিবীত রেখেন না। কিন্তু রাসুল (সা.) এর ওয়াফাতের সাথে সাথে তাঁর উম্মতেরা আমার উপরে অনেক অত্যাচার করেছে। কিন্তু আমি কখনও তাদেরকে অভিসম্পাত করিনি বরং ধৈর্য ধারণ করেছি। তিনি তার ধৈর্য সম্পর্কে তাঁর খুৎবা সেকসেকিয়াতে এভাবে বর্ণনা করেছেন যে আমি এমন অবস্থায় ধৈর্য ধারণ করেছি যে, আমার চোখে কাটা এবং আছে এবং গলাতে হাড় বিধে আছে। ইমাম বুঝাতে চেয়েছেন যে, যে ব্যাক্তি বীপদ ও কষ্টের সময়ে ধের্য ধারণ করবে সে খোদার নিকট তার ফযিলত ততই বেশী হবে।
সাআসাআ আবার জিজ্ঞঅসা করে আপনার ফযিলত বেশী না হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর?
তিনি বলেনঃ আমার। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেছেনঃ
رَبِّ أَرِنِي كَيْفَ تُحْيِـي الْمَوْتَى قَالَ أَوَلَمْ تُؤْمِن قَالَ بَلَى وَلَـكِن لِّيَطْمَئِنَّ قَلْبِي
হে আমার পালনকর্তা আমাকে দেখাও, কেমন করে তুমি মৃতকে জীবিত করবে। বললেন; তুমি কি বিশ্বাস কর না? বলল, অবশ্যই বিশ্বাস করি, কিন্তু দেখতে এজন্যে চাইছি যাতে অন্তরে প্রশান্তি লাভ করতে পারি। (সূরা বাকারা, আয়াত নং ২৬০)
কিন্তু আমি আগেই বলেছি যে, যদি আমার চোখের সামনে থেকে পর্দাকে সরিয়ে নেয়া হয় তাহলেও আমার বিশ্বাসে কোন প্রভাব ফেলবে না। (ইরশাদুল কুলুব, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ১৪)
ইমাম বুঝাতে চেয়েছেন মানুষের ফযিলত তার বিশ্বসের সাথে বৃদ্ধি পায় এবং সবচেয়ে বড় বিশ্বাস হচ্ছে খোদার প্রতি বিশ্বাস।

সাআসাআ আবার জিজ্ঞাসা করে আপনার ফযিলত বেশী না হজরত মূসা (আ.) এর?
তিনি বলেনঃ আমার। এর দলিলে তিনি বলেনঃ হজরত মূসা (আ.) কে যখন খোদা ফেরাউনের কাছে দ্বীনের দাওয়ার দেয়ার জন্য প্রেরণ করেন তখন তিনি বলেনঃ
قَالَ رَبِّ إِنِّي قَتَلْتُ مِنْهُمْ نَفْسًا فَأَخَافُ أَن يَقْتُلُونِ
وَأَخِي هَارُونُ هُوَ أَفْصَحُ مِنِّي لِسَانًا فَأَرْسِلْهُ مَعِيَ رِدْءًا يُصَدِّقُنِي إِنِّي أَخَافُ أَن يُكَذِّبُونِ
মূসা বলল, হে আমার পালনকর্তা, আমি তাদের এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছি। কাজেই আমি ভয় করছি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে। (সূরা কেসাস, আয়াত নং ৩৩)
আমার ভাই হারুণ, সে আমা অপেক্ষা প্রাঞ্জলভাষী। অতএব, তাকে আমার সাথে সাহায্যের জন্যে প্রেরণ করুন। সে আমাকে সমর্থন জানাবে। আমি আশংকা করি যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলবে। (সূরা কেসাস, আয়াত নং ৩৪)
কিন্তু যখন রাসুল (সা.) আমাকে সূরা বারাআতের প্রথম আয়াত প্রচারের জন্য মক্কায় কুরাইশের কাফেরদের মাঝে প্রেরণ করেন যেখানে এমন কোন গোত্রের লোক ছিল না যে আমার হাতে মারা যায়নি। কিন্তু আমি ভয় পাইনি এবং রাসুল (সা.)এর নির্দেশ কে পালন করেছি।
ইমাম তার উক্ত কথার মাধ্যমে খোদার প্রতি তাওয়াক্কুল বা ভরসাকে বুঝাতে চেয়েছেন যে, খোদার প্রতি যার তাওয়াক্কুল যত বেশী হবে তার ফযিলত ততই বেশী হবে। হজরত মূসা তার ভাইয়ের প্রতি ভরসা করেছিলেন কিন্তু আমি শুধুমাত্র খোদার উপরে ভরসা করেছিলাম।
সাআসাআ আবার জিজ্ঞাসা করে আপনার ফযিলত বেশী না হজরত ঈসা (আ.) এর?
তিনি বলেনঃ আমার। এর দলিলে তিনি বলেনঃ যখন হজরত জিব্রাইলি (আ.) খোদার নির্দেশে হজরত মারিয়াম (আ.) এর উপরে ফু দেয় তখন হজরত মারিয়াম (আ.) গর্ভবতি হয়ে পড়েন এবং যখন তার বাচ্চা প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসে তখন তাকে ওহী করা হয় যে তুমি বাইতুল মোকাদ্দাস থেকে বাইরে চলে যাও কেননা উক্ত স্থানটি হচ্ছে ইবাদতের স্থান না বাচ্চা জন্মদানের স্থান। তাই তিনি বাইতুল মোকাদ্দাস থেকে বাইরে চলে যান এবং একটি শুষ্ক স্থানে হজরত ঈসা (আ.) কে জন্মদান করেন। কিন্তু যখন আমার মা হজরত ফাতেমা বিনতে আসাদ যখন বুঝতে পারেন যে আমার জন্মের সময় ঘনিয়ে এসেছে তখন তিনি কাবার কাছে আসেন এবং দোয়া করেন যে, হে খোদা! আপনাকে এই পবিত্র কাবা ঘরের এবং যিনি এ কাবা ঘরকে তৈরী করেছেন তার ওয়াস্তা দিচ্ছি আমার প্রসব বেদনাকে আপনি সহজ করে দিন। তখন কাবা ঘরের দেয়াল ফেটে যায় এবং আমি কাবা ঘরে জন্মগ্রহণ করি।
যেহেতু পবিত্র কাবা বাইতুল মোকাদ্দাসের উপরে প্রাধান্য রাখে সেহেতু হজরত আলী (আ.) হজরত ঈসা (আ.) এর তুলনায় ফযিলতের দিক থেকে উত্তম স্থানে জন্মগ্রহণ করেন।
ইবনে আবিল হাদীদ, ইমাম হাম্বাল, ইমাম ফাখরে রাযী, শেইখ সুলাইমান বালখি হানাফী সহ অন্যান্যরাও ‍উক্ত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন যে রাসুল (সা.) বলেছেনঃ যদি কেউ হজরত আদম (আ.) এর জ্ঞানকে দেখতে চায় তাহলে সে যেন হজরত আলী (আ.) এর জ্ঞানের প্রতি লক্ষ্য রাখে, যদি কেউ হজরত নূহ (আ.) এর যিনি ছিলেন তাকওয়ার প্রতিমূর্তি ও হিকমত দেখতে চাই, যদি কেউ হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর খোদার বন্ধুত্ব এবং তাঁর হিলম কে দেখতে চায়, যদি কেউ হজরত মূসা (আ.)সম্ভ্রমকে দেখতে চায়, যদি কেউ হজরত ঈসা (আ.) এর ইবাদতকে দখেতে চায় তাহলে সে যেন হজরত আলী (আ.) এর প্রতি দৃষ্টিপাত করে। (আল মুসতারশেদ ফি ইমামাতিল আলী ইবনে আবি তালিব (আ.), পৃষ্ঠা ২৮৭, হাদীস নং ১০১)
অশেষে মীর সৈয়দ আলী হামেদানী শাফেয়ী উক্ত হাদীসের শেষে লিখেছেন যে, বিভিন্ন নবীর ৯০টি গুণ হজরত আলী (আ.) এর মধ্যে ছিল যা আর অন্য কারো মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় না। এছাড়াও বালখি হানাফী, গান্জি শাফেয়ী এবং আহমাদ ইবনে হাম্বাল সহ অন্যান্যরাও ইমাম আলী (আ.) সম্পর্কে যে সকল ফযিলত বর্ণনা করেছেন আর অন্য কোন সাহাবীর ক্ষেত্রে তা বর্ণনা করেননি। সুতরাং উক্ত বর্ণনার ভিত্তিতে বুঝতে পারি যে, হজরত আলী (আ.) এর মধ্যে বিভিন্ন নবীর গুণাবলি বিদ্যমান ছিল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.