মা যায়নাব (কুঃ আঃ)পাঠচক্র

“মা যায়নাব (কুঃ আঃ) পাঠচক্র”

পরিচিতি

মোহাম্মদ (দঃ) প্রেম নগরীর ফুলের তৃতীয় ফল ইসলামের আকাশের পূর্নিমার চাঁদ, সিদ্দিকায়ে সোগরা, উম্মুল মাসাইব, সাইয়্যেদা মা যায়নাব (কুঃ আঃ); মা ফাতেমা (কুঃ আঃ) শহীদ হওয়ার পর তাঁর স্থলে স্থলাভিষিক্ত হয়ে যদিও অত্যাচারীত ও বঞ্চিত তবুও অপরাজিত অন্যায়ের বিরুদ্ধে উন্নত শীর, ঈমানের পরিপূর্ণতার সূফলে আধ্যাত্মিকতা, ত্যাগ, সাহসিকতা, মুক্তচিন্তাধারার আলোকে সৃষ্টির স্রেষ্ট হওয়ার ওয়াদাকে ও ঘুমন্ত মানুষকে জাগিয়ে তুলতে, গুমরাহ বা পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিতদের হক ও বরহক্ককে চিনিয়ে দিতে “মা যায়নাব (কুঃ আঃ) পাঠচক্র” কারবালার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ইতিহাসের আলোকোচ্ছটায় অন্ধকারকে বিণাশের প্রত্যয়ে সংঘবদ্ধ।

লক্ষ্য

“নারী মানব জাতির মুরব্বী”, “নারীই একমাত্র সৃষ্টি যার কোল থেকে পুরুষ মেরাজে গমন করেছেন”। তাই নিজেদের কোল থেকে এমন সব মানুষ সমাজের হাতে তুলে দেওয়া যাদের বরকতে একটি সমাজ শুধু নয় বরং বহু সমাজ অটল সংগ্রামী ও সমুন্নত মানবিক মুলোবোধগুলোর অধিকারী হতে পারে।

উদ্দেশ্য

“মা যায়নাব (কুঃ আঃ) পাঠচক্র” এই উদ্দেশ্যে যে, কী ছোট, কী বড়, কী যুবতী, কী বৃদ্ধা সকলেই সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক ময়দানে উপস্থিত থেকে এবং পুরুষদের পাশাপাশি ও এদের চেয়েও উত্তমভাবে ইসলামের অগ্রগতির পথে এবং কুরআনুল কারীমের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে, মা যায়নাবের মত ত্যাগি মনভাব নিয়ে সব ধরণের দু:খ কষ্ট, এমনকি শাহাদাতবরণেও তৈরী থেকে সুনিশ্চিত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে নিজেদেরকে পৌছানো।

মূলনীতি

আমরা সবাই আল্লাহ’র থেকে এসেছি। সমগ্র জগৎটাই আল্লাহ’র কাছ থেকে এসেছে, সব কিছুই আল্লাহ’র তাজাল্লী (প্রকাশ)। আর সমগ্র জগৎ তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করবে। তাই কতই না উত্তম হবে যে এ প্রত্যাবর্তনটা যদি সেচ্ছাপ্রণোদিত ও নির্বাচিত হয়। তাই গবেষণা ও পর্যালোচনায় ইসলামের সত্যতা এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ইসলামের মূলনীতিগুলোর প্রতি দৃষ্টিদান করা এবং যে সমস্ত অনন্য বৈশিষ্ট্য অন্যান্য ধর্ম থেকে ইসলামকে উচ্চাসন দিয়েছে সে সবকে ভূলে না যাওয়া।

সমাপ্তি বক্তব্য

প্রতিটি মানুষই কতকগুলো মানসিক শক্তির অধিকারী, তা হচ্ছে: স্নেহ-মমতা-ভালবাসা, বিচারবুদ্ধি এবং ইচ্ছাশক্তি; এর যেকোন একটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে ব্যক্তির মানসিক ভারসাম্য বিনষ্ট হয়ে যায়। ইসলামী সমাজব্যবস্থায় নারীর সেই অধিকারই রয়েছে যে অধিকার পুরুষের রয়েছে। আর এ অধিকারগুলো হলো:

 শিক্ষা লাভের অধিকার,
 কাজের অধিকার,
 মালিকানার অধিকার,
 ভোট দানের অধিকার ও
 ভোট লাভের অধিকার।

মানবিক অধিকারের দৃষ্টিতে নারী ও পুরুষের মাঝে কোন ফারাকই নেই কেননা উভয়েই মানুষ। পুরুষের মত নারীও তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকারী। ইসলাম নারীকে এত উচ্চ মর্যাদায় সমাসীন করেছে যাতে সে সমাজে তার মানবিক মূল্যেকে লাভ করতে সক্ষম হয় এবং “পণ্য হওয়া” থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। ইসলাম যে কাজের বিরোধী এবং যা হারাম তা হলো অপকর্ম ও দুর্নীতি, তা নারীর পক্ষ থেকেই হোক বা পুরুষের পক্ষ থেকেই হোক এতে কোন তফাৎ নেই। যে সমস্ত অশ্লীলতা ও বিপর্যয় নারীদের হুমকি প্রদর্শন করে থাকে তা থেকে আমরা আমাদেরকে মুক্ত করতে চাই এবং ইমাম জয়নুল আবেদীন (আঃ) কে হেফাজতের মতো আমাদের বর্তমান ইমাম, ইমাম মাহদী (আঃ) কে হেফাযত করবো।

[বিঃ দ্রঃ ইসলামে নারীর অবশ্যই হেজাব (পর্দা) থাকতে হবে, তবে চাঁদর জরুরী নয়। বরং যেকোন পোষাক তার পর্দার (হেজাব) কাজ চালাবে নারী সে পোষাকই পরিধান করতে পারে।]

মিশনের কার্যক্রম

মা যায়নাব (কুঃ আঃ) এর জন্মদিবস উপলক্ষে ৫ ই জামাদিউল আওয়াল মহিলাদের বাষিক মাহফিল।
প্রতি মাসের ১০ তারিখ মাসিক অনুষ্ঠান।
মর্হরম মাসের শুরু থেকে ইয়াজিদের দরবারে যাওয়ার দিন পর্যন্ত শোক মজলিস এবং সত্য পথের পথিক হোসাইনের আত্মত্যাগের মাধ্যমে ইসলামকে জিন্দাকরনের জলন্ত প্রমাণকে ও কালেমাকে বাস্তবায়নের কার্যকরনকে দিকে দিকে ছড়িয়ে দেওয়া।
এছাড়া ওস্তাদ-এর সম্মতিক্রমে পরিবেশ পরিস্থিতিভেদে অনুষ্ঠান।

মায়ের মর্যাদা

 মাতৃত্বের সম্মানের মত আর কোন পেশাই নেই।
 সমাজের প্রতি মায়ের যে সেবা তা শিক্ষকের সেবার চেয়েও বড়, বরং সকলের সেবার উর্ধ্বে।
 শিশুর প্রথম বিদ্যালয়ই হচ্ছে মাতৃকোল।
 শিক্ষকের সান্নিধ্যের চেয়ে মায়ের কোলেই শিশুরা উত্তম শিক্ষা লাভ করে থাকে।
 মায়ের কোলই হচ্ছে বৃহত্তম শিক্ষা নিকেতন যেখানে শিশু শিক্ষা-দীক্ষা পায়।
 উত্তম মাতা উত্তম সন্তান গড়ে তোলে।
 মায়েরা যদি পবিত্র গুণের অধিকারী মা হয়ে থাকে তাহলে তদ্রুপ গুণের সন্তানদেরকেই উপহার দিতে পারে।
 খোদা না খাস্তা মা যদি বিপথগামী হয় তাহলে তার কোলেই সন্তান বিপথগামী হিসাবে বড় হবে।
 নারীগন মাতৃসম্মান ও মর্যাদার অধিকারী। এ সম্মান ও মর্যাদার দিক থেকে আমরা পুরুষদের চেয়েও বড়।
 দেশ ঠিক হওয়াটা আপনাদের উপর নির্ভরশীল, মায়েদের প্রতি নির্ভরশীল ও ঋণী। দেশের ধ্বংস কিংবা গঠন উভয়ই আ্মাাদের ওপর নির্ভর করছে।
 মূলতঃ মায়ের পবিত্র কোল ও বাবার পরশ থেকেই শিক্ষা-দীক্ষা শুরু হয়ে যায় এবং এদের ইসলামী ও সঠিক শিক্ষা-দীক্ষার উপরই দেশের স্বাধীনতা, মুক্তি ও কল্যাণের ভিত্-রচিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.