بسم الله الرحمان الرحيم
আমিরুল মুমিনীন আলী ইবনে আবি তালিব (আঃ) সম্পর্কে মহানবী (সাঃ)-এর
একশত দশটি হাদীস
[আহলে সুন্নাতের বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য হাদীস গ্রন্থ থেকে সংকলিত]
অনুবাদ : মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস বাদশা
সম্পাদনা : অধ্যাপক সিরাজুল হক
দুটি কথা
সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব জাহানের প্রভুর জন্য। আর সর্বোৎকৃষ্ট দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক নবীকুল শিরোমণি, মহান আল্লাহর নির্বাচিত আমানতদার হযরত আবুল কাশেম মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর ওপর এবং তাঁর পবিত্র ও কল্যাণময় আহলে বাইত (আঃ)-এর ওপর।
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর পবিত্র যবান দ্বারা হযরত আলী (আঃ)-এর মর্যাদায় যে অগণিত প্রশংসা ও স্তুতি বর্ণিত হয়েছে তা অন্য কোনো সাহাবী কিংবা তাবেঈনের জন্যে বর্ণিত হয়নি। (সাহাবী হলো রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর সেসকল সহচর যারা তাঁর সংস্পর্শ এবং সংসর্গ লাভ করেছেন। আর তাবেঈন হলো তাঁরা, যারা স্বয়ং রাসূলুল্লাহকে কিংবা তাঁর সময়কালকে দেখনি অথবা তাঁর সময়কালে ইসলামের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়নি)। এই কারণে তাঁকে অন্য সবার তুলনায় স্বতন্ত্র করে তুলে ধরেছেন এবং তাঁকে অন্যদের চেয়ে উচ্চতম মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। এই সব কিছুই রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পরবর্তীকালের জন্য তাঁর নেতৃত্ব, শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় বহন করে। আর সত্যিকার অর্থেই মর্যাদার শ্রেষ্ঠত্বের অঙ্গনে তাঁর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে তাঁর মর্যাদায় বর্ণিত মুতাওয়াতির হাদীসসমূহ এই অমোঘ সত্যকে স্পষ্টরূপে তুলে ধরে।
ইতিহাসের দীর্ঘ পরিক্রমায় হযরত আমিরুল মুমিনীন (আঃ)-এর মর্যাদা ও গুণাবলীর ওপর বর্ণনাসমূহকে মুছে ফেলা কিংবা বিকৃত ও রদবদল ঘটানোর যে অবিরাম প্রয়াস চালানো হয়েছে এত কিছু সত্ত্বেও তাঁর ব্যক্তিত্বের ঔজ্জ্বল্য আজো দিনের সূর্য কিরণের ন্যায় দ্যুতি ছড়িয়ে চলেছে। ইবনে আবিল হাদীদ বলেন, ‘‘তাঁর মর্যাদা ও গুণাবলী এমনই শীর্ষ স্থানে বর্ণাঢ্যময় সুবিস্তৃতি লাভ করেছে যে তা থেকে বিমুখ হওয়া এবং সেগুলো প্রচার ও প্রচলনে বিরোধিতা করা একটি কদর্য ও নিন্দনীয় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আর আমার কি সাধ্য রয়েছে সেই মানুষটির সম্মান আর মর্যাদা বর্ণনা করার, যার শত্রুরা এবং অনিষ্টকামীরাও পর্যন্ত এমন পরিস্থিতিতে তাঁর প্রশংসায় কীর্তনে পঞ্চমুখ হয়েছে যখন তাঁর মর্যাদা ও মহিমা গোপন করা কিংবা অস্বীকার করা তাদের জন্যে সাধ্যাতীত হয়ে পড়েছিল। আর আপনারা নিজেরাও ভালো করে জানেন যে, উমাইয়ারা, যারা পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত গোটা মুসলিম জাহানে শাসন ক্ষমতা চালিয়েছিল, তারা তাঁর পবিত্র আলোকময় অস্তিত্বকে ম্লান করে দেওয়ার জন্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছিল, জনগণকে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলেছিল, তাঁর বিরুদ্ধে নানা অপবাদ ও দুর্নাম রটিয়ে ছিল, তাঁকে সকল মেম্বর (মঞ্চ) থেকে অভিসম্পাত বর্ষণ করেছিল। আর যারা তাঁর প্রশংসায় মুখ খুলতো যেমন ইবনে সিক্কীত, তাদেরকে হুমকি ধমকিসহ এমনকি আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে হত্যা করেছে। তদ্রুপভাবে যে কোনো কথায় যদি তাঁর কোনো প্রশংসার ঘ্রাণ পাওয়া যেত কিংবা তাঁকে স্মরণের কারণ হতো তাহলে তা বলতে বাধা দিত। এমনকি কোনো সন্তানকে তাঁর নামে নাম রাখতেও অনুমতি দিত না।
কিন্তু এত কিছুর পরেও কোনো ফল হয়নি। তাঁর আকাশ ছোঁয়া মহিমা ও মর্যাদা মৃগনাভির হৃদয়গ্রাহী সুঘ্রাণের মতো-যা লুকিয়ে রাখা যায় না, যতই তাকে লুকিয়ে রাখা হয় ততই তা মূল্যবান হয়ে ওঠে, কিংবা সূর্যের অপ্রতিরোধ্য উজ্জ্বলতার মতো যা হাতের তালুতে বন্দী করা যায় না, কিংবা প্রস্ফূটিত দিনের শুভ্রতার মতো যা অন্ধ চোখ দেখতে না পেলেও অগণিত চাক্ষুষ্মানের চোখ তার থেকে উপকার লাভ করে থাকে।
আমি আর কি বলবো সেই ব্যক্তির মর্যাদা সম্পর্কে যাঁর প্রত্যেকটি গুণ-বৈশিষ্ট্য নিজে নিজে গর্ব করে, প্রত্যেক ফেরকাই তাদের বংশ লতিকাকে তাঁর কাছে নিয়ে উপনীত করে আর প্রত্যেক দলই তাঁকে নিজের দিকে টানতে চায়।
তিনি হলেন সকল শুভ এবং পুণ্যের উৎসমূল, সেগুলোর পূর্ণতা দানকারী। তিনি সকল মঙ্গলের অগ্রদূতসম আর সকল পুণ্যের প্রতিভাস স্থল। তাঁর পরে যে কেউ যে কোনো মর্যাদার অধিকারী হলে সেটা তাঁর থেকেই সে গ্রহণ করে থাকে, তাঁকেই অনুসরণ করেছে এবং তাঁর পথেই গমন করেছে।’’ (শারহে নাহজুল বালাগা, ইবনে আবিল হাদীদ, খন্ড ১, পৃঃ ১৬)
ইবনে আব্দুল বার মালেকী আহমাদ ইবনে হাম্বাল এবং ইসমাঈল ইবনে ইসহাকের নিকট থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ‘‘ যা কিছু আলী ইবনে আবি তালিবের মর্যাদায় ‘হাসান’ সনদবিশিষ্ট রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে তা অন্য কোনো সাহাবীর সম্পর্কে বর্ণিত হয়নি।’’ (আল-ইস্তিয়াব, খন্ড ৩:৫১,
মুস্তাদরাকে হাকেম, খন্ড. ৩, পৃঃ ১০৭, তারীখে দামেস্ক, খন্ডঃ ৩, পৃঃ ৮৩, ১১৭, তাহ্যীবুত তাহ্যীব, ইবনে হাজার, খন্ড ৭, পৃঃ ৩৩৯, নেসায়ী ও অন্যান্য)
এই মুহূর্তে আমাদের সম্মুখে রয়েছে মূল্যবান ও বিরাট এক স্মৃতিকথা। আমাদের মহান মাওলা আলী ইবনে আবি তালিব (আঃ)-এর (জন্ম থেকে শাহাদাত পর্যন্ত) শ্রেষ্ঠত্বের স্মৃতিকথা, তৎকালীন দিনকাল, শাসনব্যবস্থাসহ যেখানেই তাঁর সে শ্রেষ্ঠত্বের স্মৃতি চিহ্ন বহন করে, সে সকল স্মৃতি কথা থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। সেসকল বর্ণাঢ্য শ্রেষ্ঠত্বের সামনে দাঁড়িয়ে সম্মানে আমাদের মাথা অবনত হয়ে আসে। কারণ, তিনি হলেন তাদের জন্য একটি স্পষ্ট মানদন্ডস্বরূপ যারা হাকীকতকে (প্রকৃত সারসত্য) চিনতে সক্ষম হয়েছে এবং সেই পথে অগ্রসর হয়েছে এবং তার ধারক বাহকদেরকে অনুসরণ করেছে। আর দুনিয়া যাদেরকে ধোঁকা দিয়েছে ফলে তারা সত্য থেকে চোখ বুঁজে মিথ্যাপন্থীদের পেছনে ধাবিত হয়েছে। তারা হলো ঐ জঙ্গে জামালের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী দল, জঙ্গে সিফফীনের অত্যাচারী দল আর বেদআতপন্থী খারিজী দল। আর সেসকল দু-মুখো মুনাফিক দল যারা মনের মধ্যে অসংখ্য দ্বিধা আর সংকোচ নিয়ে মাটির টিলার ওপর দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছে যে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কোন্ দিকে ঘুরে এবং বিজয় কার প্রাপ্য হয়….
হে আল্লাহ! আমাদেরকে সত্যপন্থীদের সঙ্গী করে দাও এবং আমিরুল মুমিনীন হযরত আলী (আঃ) এর সাথে পুনরুত্থিত করো যিনি সত্য পথের দিশা লাভকারীদের প্রতীক স্বরূপ, মুত্তাকীদের নেতা, ন্যায়পন্থীদের অগ্রদূত, সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী, সাধকদের সৌন্দর্য শোভা এবং মুক্তিপ্রাপ্তদের সরদার।
এবার এতসব পুণ্য ও মর্যাদার সাগর থেকে যা শুধু কেবল এক আল্লাহর উপাসনাকারীদের মাওলা আমিরুল মুমিনীন আলী ইবনে আবি তালিব (আঃ)-এর ব্যক্তিত্বেই সৌনদর্য বর্ধন করে, তার মধ্যে থেকে ১১০টি হাদীসকে বেছে নিয়ে তাঁরই পবিত্র নামে উৎসর্গ করছি। মহানবী (সাঃ)-এর পবিত্র যবান থেকে নিঃসৃত হযরত আলী (আঃ)-এর মর্যাদায় এই বাণীগুলো যেন সূর্যের ভাষায় চন্দ্রের স্ত্ততি। অবশ্য, ‘‘এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্যে যার অনুধাবন করার মতো অন্তর রয়েছে অথবা যে নিবিষ্ট মনে শ্রবণ করে। আর তিনি নিজে তো সবার ওপর সাক্ষী রয়েছেন।’’ (কফঃ ৩৭)
১. মুমিনদের আমলনামার শিরোনাম
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عُنْوَانُ صَحِيفَةِ الْمُؤمِنِ حُبُّ عَلِيِّ بْنِ أََبِي طَالِبٍ.
মুমিনের আমলনামার শিরোনাম হলো আলী ইবনে আবি তালিবের ভালোবাসা।
(আল মানাকিব – ইবনে মাগাযেলী: ২৪৩/২৯০, কানযুল উম্মাল ১১:৬০১/৩২৯০০, তারীখে বাগদাদ : ৪:৪১০)
২. আরবের সরদার
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أَنَا سَيِّدُ وُلْدِ آدَم، وَ عَلِيٌّ سَيِّدُ الْعَرَبِ.
আমি আদম সন্তানদের সরদার আর আলী আরবদের সরদার।
(আল মু’জামুল আওসাত-তাবারানী ২:২৭৯/১৪৯১, ইমাম আলী (আঃ) (অনুবাদ)- ইবনে আসাকির ২:২৬২/৭৮৯, কানযুল উম্মাল-১১-১৮/৩৩০০৬)।
৩. হিকমতের দরজা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أَنَا دَارُ الْحِكْمَةِ، وَ عَلِيٌّ بَابُهَا.
আমি হিকমতের গৃহ আর আলী তার দরজা।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৭/৩৭২৩, হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৪, আল জামিউস্ সাগীর ১:৪১৫/২৭০৪)
৪. জ্ঞানের নগরীর দরওয়াযা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أَنَا مَدِينَةُ الْعِلْمِ وَ عَليُّ بَابُهَا، فَمَنْ أَرَادَ الْمَدِينَةَ فَلْيَأتِ البَابَ.
আমি সমস্ত জ্ঞানের নগরী আর আলী তার তোরণ। কাজেই যে এই নগরীতে প্রবেশ করবে তাকে তোরণ বা দ্বারের মধ্য দিয়ে আসতে হবে।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৬-১২৭, জামেউল উসুল ৯:৪৭৩/৬৪৮৯, উসুদুল গবাহ্ ৪:২২, তারীখে বাগদাদ ১১:৪৯-৫০, আল বেদায়াহ্ ওয়ান নেহায়া ৭:৩৭২, আল জামেউস্ সাগীর ১:৪১৫/২৭০৫)
৫. উম্মতের মধ্যে সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أَعْلَمُ اُمَّتِي مِنْ بَعْدِي عَلِیُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ.
আমার পরে আলী হলো আমার উম্মতের মধ্যে সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৪/৩২৯৭৭, আল ফেরদৌস ১:৩৭০/১৪৯১)
৬. মহানবী (সাঃ)-এর ভাই
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইমাম আলীকে বলেনঃ
أَنْتَ أَخِي فِي الدُّنْيَا وَ الْاَخِرَة.
তুমি দুনিয়া এবং পরকালে আমার ভাই।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭২০, আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১২৪)
৭. রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর মনোনীত
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أَمَّا أَنْتَ يَا عَلِيّ، أَنْتَ صَفِيِّي وَ أمِينِي.
আর তুমি হে আলী! তুমি আমার মনোনীত এবং আমার আমানতদার।
(খাসায়েসে নাসায়ী : ১৯, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১৫৬)
৮. মহানবী (সাঃ)-এর স্থলাভিষিক্ত
হুজুর (সাঃ) হযরত আলীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেনঃ
إِنَّ هَذَا أَخِي وَ وَصِيِّي وَ خَلِيفَتِي فِيكُمْ، فَاسْمَعُوا لَهُ وَ أَطِيعُوه.
জেনে রেখো যে, সে তোমাদের মাঝে আমার ভাই, উত্তরসূরি এবং স্থলাভিষিক্ত। সুতরাং তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং তার আনুগত্য করবে।
(তারীখে তাবারী ২:২১৭, আল কামিল ফিত্ তারীখ ২:৬৪, মাআলিমুত্ তানযীল ৪:২৭৮)
৯. মুমিনদের অভিভাবক
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
إنَّ عَلِيّاً وَلِيُّكُمْ بَعْدِي.
নিশ্চয় আলী আমার পরে তোমাদের অভিভাবক।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১২/৩২৯৬৩, আল ফেরদৌস ৫:২৯২/৮৫২৮)
১০. বিচারের সিংহাসনে
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أَقْضَي اُمَّتِي عَليُّ.
আলী আমার উম্মতের মাঝে সর্বাপেক্ষা বিচক্ষণ বিচারক
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৬৭, মানাকিবে খারেযমী ৩০, যাখায়িরুল উকবা ৮৩)
১১. উম্মতের জন্য হুজ্জাত বা দলিল
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أَنَا وَ عَلِيٌّ حُجَّةٌ عَلَي أُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
কেয়ামতের দিন আমি এবং আলী আমার অনুসারীদের জন্য হুজ্জাত (দলিল) এবং পথপ্রদর্শনকারী।
(তারীখে বাগদাদ ২:৮৮)
১২. মহানবী (সাঃ)-এর একই বংশধারা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أَنَا وَ عَلِيٌّ مِنْ شَجَرَةٍ وَاحِدَةٍ، وَ النَّاسُ مِنْ أشْجَارٍ شَتَّي.
আমি আর আলী একই বৃক্ষ থেকে, আর অন্যেরা (মানুষ) বিভিন্ন বৃক্ষ থেকে।
(আল মানাকিব – ইবনে মাগাযেলী :৪০০/৫৩, কানযুল উম্মাল ১১:৬০৮/ ৩২৯৪৩, আল ফেরদৌস ১: ৪৪/১০৯, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১০০)
১৩. উম্মতের হেদায়াতকারী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أنَا الْمُنْذِرُ وَ عَلِيٌّ الْهَادِي، بِكَ يَا عَلِيُّ يَهْتَدِي الْمُهْتَدُونَ.
আমি হলাম সাবধানকারী। আর হে আলী! তোমার মাধ্যমে পথ অন্বেষণকারীরা পথ খুঁজে পাবে।
(তাফসীরে তাবারী ১৩:৭২, ইমাম আলী (আঃ) (অনুবাদ)- ইবনে আসাকির ২:৪১৭/৯২৩)
১৪. জাতির পথ-প্রদর্শক
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইমাম আলীকে বলেনঃ
أنْتَ تُبَيِّنُ لِأُمَّتِي مَا اخْتَلَفُوا فِيهِ بَعْدِي.
আমার পরে আমার উম্মত যে বিষয়ে মতবিরোধ করবে তুমি তার সমাধান দান করবে।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২২, কানযুল উম্মাল ১১:৬১৫/৩২৯৮৩, আল ফেরদৌস ৫:৩৩২/৮৩৪৯, হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৪)
১৫. মহানবী (সাঃ)-এর থেকে
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أنْتَ مِنِّي وَ أَنَا مِنْكَ.
তুমি আমা থেকে আর আমি তোমা থেকে।
(সহীহ বুখারী ৪:২২, ৫:৮৭, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৫/৩৭১৬, মাসাবিহুস সুন্নাহ ৪:১৭২/৪৭৬৫ ও ১৮৬/১০৪৮, তারীখে বাগদাদ ৪:১৪০)
১৬. মুমিনদের কর্তৃত্বের অধিকারী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইমাম আলীকে বলেনঃ
أنْتَ وَلِيُّ كُلِّ مُؤمِنٍ وَ مُؤمِنَةٍ بَعْدِي.
আমার পরে তুমি প্রত্যেক মুমিন নর ও নারীর ওপর কর্তৃত্বের অধিকারী।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩৪, আল মুজামুল কাবীর-তাবারানী ১২:৭৮/১২৫৯৩)
১৭. আদর্শের পথে শহীদ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইমাম আলীকে বলেনঃ
أنْتَ تَعِيْشُ عَلَي مِلَّتِي، وَ تُقْتَلُ عَلَي سُنَّتِي.
তুমি আমার পন্থায় জীবন যাপন করবে, আর আমার আদর্শের পথেই শাহাদাত বরণ করবে।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৭/৩২৯৯৭, আল মুস্তাদরাক-হাকেম :৩/১৪২)
১৮. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর প্রাণ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
إِنَّ عَلِيّاً مِنِّي، وَ أََنَا مِنْهُ، وَ هُوَ وَلِيُّ كُلِّ مُؤمِنٍ بَعْدِي.
নিশ্চয় আলী আমা থেকে আর আমি আলী থেকে। আর সে আমার পরে সকল মুমিনের নেতা।
(খাসায়েসে নেসায়ী :২৩, মুসনাদে আহমাদ ৪:৪৩৮, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী
১৮: ১২৮/২৬৫, হিল্লীয়াতুল আউলিয়া ৬:২৯৬)
১৯. মহানবী (সাঃ)-এর হারুন
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইমাম আলী (আঃ) কে বলেনঃ
أنْتَ مِنِّي بِمَنْزِلَةِ هَارُونَ مِنْ مُوسَي إِلَّا أَنَّهُ لَا نَبِيَّ بَعْدي.
আমার নিকট তুমি মুসার কাছে হারুনের ন্যায়। শুধু আমার পরে কোনো নবী নেই।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৪১/৩৭৩০, মাসাবিহুস্ সুন্নাহ ৪:১৭০/৪৭৬২, সহীহ মুসলিম ৪:৪৪/৩০)
২০. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাথে
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أَبْشِرْ يَا عَلِيُّ، حَيَاتُكَ مَعِي وَ مَوتُك مَعِي.
হে আলী! সুসংবাদ তোমার ওপর। তোমার জীবন আমার সাথে আর তোমার মরণও আমার সাথে।
(ইমাম আলী (আঃ)-ইবনে আসাকির ২:৪৩৫, ৯৪৭, মাজমাউয যাওয়াযেদ ৯:১১২, কানযুল উম্মাল ১৩: ১৪৪/৩৬৪৫৩)
২১. সর্বপ্রথম নামাযী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أََوَّلُ مَنْ صَلَّي مَعِي عَلِيٌّ.
সর্বপ্রথম আমার সাথে যে নামায পড়েছে সে হলো আলী।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৬/৩২৯৯২, আল ফেরদৌস ১:২৭/৩৯)
২২. শ্রেষ্ঠতম পুরুষ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
خَيْرُ رِجَالِكُمْ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ.
আলী ইবনে আবি তালিব তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম পুরুষ।
(তারীখে বাগদাদ ৪:৩৯২, মুন্তাখাবু কানযুল উম্মাল ৫:৯৩)
২৩. উম্মতের পিতা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
حَقُّ عَلِيٍّ عَلَي الْمُسْلِمِينَ حَقُّ الوَالِدِ عَلَي الْوَلَدِ.
মুসলমানদের ওপর আলীর অধিকার, সন্তানের ওপর পিতার অধিকারের ন্যায়।
(আর রিয়াদুন্ নাদরাহ ৩:১৩০, ইমাম আলী – ইবনে আসাকির ২:২৭২/৭৯৮-৭৯৯)
২৪. ইবাদতের সারসত্য
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
ذِكْرُ عَلِيٍّ عِبَادَةٌ.
আলীকে স্মরণ করা ইবাদততুল্য।
(কানযুল উম্মাল ১১, ৬০১/৩২৮৯৪, আল ফেরদৌস ২:২৪৪/৩১৫১, ওসীলাতুল মুতাআবেবদীন খ: ৫ আল কাসাম ২:১৬৮)
২৫. মজলিসের সৌন্দর্য
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
زَيِّنُوا مَجَالِسَكُمْ بِذِكْرِ عَلِيٍّ.
তোমাদের মজলিসগুলোকে আলীর নাম উচ্চারণের মাধ্যমে সৌন্দর্যমন্ডিত করো।
(আল মানাকিব – ইবনুল মাগাযেলী : ২১১/২৫৫)
২৬. সর্বদা সত্যের সাথে
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
رَحِمَ اللهُ عَلِيّاً ، اَللَّهُمَّ أَدِرِ الْحَقَّ مَعَهُ حَيْثُ دَارَ.
আল্লাহ আলীর ওপর রহমত বর্ষণ করুন! হে আল্লাহ! আলী যেখানেই আছে সত্যকে তার সাথে ঘোরাও।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৪, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৩/৩৭১৪, ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির, ৩:১৫১/১১৬৯-১১৭০)
২৭. রাসূলুললাহ (সাঃ)-এর গোপন রহস্যের আধার
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
صَاحِبُ سِرِّي عَلِيُّ ابْنُ أَبِي طَالِبٍ.
আলী আমার গোপন রহস্যকথার একমাত্র আধার
(আল ফেরদৌস ২:৪০৩/৩৭৯৩, আল ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির ২:৩১১/৮২২)
২৮. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর জ্ঞানের ভান্ডার
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ خَازِنُ عِلْمِي.
আলী আমার জ্ঞানের ভান্ডার।
(শারহে নাহজুল বালাগা – ইবনে আবিল হাদীদ ৯:১৬৫)
২৯. সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ خَيْرُ الْبَرِيَّةِ.
আলী সৃষ্টিকুলের সেরা।
(আল ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির ২:৪৪৩/৯৫৯, মানাকিবে খারেযমী : ৬২)
৩০. মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ خَيْرُ الْبَشَرِ، مَنْ أَبَي فَقَدْ كَفَرَ.
আলী সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ, যে তা মানবে না সে নিঃসন্দেহে কাফের।
(সিয়ারু আ’লামুন নুবালা ৮:২৫০, ইমাম আলী (আঃ)-ইবনে আসাকির ২:৪৪৪/৯৬২-৯৬৬, তারীখে বাগদাদ ৭:৪২১)
৩১. জ্ঞানের আধার
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ عَيْبَةُ عِلْمِي.
আলী আমার জ্ঞানের আধার।
(আল জামেউস্ সাগীর ২:১৭৭, শারহে নাহজুল বালাগা – ইবনে আবিল হাদীদ ৯:১৬৫)
৩২. সর্বদা কুরআনের সাথে
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مَعَ الْقُرْآنِ وَ الْقُرْآنُ مَعَ عَلِيٍّ.
আলী কুরআনের সাথে আর কুরআন আলীর সাথে।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৪, কানযুল উম্মাল ১১:৬০৩/৩২৯১২)
৩৩. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকটে
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مِنِّي بِمَنْزِلَةِ رَأسِي مِنْ بَدَني.
আমার নিকটে আলী আমার শরীরে যুক্ত আমার মাথার ন্যায়।
(তারীখে বাগদাদ ৭:১২, কানযুল উম্মাল ১১:৬০৩/৩২৯১৪)
৩৪. আল্লাহর নিকটে
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مِنِّيكَمَنْزِلَتِي مِنْ رَبِّي.
আমার নিকটে আলীর মর্যাদা হলো যেমন আমার প্রতিপালকের নিকটে আমার মর্যাদা।
(আস সাওয়ায়িকুল মুহরিকা :১৭৭, যাখায়িরুল উক্বা : ৬৪)
৩৫. কেয়ামতের দিন বিজয়ী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ وَ شِيعَتُهُ هُمُ الْفَائِزُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
আলী এবং তাঁর অনুসারীরা নিঃসন্দেহে কেয়ামতের দিন বিজয়ী।
(আল ফেরদৌস ৩:৬১/৪১৭২, ওয়াসীলাতুল মুতাআবেবদীন খ:৫, আল কিস্ম ২:১৭০)
৩৬. বেহেশতের তারকা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ يَزْهَرُ فِي الْجَنَّةِ كَكَوْكَبِ الصُّبْحِ لِأَهْلِ الدُّنْيَا.
আলী বেহেশতের মধ্যে দুনিয়াবাসীর জন্য ভোরের তারকার ন্যায় উজ্জ্বল।
(আল ফেরদৌস ৩:৬৩/৪১৭৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬০৪/৩২৯১৭)
৩৭. তাকে কষ্ট দিও না
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
مَنْ آذَي عَلِيّاً فَقَدْ آذَانِي.
যে ব্যক্তি আলীকে কষ্ট দেয় সে আমাকে কষ্ট দেয়।
(মুসনাদে আহমাদ ৩:৪৮৩, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২২, দালায়িলুন নব্যুওয়াত ৫:৩৯৫, আল ইহ্সান- ইবনে হাববান ৯:৩৯/৬৮৮৪)
৩৮. আল্লাহর অস্তিত্বে মিশে আছে
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
لَاتَسُبُّوا عَلِيّاً، فَإِنَّهُ مَمْسُوسٌ فِي ذَاتِ اللهِ.
তোমরা আলীকে গালমন্দ করো না। সে আল্লাহর সত্তায় মিশে গেছে্
(আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ১৯:১৪৮/৩২৪, হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬২১/৩৩০১৭)
৩৯. মুনাফিকরা তাঁকে ভালোবাসে না
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
لَا يُحِبُّ عَلِيّاً مُنَافِقٌ، وَ لاَ يُبْغِضُهُ مُؤمِنٌ.
মুনাফিকরা আলীকে ভালোবাসে না, আর মুমিন তাঁকে ঘৃণা করে না।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৫/৩৭১৭, আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১৮৯)
৪০. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর হক (অধিকার) পূরণকারী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مِنِّي وَ أَنَامِنْ عَلِيٍّ، وَلَا يُؤَدِّي عَنِّي إِلَّا أَنَا أَوْ عَلِيٌّ.
আলী আমা থেকে আর আমি আলী থেকে, আমি আর আলী ব্যতীত কেউই আমার (রেসালাতের) অধিকার পূরণ করেনি।
(মাসাবিহুস সুন্নাহ ৪:১৭২/৪৭৬৮, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭১৯, মুসনাদে আহমাদ ৪:১৬৪)
৪১. মুসলমানদের সরদার
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ سَيِّدُ الْمُسْلِمِينَ، وَ إِمَامُ الْمُتَّقِينَ، وَ قَائِدُ الْغُرِّ الْمُحَجَّلِينَ.
আলী মুসলমানদের সরদার, পরহেযগারদের নেতা এবং সফলকামদের পথ প্রদর্শক।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩৮, আল মানাকিব-ইবনুল মাগাযেলী ১০৪/১৪৬)
৪২. নাজাত দানকারী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
حُبُّ عَلِيٍّ بَرَاءَةٌ مِنَ النَّارِ.
আলীর প্রতি ভালোবাসা আগুন থেকে মুক্তির কারণ।
(আল ফেরদৌস ২:১৪২/২৭২৩)
৪৩. ঈমানে সর্বাপেক্ষা অবিচল
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ الصِّدِّيقُ الْاَكْبَرُ، وَ فَارُوقُ هَذِهِ الْاُمَّةِ، وَ يَعْسُوبُ الْمُؤْمِنِينَ.
আলী ঈমানে সর্বাপেক্ষা দৃঢ়পদ, উম্মতের মধ্যে হক ও বাতিলে পার্থক্যকারী আর মুমিনদের কর্তা।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৬/৩২৯৯০, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ৬:২৬৯/৬১৮৪)
৪৪. তাঁকে অভিসম্পাত করো না
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
مَنْ سَبَّ عَلِيّاً فَقَدْ سَبَّنِي.
যে ব্যক্তি আলীকে গালমন্দ করে সে যেন আমাকেই গালি দিল।
(মুখতাসারু তারীখে দামেস্ক – ইবনে মাঞ্জুর ১৭:৩৬৬, ফাযায়েলুস সাহাবা ২:৫৯৪/১০১১, খাসায়েসে নাসায়ী :২৪, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২১, মানাকিবে খারেযমী : ৮২)
৪৫. আল্লাহর রাস্তায় কঠোরতা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أَيُّهَا النَّاسُ، لَا تَشْكُوا عَلِيّاً، فَو اللهِ إِنَّهُ لَأَخْشَنُ فِيذَاتِاللهِ، أَوْ فِي سَبِيلِ اللهِ.
হে লোকসকল! আলীর বিরুদ্ধে নালিশ করতে যেও না। সে আল্লাহর কারণে অথবা তাঁর সন্তুষ্টির জন্যেই কঠোর হয়।
(মুসনাদে আহমাদ ৩:৮৬, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩৪)
৪৬. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নজির
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
مَا مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا وَ لَهُ نَظِيرٌ فِي اُمَّتِهِ وَ عَلِيٌّ نَظِيرِي.
এমন কোনো নবী নেই যার উম্মতের মধ্যে তাঁর দৃষ্টান্ত কেউ ছিল না। আর আমার দৃষ্টান্ত হলো আলী ইবনে আবি তালিব।
(আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১২০, যাখায়েরুল উকবা: ৬৪)
৪৭. পাপ ধ্বংসকারী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
حُبُّ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ يَأْكُلُ الذُّنُوبَ كَمَا تَأْكُلُ النَّارُ الْحَطَبَ.
আলী ইবনে আবি তালিবের ভালোবাসা পাপসমূহকে খেয়ে ফেলে যেভাবে আগুন কাঠকে খেয়ে ফেলে।
(আর রিয়াদুন্ নাদরাহ ৩: ১৯০, কানযুল উম্মাল ১১:৬২১/৩৩০২১, আল ফেরদৌস ২:১৪২/২৭২৩)
৪৮. অন্তরসমূহের কা’বাস্বরূপ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইমাম আলী (আঃ) কে বলেনঃ
أَنْتَ بِمَنْزِلَةِ الْكَعْبَةِ تُؤْتَي وَ لَاتَأتِي.
তুমি কা’বার ন্যায়। সবাই তোমার কাছে আসে কিন্তু তুমি কারো কাছে যাও না।
(উসুদুল গবাহ ৩১৪৬)
৪৯. তার দিকে তাকাও…
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
َالنَّظَرُ إِلَي وَجْهِ عَلِيٍّ عِبَادَةٌ.
আলীর মুখের দিকে তাকানো ইবাদত।
(আল মানাকিব- ইবনে মাগাযেলী ২০৬/২৪৪-২৪৬ ও ২০৯/২৪৮-২৪৯ ও ২১০/২৫২-২৫৩, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৪২, আর রিয়াদুন্ নাদ্রাহ ৩:১৯৭)
৫০. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর ওয়াসী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত আলীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেনঃ
هَذَا أَخِي وَ وَصِيِّي وَ خَلِيفَتِي مِنْ بَعْدِي، فَاسْمَعُوا لَهُ وَ أَطِيعُوه.
এ হলো আমার ভাই, আর আমার পরে আমার ওয়াসী এবং খলীফা। তার নির্দেশের প্রতি কর্ণপাত করো এবং তার আনুগত্য করো।
(তারীখে তাবারী ২:৩৩১, মাআলিমুত তানযীল ৪:২৭৯, আল কামিল ফিত তারীখ ২:৬৩, শারহে নাহজুল বালাগা – ইবনে আবিল হাদীদ ১৩:২১১, কানযুল উম্মাল ১৩:১৩১)
৫১. ফেরেশতাকুলের দরূদ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
إنَّ الْمَلَائِِكَةَ صَلَّتْ عَلَيَّ و عَلَي عَلِيٍّ سَبعَ سِنِيْنَ قَبْلَ أَنْ يُسْلِمَ بَشَرٌ.
কোনো মানুষ মুসলমান হওয়ার সাত বছর পূর্ব থেকেই ফেরেশতারা আমার এবং আলীর ওপর দরূদ পাঠাতো।
(কানযুল উম্মাল ১১: ৬১৬/৩২৯৮৯, মুখতাসারু তারীখে দামেস্ক -ইবনে মাঞ্জুর ১৭:৩০৫)
৫২. ঈমানের মানদন্ড
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আলী (আঃ) কে বলেনঃ
لَوْلَاكَ مَا عُرِفَ الْمُؤمِنُونَ مِنْ بَعْدِي.
যদি তুমি না থাকতে তাহলে আমার পরে মুমিনদের শনাক্ত করা যেত না।
(আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১৭৩, আল মানাকিব- ইবনুল মাগাযেলী :৭০/১০১, কানযুল উম্মাল ১৩ :১৫২/৩৬৪৭৭)
৫৩. সর্বদা সত্যের সাথে
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مَعَ الْحَقِّ وَ الْحَقُّ مَعَ عَلِيٍّ، لَنْ يَفْتَرِقَا حَتَّي يَرِدَا عَلَيَّ الْحَوضِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
আলী সত্যের সাথে আর সত্য আলীর সাথে, এই দুটো কখনো একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না যতক্ষণ না কেয়ামতের দিন হাউজে কাওসারে আমার সাথে মিলিত হবে।
(তারীখে বাগদাদ ১৪:৩২১, ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির ৩:১৫৩/১১৭২)
৫৪. তাঁর থেকে পৃথক হয়ো না!
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
مَنْ فَارَقَ عَلِيّاً فَقَدْ فَارَقَنِي وَ مَنْ فَارَقَنِي فَقَدْ فَارَقَ اللهَ عَزَّوَجَلَّ.
যে ব্যক্তি আলী থেকে পৃথক হয় সে আমা থেকে পৃথক হলো আর যে আমা থেকে পৃথক হলো সে মহান আল্লাহ থেকে পৃথক হয়ে গেল।
(আল মানাকিব- ইবনে মাগাযেলী ২৪০/২৮৭, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৪, আল মু’জামুল কাবীর- তাবারানী ১২:৩২৩/১৩৫৫৯)
৫৫. মহানবী (সাঃ)-এর জ্ঞানের দরওয়াযা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ بَابُ عِلْمِي، وَ مُبَيِّنُ لِاُمَّتِي مَا اُرْسِلْتُ بِهِ مِنْ بَعْديِ، حُبُّهُ اِيمَانٌ، و بُغْضُُهُ نِفَاقٌ وَ النَّظَرُ اِلَيْهِ رَأْفَةٌ.
আলী আমার জ্ঞানের দরওয়াযা। সে আমার পরে আমার রেসালাতকে আমার উম্মতের জন্যে ব্যাখ্যা করবে। তাকে ভালোবাসা ঈমানের পরিচায়ক, তাকে ঘৃণা করা মুনাফিকের পরিচায়ক এবং তার দিকে তাকানো প্রশান্তির কারণ।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৪/৩২৯৮১, আল ফেরদৌস ৩:৬৫/৪১৮১)
৫৬. আল্লাহর গোপন রহস্য ব্যক্তকারী
জাবের বলেনঃ তায়েফের দিন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত আলীকে কাছে ডাকলেন। তাঁকে একপাশে নিয়ে কানে কানে যুক্তি করলেন। লোকজন বললো, ‘‘তাঁর চাচাতো ভাইয়ের সাথে যুক্তি করা কতো দীর্ঘায়িত হলো!’’ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন :
مَا اَنْتَجَيْتُهُ ، وَلَكِنْ اللهَ انْتَجَاهُ.
আমি তাঁর সাথে যুক্তি করিনি, বরং আল্লাহ তাঁর সাথে যুক্তি করেছেন।
(আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১৭০, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৯/৩৭২৬, খাসায়েসে নাসায়ী :৫, ফাযায়েলূস সাহাবা ২:৫৬০/৯৪৫, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩০-১৩২)
৫৭. মুমিনদের মাওলা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
مَنْ كُنْتُ مَوْلَاهُ فَعَلِيٌّ مَوْلَاهُ، اَللَّهُمَّ وَالِ مَنْ وَالَاهُ وَعَاِد مَنْ عَادَاهُ.
আমি যার মাওলা আলীও তার মাওলা। হে আল্লাহ! যে আলীকে ভালোবাসে তুমি তাকে ভালোবাস আর যে আলীর সাথে শত্রুতা করে তুমি তার সাথে শত্রুতা করো।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬০৯/৩২৯৫০, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১০৯, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১০৪, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ৪:১৭৩/৪০৫৩, তিরমিযী ৫:৬৩৩/৩৭১৩, মুসনাদে আহমাদ ১:৮৪, ৮৮, ১১৯, ১৫২, ৩৩১ ও ৪:২৮১, ৩৬৮, ৩৭০, ৩৭২ ও ৫:৩৪৭, ৩৫৮, ৩৬১, ৩৬৬, ৪১৯)
৫৮. তোমার জন্য সেটাই চাই!
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ! إِنِّي اُحِبُّ لَكَ مَا اُحِبُّ لِنَفْسِي، وَ أَكْرَهُ لَكَ مَا أَكْرَهُ لِنَفْسِي.
হে আলী! আমি নিজের জন্যে যা পছন্দ করি তোমার জন্য সেটাই পছন্দ করি। আর আমার চোখে যা অপছন্দনীয় তোমার জন্যও সেটা অপছন্দ করি।
(মুসনাদে আহমাদ ১:১৪৬, সুনানে তিরমিযী ২:৭২/২৮২, আল মুনাতাখাবু মিন মুসনাদে আব্দু ইবনে হামীদ :৫২/৬৭)
৫৯. বেহেশত-দোযখের বণ্টনকারী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ، إِنَّكَ قَسِيمُ الْجَنَّةِ وَ النَّارِ وَ إِنَّكَ تَقْرَعُ بَابَ الْجَنَّةِ، فَتَدْخُلَهَا بِلَا حِسَابٍ.
হে আলী! তুমি (মানুষকে) বেহেশত ও দোযখের (মধ্যে) বণ্টনকারী। অতঃপর তুমি নিজে বেহেশতের দরওয়াযায় টোকা দিবে এবং হিসাব ছাড়াই প্রবেশ করবে।
(আল মানাকিব- ইবনুল মাগাযেলী ৬৭/৯৭, আল মানাকিব-খারেযমী : ২০৯, ফারায়িদুস সামতাঈন ১:৩২৫/২৫৩)
৬০. তোমাকে যারা ভালোবাসে তাদের প্রতি সুসংবাদ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
يا عَلِيّ، طُوبَي لِمَنْ أَحَبَّكَ وَ صَدَّقَ فِيكَ وَ وَيْلٌ لِمَنْ أَبْغَضَكَ وَ كَذَّبَ فِيكَ.
হে আলী! সুসংবাদ তার প্রতি যে তোমাকে ভালোবাসে এবং তোমাকে সত্য বলে জানে। আর দুর্ভাগ্য তাদের প্রতি যারা তোমার সাথে শত্রুতা করে এবং তোমার ব্যাপারে মিথ্যা আরোপ করে।
(তারীখে বাগদাদ ৯:৭২, ওয়াসীলাতুল মুতাআবেবদীন খ:৫, আল কিস্ম ২:১৬১, উসুদুল গবাহ ৪:২৩)
৬১. ওয়াসিগণের মধ্যে সর্বোত্তম
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত ফাতিমাকে বলেনঃ
وَصِيِّي خَيْرُ الْأَوْصِيَاءِ، وَ أَحَبُّهُمْ إِلَي اللهِ عَزَّ وَجَلَّ وَ هُوَ بَعْلُكَ.
ওয়াসিগণের মধ্যে আমার ওয়াসীই সর্বোত্তম এবং আল্লাহর নিকটে তাদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয়তম। আর সে হলো তোমার স্বামী।
(মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১৬৫, যাখায়িরুল উকবা :১৩৬)
৬২. মহানবী (সাঃ)-এর ভাই ও সহযোগী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
اَللَّهُمَّ إنِّيأَقُولُكَمَاقَالَأَخِيمُوسَي: اَللَّهُمَّ اجْعَلْ لِيوَزِيراً مِنْ أَهْلِيأَخِيعَلِيّاً اُشْدُدْ بِهِ أزْرِي وَ أَشْرِكْهُ فِيأَمْرِي كَيْ نُسَبِّحَكَ كَثِيراً وَ نَذْكُرَكَ كَثيراً، إِنَّكَ كُنْتَ بِنَا بَصِيراً.
হে আল্লাহ! আমিও আমার ভাই মুসার মতো বলছি, ‘‘হে খোদা! আমার জন্য আমার পরিবারের মধ্যে থেকে কাউকে সাহায্যকারী হিসেবে নিয়োগ করো। আমার ভাই আলীকে যার দ্বারা আমার শক্তি মজবুত হয়
এবং আমাকে সাহায্য করে। যাতে তোমার মহিমা বর্ণনা করতে সক্ষম
হই এবং তোমার অধিক ইবাদতে নিমগ্ন হতে পারি । অবশ্য তুমি আমাদের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধকারী।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১১৮, ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৬৭৮/১১৫)
৬৩. নিরাপত্তা এবং ঈমান
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত আলী (আঃ) কে বলেনঃ
مَنْ أَحَبَّكَ حُفَّ بِالاَمْنِ وَ الْإِيمَانِ، وَ مَنْ أَبْغَضَكَ أَمَاتَهُ اللهُ مِيْتَةَ الْجَاهِلِيَّةِ.
যে ব্যক্তি তোমাকে ভালোবাসবে, নিরাপত্তা ও ঈমান তাকে আবিষ্ট করবে। আর যে তোমার প্রতি শত্রুতা করবে আল্লাহ তাকে জাহেলিয়াতের মৃত্যু দান করবেন।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬০৭/৩২৯৩৫, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ১১:৬৩/১১০৯২)
৬৪. সীরাতুল মুস্তাকীম পার হওয়ার অনুমতি
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ وَ نُصِبَ الصِّرَاطُ عَلَي شَفِيرِ جَهَنَّم لَمْ يَجُزْ إلاَّ مَنْ مَعَهُ كِتَابُ عَلِيّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ.
যখন কেয়ামত উপস্থিত হবে এবং জাহান্নামের অগ্নিপার্শ্বে পুলসিরাত টাঙ্গানো হবে তখন শুধু কেবল যার সঙ্গে আলী (আঃ)-এর পত্র থাকবে সে ছাড়া কারো তা পার হবার অনুমতি থাকবে না।
(আল মানাকিব-ইবনুল মাগাযেলী ২৪২, ২৮৯, ফারায়িদুস সামতাইন ১:২২৮, ২৮৯)
৬৫. আলী (আঃ)-এর সহচরদের জন্য দোয়া
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
اَللّهُمَّ انْصُرْ مَنْ نَصَرَ عَلِيّاً، اَللَّهُمَّ أَكْرِمْ مَنْ أَكْرَمَ عَلِيّاً ، اَللَّهُمَّ أخْذُلْ مَنْ خَذَلَ عَلِيّاً.
হে আল্লাহ! যে ব্যক্তি আলীকে সাহায্য করে তুমি তাকে সাহায্য করো, যে ব্যক্তি তাকে সম্মান করে তুমি তাকে সম্মান করো আর যে তাকে লাঞ্ছিত করে তুমি তাকে লাঞ্ছিত করো।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬২৩/৩৩০৩৩, আল মু’জামুল কাবীর – তাবারানী ১৭:৩৯,৮২)
৬৬. আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বান্দা
আনাস ইবনে মালেক বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর জন্য মুরগীর গোশত দ্বারা খাবার প্রস্ত্তত করা হয়েছিল। হুজুর (সাঃ) বললেনঃ
اَللَّهُمَّ ائْتِنِي بِاَحَبِّ خَلْقِكَ إِلَيْكَ يَأْكُلُ مَعِي هَذَا الطَّيْرَ، فَجَاءَ عَلِيٌّ فَأَكَلَ مَعَهُ.
হে আল্লাহ! তোমার সবচেয়ে প্রিয় বান্দাকে পৌঁছে দাও যে আমার সাথে এই মুরগীর গোশত ভক্ষণে অংশ নেবে। এমন সময় আলী এসে পৌঁছলেন এবং হুজুরের দস্তরখানায় বসে পড়লেন।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭২১, ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৫৬০/৯৪৫, খাসায়েসে নাসায়ী : ৫, আল মুস্তাদরাক – হাকেম ৩:১৩০-১৩২)
৬৭. হেদায়াতের পতাকা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
إِنَّ رَبَّ الْعَالَمِيْنَ عَهِدَ إِلَيَّ عَهْداً فِي عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ ، فَقَالَ: إنَّهُ رَايَةُ الْهُدَي، وَ مَنارُ الْاِيْمَانِ، وَ اِمَامُ أَوْلِيَائِي، وَ نُورُ جَمِيعِ مَنْ أَطَاعَنِي.
বিশ্ব প্রতিপালক আলীর ব্যাপারে আমার সাথে কঠিনভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছেন। অতঃপর আমাকে বলেছেন: নিশ্চয় আলী হলো হেদায়েতের পতাকা, ঈমানের শীর্ষচূড়া, আমার বন্ধুগণের নেতা আর আমার আনুগত্যকারী সকলের জ্যোতিস্বরূপ।
(হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৬, শারহে নাহজুল বালাগা – ইবনে আবীল হাদীদ ৯:১৬৮)
৬৮. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর উত্তরসূরি
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
لِكُلِّ نَبِيٍّ وَصِيٌّ وَ وَارِثٌ، وَ إَِنَّ عَلِيّاً وَصِيِّي وَ وَارِثِي.
প্রত্যেক নবীর ওয়াসী এবং উত্তরসূরি থাকে। আর আমার ওয়াসী এবং উত্তরসূরি হলো আলী।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৩৮, আল ফেরদৌস ৩:৩৩৬/৫০০৯, ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির ৩: ৫/১০৩০-১০৩১)
৬৯. সত্যিকারের সৌভাগ্য
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
إنَّ السَّعِيدَ كُلَّ السَّعِيدِ، حَقَّ السَّعِيدِ، مَنْ أحَبَّ عَلِيّاً فِي حَيَاتِهِ وَ بَعْدَ مَوتِهِ.
নিশ্চয় সবচেয়ে সৌভাগ্যবান এবং সত্যিকারের সৌভাগ্যবান সেই ব্যক্তি যে আলীকে তার জীবদ্দশায় এবং তার মৃত্যুর পরে ভালোবাসে।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৯১, ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৬৫৮/১১২১, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ২২: ৪১৫/১০২৬, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১৩২)
৭০. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাহায্যকারী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
لَمَّا عُرِجَ بِي رَأَيْتُ عَلَي سَاقِ الْعَرْشِ مَكْتُوباً: لَا إِِلَهَ إِِلَّا اللهُ، مُحَمَّدٌرَسُولُ اللهِ، أَيَّدْتُهُ بِعَلِيٍّ، نَصَرْتُهُ بِعَلِيٍّّ.
যখন আমাকে মি’রাজে নিয়ে যাওয়া হয় তখন আরশের পায়ায় দেখলাম লেখা রয়েছে ‘‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, মুহাম্মদ আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ। আমি তাকে আলীকে দ্বারা শক্তিশালী করেছি এবং আলীকে তার সাহায্যকারী করে দিয়েছি।
(তারীখে বাগদাদ ১১:১৭৩, ওয়াসীলাতুল মুতাআবেবদীন খ:৫ আল কিস্ম ২:১৬৩, আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১৩১, যাখায়েরুল উকবা : ৬৯)
৭১. শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
لَمُبارِزَةُ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ لِعَمْرِو بْنِ عَبدوُدٍّ يَوْمَ الْخَنْدَقِ، أَفْضَلُ مِنْ عَمَلِ اُمَّتِي إِلَي يَوْمِ الْقِيَامَةِ.
খন্দকের যুদ্ধে আমর ইবনে আবদুউদ্দের বিরুদ্ধে আলী ইবনে আবি তালিবের যুদ্ধ নিঃসন্দেহে কেয়ামত পর্যন্ত আমার উম্মতের সমুদয় কর্মের চাইতে অধিক মূল্যবান।
(তারীখে বাগদাদ ১৩:১৯, আল মানাকিব-খারেযমী ১০৭/১১২)
৭২. জাহান্নাম সৃষ্টি হতো না যদি….
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
لَوِ اجْتَمَعَ النَّاسُ عَلي حُبِّ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، لَمَا خَلَقَ اللهُ تَعَالَي النَّارَ.
যদি মানুষ আলী ইবনে আবি তালিবের ভালোবাসায় একমত হতো তাহলে মহান আল্লাহ কখনো জাহান্নামকে সৃষ্টি করতেন না।
(আল ফেরদৌস ৩:৩৭৩/১৩৫, আল মানাকিব-খারেযমী ৬৭/৩৯, মাকতালুল হুসাইন (আঃ)-খারেযমী ১:৩৮)
৭৩. সর্বোত্তম মুমিন
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
لَوْ أَََنَّ السَّمَاوَاتِ وَ الاَرْضَ وُضِعَتَا فِي كَفَّةٍ وَ إِيماَنُ عَلِيٍّ فِي كَفَّةٍ، لَرَجَحَ إيمَانُ عَلِیٍّ.
যদি আসমানসমূহ এবং জমিনকে দাঁড়িপাল্লার একপাশে আর আলীর ঈমানকে আরেক পাশে রাখা হয় তাহলে আলীর ঈমানের পাল্লা ভারী হবে।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:২০৬, আল ফেরদৌস ৩:৩৬৩/৫১০০, ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির ২: ৩৬৪/৮৭১ ও ৩৬৫/৮৭২, আল মানাকিব-খারেযমী : ৭৭-৭৮)
৭৪. তার গুণাবলীর উপকারিতা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
مَا اكْتَسَبَ مُكْتَسَبٌ مِثْلَ فَضْلِ عَلِيٍّ، يَهْدِي صَاحِبَهُ إِلَي الْهُدَي، وَ يَرُدُّ عَنِ الرَّدَي.
আলীর ন্যায় গুণাবলী অর্জনের মতো আর কোনো অর্জন অধিক উপকারী নয়। কারণ, তার অধিকারীকে হেদায়েতের পথে পরিচালিত করে এবং নীচ ও হীনতা থেকে দূরে রাখে।
(আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১৮৯, যাখায়িরুল উকবা :৬১)
৭৫. প্রতিপালকের প্রিয়তম
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
إِنَّ اللهَ أَمَرَنِي بِحُبِّ أَرْبِعَةٍ، وَ أَخْبَرَنِي أَنَّهُ يُحِبُّهُمْ. قِيلَ، يَا رَسُولَ اللهِ، سَمِّهِمْ لَنَا. قَالَ: عَلِيٌّ مِنْهُمْ، يَقُولُ ذَلِكَ ثَلَاثاً.
এমন চার ব্যক্তি যারা আল্লাহর কাছে প্রিয় মহান আল্লাহ আমাকে সে চারজনকে ভালোবাসতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বলা হলো, হে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)! তাদের নামগুলো আমাদের জন্য বলুন। তিনি তিন বার বললেন, আলী তাদের মধ্যে।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭১৮, সুনানে ইবনে মাজাহ ১:৫৩/১৪৯, মুসনাদে আহমাদ ৫:৩৫১, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩০)
৭৬. সর্বপ্রথম মুসলমান
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أََوَّلُكُمْ وُرُوداً فِي الْحَوْضِ أََوَّلُكُمْ إِِسْلَاماً عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ.
তোমাদের মধ্যে সবার আগে হাউজে কাওসারে প্রবেশ করবে সেই ব্যক্তি যে সবার আগে ইসলাম গ্রহণ করেছে। আর সে হলো আলী ইবনে আবি তালিব।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩৬, আল ইস্তিয়াব ৩:২৭,২৮, উসুদুল গাবাহ ৪:১৮, তারীখে বাগদাদ ২:৮১)
৭৭. ফাতেমা (আঃ)-এর জন্য সর্বোত্তম স্বামী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত ফাতিমাকে বলেনঃ
زَوَّجْتُكِ خَيْرَ أَهْلِي، أَعْلَمَهُمْ عِلْماً، وَ أَفْضَلَهُمْ حِلْماً، و أوَّلَهُمْ سِلْماً.
তোমাকে আমার পরিবারের সবচেয়ে উত্তম ব্যক্তির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেছি। সে জ্ঞান-বিদ্যায়, ধৈর্য-সহিষ্ণুতায় ও ইসলাম গ্রহণে সবাইকে পিছে ফেলে এগিয়ে গেছে।
(মানাকিবে খারেযমী ৬৩: নাযমু দুরারিস সামতাঈন : ১২৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬০৫/৩২৯২৬)
৭৮. সত্যের অগ্রদূত
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
اَلسُّبْقُ ثَلَاثَةٌ: اَلسَّابِقُ إِلَي مُوْسَي يُوشَعُ بنُ نُون، وَ السَّابِقُ إِلَي عِيسَي صَاحِبُ يس، وَ السَّابِقُ إِلَي مُحَمَّدٍ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ.
সত্যের অগ্রদূত তিনজন : মুসাকে মেনে নেওয়ার বেলায় ইউশা’ ইবনে নুন, ঈসাকে মেনে নেওয়ার বেলায় ইয়া সীনের মালিক আর মুহাম্মদের সাথে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে আলী ইবনে আবি তালিব।
(আস সাওয়ায়িকুল মুহরিকা ১২৫, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯: ১০২, যাখায়িরুল উকবা :৫৮, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ১১:৭৭/১১১৫২)
৭৯. সর্বশ্রেষ্ঠ সত্যবাদী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
اَلصِّدِّيقُونَ ثَلَاثَةٌ: مُؤْمِنُ آلِ يس، وَ مُؤْمِنُ آلِ فِرْعَوْنَ، وَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ وَ هُوَ أَفْضَلُهُمْ.
প্রকৃত সত্যবাদী তিনজন : আলে ইয়াসীনের মুমিন, আলে ফেরআউনের মুমিন আর আলী ইবনে আবি তালিব, আর সে হলো তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।
(কানযুল উম্মাল ১;৬০১/৩২৮৯৮, ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৬২৮/১০৭২, আল ফেরদৌস ২:৪২১/৩৮৬৬)
[উল্লেখ্য, আলে ইয়াসীনের মুমিন হলো হাবীব নায্যার (ইয়াসীন : ২০), আর আলে ফেরআউনের মুমিন হলো হেযকিল (গাফির : ২৮)]
৮০. সতকর্মশীলদের নেতা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ أَمِيرُ الْبَرَرَةِ، وَ قَاتِلُ الْفَجَرةِ، مَنْصُورٌ مَنْ نَصَرَهُ، مَخْذُولٌ مَنْ خَذَلَهُ.
আলী সতকর্মশীলদের নেতা আর ব্যভিচারীদের হন্তা। যে কেউ তাকে সাহায্য করে সে সাহায্য প্রাপ্ত হয় আর যে ব্যক্তি তাকে ত্যাগ করে সে বিফল হয়।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৯, কানযুল উম্মাল ১১:৬০২/৩২৯০৯, আস-সাওয়ায়েকুল মুহরিকা :১২৫, আল ইমাম আলী (আঃ)-ইবনে আসাকির ২:৪৭৬/১০০৩ ও ৪৭৮/১০০৫)
৮১. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর জীবন ও মরণ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
مَنْ أَحَبَّأَنْ يَحْيَاحَيَاتِيوَيَمُوتَ مَوْتِيفَلْيَتَولَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ.
যে ব্যক্তি আমার মতো জীবন যাপন করতে এবং আমার মতো মৃত্যুবরণ করতে পছন্দ করে সে যেন আলী ইবনে আবি তালিবের বেলায়েতকে মেনে চলে।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬১১/৩২৯৫৯)
৮২. ঈসা (আঃ)-এর ন্যায়
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত আলীকে বলেনঃ
فِيكَ مَثَلٌ مِنْ عِيسَي(ع)، أَبْغَضَتْهُ الْيَهُودُ حَتَّي بَهَتُوا أُمَّهُ، وَ أََحَبَّتْهُ النَّصَارَي حَتَّي أَنْزَلُوهُ بِالْمَنْزِلَةِ الَّتِي لَيْسَ فِيهَا.
তুমি ঈসা (আঃ)-এর সমতুল্য। ইয়াহুদীরা প্রচন্ড শত্রুতার কারণে তাঁর মায়ের ওপর অপবাদ আরোপ করে। আর খ্রিস্টানরা অতিরঞ্জিত
ভালোবাসার কারণে তাঁকে এমন মর্যাদায় আসীন করলো যে মর্যাদা তাঁর ছিল না।
(আর রিয়াদুন নাদ্রাহ্ ৩:১৯৪, মুসনাদে আহমাদ ১:১৬০, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৩)
৮৩. বড় পুণ্য
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
حُبُّ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ حَسَنَةٌ لَايَضُرُّ مَعَهَا سَيِّئَةٌ، وَ بُغْضُهُ سَيِّئَةٌ لَا يَنْفَعُ مَعَهَا حَسَنَةٌ.
আলীর প্রতি ভালোবাসা বড় পুণ্যের কাজ যার কারণে কোনো মন্দই ক্ষতি করতে পারে না। আর তার সাথে শত্রুতা করা বড়ই নোংরা কাজ যার কারণে কোনো পুণ্যের কাজই ফলপ্রসূ হয় না।
(আল ফেরদৌস ২:১৪২/২৭২৫, আল মানাকিব-খারেযমী : ৩৫)
৮৪. হিকমতের অধিকারী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
قُسِّمَتِ الْحِكْمَةُ عَشَرَةَ أَجْزَاءٍ، فَأُعْطِيَ عَلِيٌّ تِسْعَةَ أَجْزَاءٍ، وَ النَّاسُ جُزْءاً وَاحِداً.
হিকমতকে দশ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। আলীকে তার থেকে নয় ভাগ প্রদান করা হয়েছে আর সমস্ত মানুষকে দেয়া হয়েছে বাকী এক ভাগ।
(হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৪, আল মানাকিব – ইবনে মাগাযেলী : ২৮৭/৩২৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬১৫/৩২৯৮২)
৮৫. একই নূর
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
كُنْتُ أَنَا وَ عَلِيٌّ نُوراً بَيْنَ يَدَيِ اللهِ تَعَالَي قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ آدَمَ بِأَرْبَعَةَ عَشَرَ أَلْفَ عَامٍ، فَلَمَّا خَلَقَ اللهُ آدَمَ قَسَّمَ ذَلِكَ النُّورَ جُزْأَيْنِ، فَجُزْءٌ أَنَا وَ جُزْءٌ عَلِيٌّ.
আদমের সৃষ্টির চার হাজার বছর আগে আল্লাহর সান্নিধ্যে আমি আর আলী একই নূর ছিলাম। তারপর যখন আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করলেন তখন সে নূরকে দুই টুকরো করলেন। তার এক টুকরো হলাম আমি আর অপর টুকরো হলো আলী।
(ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৬৬২/১১৩০, আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১২০)
৮৬. আলী (আঃ)-এর অনুরক্তরা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
مَا مَرَرْتُ بِسَمَاءٍ إِلَّا وَ أََهْلُهَا يَشْتَاقُونَ اِلَي عَلِيِّ بْنِ أََبِي طَالِبٍ، وَ مَا فِي الْجَنَّةِ نَبِيٌّ إِلَّا وَ هُوَ يَشْتَاقُ اِلَي عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ.
আসমানে আমি যেখানেই গেছি দেখেছি আলী ইবনে আবি তালিবের অনুরক্তরা তাকে সাক্ষাত করতে উদগ্রীব, আর বেহেশতে এমন কোনো নবী নেই যিনি তার সাথে সাক্ষাত করতে উদগ্রীব নন।
(আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১৯৮, যাখায়েরুল উকবা : ৯৫)
৮৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর ভাই
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
مَكْتُوبٌ عَلَي بَابِ الْجَنَّةِ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللهِ، عَلِيٌّ أَخُو النَّبِي، قَبْلَ أَنْ يُخْلَقَ الْخَلْقُ بِأَلْفَيْ سَنَة.
বেহেশতের দরওয়াযার ওপরে লেখা রয়েছে: আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল আর মানুষ সৃষ্টি হওয়ার দুই হাজার বছর আগে থেকে আলী নবীর ভাই।
(মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১১১, মুখতাসারু তারীখে দামেস্ক – ইবনে মাঞ্জুর ১৭:৩১৫, ফাযায়েলুস সাহাবা ২: ৬৬৮/১১৪০)
৮৮. বেহেশতী বৃক্ষশাখা হস্তে ধারণ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
مَنْ أَحَبَّ أََنْ يَسْتَمْسِكَ بِالْقَضِيبِ الاَحْمَرِ الَّذِي غَرَسَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي جَنَّةِ عَدْنٍ بِيَمِينِهِ، فَلْيَتَمَسَّكْ بِحُبِّ عَلِيِّ بْنِ أََبِي طَالِبٍ.
আল্লাহ রাববুল আলামীন চিরন্তন বেহেশতে যে লাল শাখাটি রোপণ করেছেন যে ব্যক্তি সেটি ধরতে পছন্দ করে সে যেন আলী ইবনে আবি তালিবের বেলায়েতকে গ্রহণ করে।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৯০, ফাযায়েলুস সাহাবা ২:৬৬৪/১১৩২, নাহজুল বালাগা -ইবনে আবিল হাদীদ ৯০/১৬৮)
৮৯. নবীকুলের সারনির্যাস
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
مَنْ أَرَادَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَي آدَمَ فِي عِلْمِهِ، وَ إِلَي نُوحٍ فِي فَهْمِهِ وَ إِلَي إِبْرَاهِيمَ فِي حِلْمِهِ وَ إِلَي يَحْيَي بْنِ زَكَرِيَّا فِي زُهْدِهِ وَ إِلَي مُوسَي بْنِ عِمْرَانَ فِي بَطْشِهِ فَلْيَنْظُرْ إِلَي عَلِيِّ بْنِ أََبِي طَالِبٍ.
যে ব্যক্তি আদমকে তাঁর জ্ঞানে, নুহকে তাঁর ধীশক্তিতে, ইবরাহীমকে তাঁর দূরদর্শিতায়, ইয়াহিয়াকে তাঁর সংযমশীলতায় আর মূসা ইবনে ইমরানকে তাঁর সাহসিকতায় দেখতে চায় সে যেন আলী ইবনে আবি তালিবের প্রতি লক্ষ্য করে।
(ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব-ইবনে আসাকির ২:২৮০/৮১১, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৭:৩৬৯)
৯০. সর্বপ্রথম নামায আদায়কারী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
وَ لَقَدْ صَلَّتِ الْمَلَائِكَةُ عَلَيَّ وَ عَلَي عَلِيٍّ ، لِأََنَّا كُنََّا نُصَلِّي وَ لَيْسَ مَعَنَا أَحَدٌ يُصَلِّي غَيْرُنَا.
ফেরেশতারা আমার এবং আলীর ওপর অসংখ্য সালাম পড়তো। কারণ, শুধু আমরাই নামায পড়তাম আর আমাদের সাথে নামায পড়ায় কেউ ছিল না।
(উসুদুল গবাহ ৪:১৮, আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১২১, যাখায়িরুল উকবা :৬৪, ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির ১:৮০/১১২-১১৩)
৯১. রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তি
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত আলীর প্রতি ইঙ্গিত করে আয়েশাকে বলেনঃ
يَا عَايِشَةُ، إِنَّ هَذَا أَحَبُّ الرِّجَالُ إِلَيَّ، وَ أَكْرَمُهُمْ عَلَيَّ، فَاعْرِفِي لَهُ، وَ أَكْرِمِي مَثْوَاه.
হে আয়েশা! এ মানুষটি আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় এবং মর্যাদাবান ব্যক্তি। কাজেই তার অধিকার সম্পর্কে অবগত হও এবং তার মর্যাদার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করো।
(আর রিয়াদুন্ নাদ্রাহ ৩:১১৬, উসুদুল গবাহ ৫:৫৪৮, যাখায়িরুল উকবা :৬২)
৯২. সত্য শ্রবণকারী কান
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ، إِنَّ اللهَ أَمَرَنِي أَنْ اُدْنِيكَ وَ أُعَلِّمُكَ ِلتَعِيَ، وَ أََنْزَلَتْ هَذِهِ الْآيَهُ: «وَ تَعِيَهَا اُذُنٌ وَاِعيَةٌ» فَأََنْتَ اُذُنٌ وَاعِيَةٌ لِعِلْمِي.
হে আলী! আল্লাহ আমাকে বলেছেন, তোমাকে আমার কাছে এনে আমার ইলমকে তোমাকে শিক্ষা দিতে যাতে তুমি সেগুলো পুরোপুরি শিখে নাও। এ মর্মে এই আয়াত নাযিল হয়েছে ‘‘এবং সত্যগ্রাহী কান এটাকে ধারণ করে’’* কাজেই তুমি আমার জ্ঞানের সত্যগ্রাহী কান!
* সূরা আল হাক্কাহ্ : ১২
(হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৭, আদ দুররুল মানসূর ৮:২৬৭)
৯৩. অবাধ্যদের সাথে যুদ্ধ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ، سَتُقَاتِلُكَ الْفِئَةُ الْبَاغِيَةُ وَ أََنْتَ عَلَي الْحَقِّ فَمَنْ لَمْ يَنُصُرْكَ يَوْمَئِذٍ فَلَيْسَ مِنِّي.
হে আলী! শীঘ্রই অবাধ্যদল তোমার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। অথচ তুমি সত্যের ওপরে অবস্থান করবে। সুতরাং সেদিন যে ব্যক্তি তোমাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে না সে মুসলমান নয়।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৩/৩২৯৭১)
৯৪. তোমার জন্য আল্লাহর আশ্রয়প্রার্থী হয়েছি!
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ، مَا سَأَلْتُ اللهَ عَزَّ وَ جَلَّ مِنَ الْخَيْر ِإِلَّا سَأَلْتُ لَكَ مِثْلَهُ، وَ مَا اسْتَعَذْتُ اللهَ مِنَ الشَّرِّ إِلَّا اسْتَعَذْتُ لَكَ مِثْلَهُ.
হে আলী! আমি নিজের জন্য আল্লাহর কাছে যা কিছু ভালো চেয়েছি তোমার জন্যও তা কামনা করেছি। আর যা কিছু মন্দ তা থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করেছি, তোমার জন্যেও অনুরূপ আল্লাহর কাছে আশ্রয়প্রার্থী করেছি।
(আর রিয়াদুন নুদ্রাহ ৩:১৮৯, কানযুল উম্মাল ১৩:১৫১/৩৬৪৭৪)
৯৫. তোমার শত্রুর ধর্মে বিশ্বাস নেই
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ، مَا كُنْتُ اُبَالِي مَنْ مَاتَ مِنْ اُمَّتِي وَ هُوَ يُبْغِضُك، مَاتَ يَهُودِيّاً أَوْ نَصْرَانِيّاً.
হে আলী! এতে আমার কোনো যায় আসে না যে আমার উম্মতের কোনো লোক তোমার প্রতি শত্রুতা রেখে মৃত্যুবরণ করে। অবশ্য তার মৃত্যু হয় ইয়াহুদী বা খৃস্টানের মৃত্যু।
(আল ফেরদৌস ৫:৩১৬/৮৩০৩, আল মানাকিব- ইবনুল মাগাযেলী ৫০/৭৪)
৯৬. মুনাফিকদের বিতাড়নকারী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ، مَعَك يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَصَاً مِنْ عِصِيِّ الْجَنَّةِ، تَذُودُ بِهَا الْمُنَافِقِينَ عَنِ الْحَوْضِ.
হে আলী! কেয়ামতের দিন একটি বেহেশতী লাঠি তোমার হাতে থাকবে যা দ্বারা তুমি মুনাফিকদেরকে বিতাড়িত করবে।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৮৫, যাখায়িরুল উকবা :৯১, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১৩৫)
৯৭. দুনিয়া ও আখেরাতের সর্দার
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ، أَنْتَ سَيِّدٌ فِي الدُُّنْيَا وَ سَيِّدٌ فِي الْآخِرَةِ، حَبِيبُكَ حَبِيبِي وَ حَبِيبِي حَبِيبُ اللهِ، وَ عَدُوُّكَ عَدُوِّي وَ عَدُوِّي عَدُوُّ اللهِ وَ الْوَيْلُ لِمَنْ أَبْغَضَكَ بَعْدِي.
হে আলী! তুমি দুনিয়া ও আখেরাতের সরদার। তোমার বন্ধু আমারও বন্ধু, আর আমার বন্ধু আল্লাহরও বন্ধু। তোমার শত্রু আমারও শত্রু, আর আমার শত্রু আল্লাহরও শত্রু। অভিসম্পাত তার ওপর যে আমার পরে তোমার সাথে শত্রুতা করবে।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৮, আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১২৪, আল ফেরদৌস ৫:৩২৪/৮৩২৫)
৯৮. সর্বদা আলীর সাথে থাকো
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
يَا عَمَّارُ، إِنْ رَأَيْتَ عَلِيّاً قَدْ سَلَكَ وَادِياً وَ سَلَكَ النَّاسُ وَادِياً غَيْرَهُ، فَاسْلُكْ مَعَ عَلِيٍّ و دَعِ النَّاسَ، إِنَّهُ لَنْ يَدُلَّكَ عَلَي رَدَيً، وَ لَنْ يُخْرِجَكَ مِنَ الْهُدَي.
হে আম্মার! যদি দেখতে পাও যে আলী একপথে চলেছে আর লোকেরা অন্যপথে, তাহলে তুমি আলীর সাথে চলবে এবং লোকদেরকে ত্যাগ করবে। কারণ, আলী কখনো তোমাকে বক্রপথে পরিচালিত করবে না এবং তোমাকে হেদায়েতের পথ থেকে বাইরে নিয়ে যাবে না।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৩/৩২৯৭২, তারীখে বাগদাদ ১৩:১৮৭)
৯৯. আল্লাহ তাকে বেশী ভালোবাসেন
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর চাচা হযরত আববাস আমিরুল মুমিনীন আলী (আঃ) এর প্রতি ইঙ্গিত করে হুজুর (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করেন, হে রাসূলে খোদা! তাকে কি তুমি ভালোবাস? হুজুর উত্তর দিলেনঃ
يَا عَمّ، وَاللهِ اَللهُ اَشَدُّ حُبّاً لَهُ مِنِّي أََنْ جَعَلَ ذُرِّيَةَ كُلُّ نَبِيٍّ فِي صُلْبِهِ، وَجَعَلَ ذُرِّيَتِي فِي صُلْبِ هَذَا.
হে চাচাজান! খোদার কসম, আলীর প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা আমার প্রতি তাঁর ভালোবাসার চেয়েও বেশী। কারণ, তিনি প্রত্যেক নবীর বংশকে স্বয়ং তারই ঔরসে দান করেছেন। আর আমার বংশকে দান করেছেন এর ঔরসে।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১২৬, ইয়ানাবিউল মোওয়াদ্দাহ :২৬৬, আল ইমাম আলী (আঃ)- ইবনে আসাকির ২:১৫৯/৬৪৬)
১০০. যোদ্ধা পুরুষ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাকিফের প্রতিনিধিবৃন্দের উদ্দেশে বলেনঃ
لَتُسْلِمُنَّ أَوُ لَأَبْعَثَنَّ عَلَيْكُمْ رَجُلاً مِنِّي–أو قَالَ: مِثْلَ نَفْسِي–فَلْيَضْرِبَنَّ أَعْنَاقَكُمْ، وَلْيَسْبِيَنَّ ذَرَارِيكُمْ، وَلْيَأْخُذَنَّ أَمْوَالَكُمْ فَالْتَفَتَ إِلَي عَلِيٍّ (ع)، فَأْخَذَ بِيَدِهِ وَ قَالَ: هُوَ هَذَا.
তোমাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। তা নাহলে এমন একজনকে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঠাবো যে আমা থেকে (কিংবা বললেন : যে আমার মতো)। সে তোমাদের সকলকে শেষ করে দেবে, তোমাদের সন্তানদেরকে বন্দী করবে আর তোমাদের সহায় সম্বলকে জব্দ করবে। অতঃপর রাসূল (সাঃ) আলীর দিকে মুখ ফিরালেন। তার হাত ধরলেন এবং বললেন, এই পুরুষটির কথাই বলছি।
(সুনানে তিরমিযী ৫: ৬৩৪/৩৭১৫, ফাযায়েলুস সাহাবা ২:৫৭১/৯৬৬, আল ইস্তিয়াব ৩:৪৬, খাসায়েসে নাসায়ী ১০, ১৯)
১০১. শক্তির শেষ প্রতীক
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
لَأَعْطِيَنَّ الرَّايَةُ غَداً رَجُلاً يُحِبُّ اللهَ وَ رَسُولَهُ، وَ يُحِبُّهُ اللهُ وَ رَسُولُهُ، كَرَّارٌ غَيْرُ فَرَّارٍ، فَلَمَّا أَصْبَحَ النَّاسُ، قَالَ : أَيْنَ عَلِيٌّ؟ فَدَفَعَ الرَّايَةَ إِِلَيْهِ، فَفَتَحَ اللهُ عَلَيهِ.
আগামীকাল পতাকাকে এমন কারো হাতে তুলে দেব যাকে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ভালোবাসেন, আর সেও আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে। সে অবিচল দৃঢ়পদ, কখনো পলায়ন করে না।
যখন সকাল হলো, বললেন, ‘‘আলী কোথায়?’’ অতঃপর পতাকাকে তাঁর হাতে অর্পণ করলেন এবং আল্লাহ তাঁকে বিজয় দান করলেন।
(খাসায়েসে নাসায়ী : ৬, সহীহ বুখারী ৫:৮৭/১৯৭-২৭৯/২৩১, সহীহ মুসলিম ৪:১৮৭১/৩২-৩৪, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৮/৩৭২৪, মুসনাদে আহমাদ ১:১৮৫ ও ৫: ৩৮৫)
১০২. ফেতনা থেকে নিরাপত্তা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
سَتَكُونُ بَعْدِي فِتْنَةٌ: فَإِذَا كَانَ ذَلِكَ فَاَلْزَمُوا عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ، فَإِنَّهُ أَوَّلُ مَنْ يَرَانِي، و أَوَّلُ مَنْ يُصَافِحُني يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَ هُوَ الصِّدِّيقُ الْأَكْبَرُ، وَ هُوَ فَارُوقُ هَذِهِ الْأُمَّةِ، يَفْرُقُ بَيْنَ الْحَقِّ وَ الْبَاطِلِ، وَ هُوَ يَعْسُوبُ الدِّينِ.
আমার পরে বিভিন্ন ফিতনার সৃষ্টি হবে। তখন তোমরা আলী ইবনে আবি তালিবের সাথে থাকবে। কেননা, কেয়ামতের দিন সে সর্বপ্রথম ব্যক্তি যে আমাকে দেখবে এবং আমার সাথে যোগ দিবে। সে হলো মুমিনদের মধ্যে সবচেয়ে দৃঢ়পদ এবং এই উম্মতের পথ নির্দেশক, হক আর বাতিলের মধ্যে সে পৃথক করে দেয়। দীনের বড় নেতা হলো সে।
(উসুদুল গাবাহ ৫:২৮৭, আল ইসাবাহ ৪:১৭১, আল ইস্তিআব ৪:১৭০)
১০৩. অতুলনীয় গুণের অধিকারী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ، أَخْصِمُكَ بِالنُّبُوَّةِ وَلَا نُبُوَّةَ بَعْدِي، وَ تَخْصِمُ النَّاسَ بِسَبْعٍ، لاَ يُحَاجَّكَ فِيهَا أَحَدٌ مِنْ قُرَيشٍ: أَنْتَ أَوَّلُ إِيمأَناً بِاللهِ، وَ أَوْفَاهُمْ بِعَهْدِ اللهِ، وَ أَقْوَمُهُمْ بِأَمْرِ اللهِ، وَ أَقْسَمُهُمْ بِالسَّوِيَّةِ، وَ أَعْدَلُهُمْ فِي الرَّعِيَّةِ، وَ أَبْصَرُهُمْ بِالْقَضِيَّةِ وَ أَعْظَمُهُمْ عِنْدَ اللهِ مَزِيَّةٍ.
হে আলী! আমি নবুওতের দিক থেকে তোমার ওপর শ্রেয়। কারণ আমার পরে কোনো নবী নেই। আর তুমিও সাতটি বৈশিষ্ট্যের কারণে সব মানুষের মধ্যে শ্রেয়। একজন কোরাইশেরও ঐ সাতটি গুণের কোনোটিতেই তোমার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সামর্থ্য নেই : আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়নে তুমি প্রথম, আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার রক্ষায় তুমি সবচেয়ে বিশ্বস্ত, আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়নে তুমি সবচেয়ে অবিচল, মানুষের মধ্যে ভাগ বণ্টনের ক্ষেত্রে তুমি সবচেয়ে ইনসাফকারী, মানুষের অধিকার মেনে চলার ক্ষেত্রে তুমি সবচেয়ে ন্যায়পরায়ণ, বিচারের কাজে তুমি সবচেয়ে বিচক্ষণ এবং আল্লাহর নিকটে তুমি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন।
(হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৫, শারহে নাহজুল বালাগা – ইবনে আবিল হাদীদ ৯:১৭৩
১০৪. এ ছিল আল্লাহর নির্দেশ!
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
سُدُّوا الاَبْوَابَ، إلَّا بَابَ عَلِيٍّ. فَتَكَلَّمَ بِذَلِكَ النَّاسُ، فَقَامَ رَسُولُ اللهِ (ص) فَحَمِدَ اللهَ وَ أَثْنَي عَلَيهِ و ثُمَّ قَالَ: أَمَّا بَعْدُ، فَإِنِّي أَُمِرْتُ بِسَدِّ هَذِهِ الابْوَابَ إلاَّ بَابَ عَلِيٍّ، وَ قَالَ فِيهِ قَائِلُكُمْ، وَ اللهِ مَا سَدَدْتُهُ وَ لَا فَتَحْتُهُ، وَ لَكِنِّي اُمِرْتُ فَاتَّبَعْتُهُ.
শুধু আলীর দরওয়াযা ব্যতীত সকল দরওয়াযা বন্ধ করে দাও।
লোকজন আপত্তির সুরে নানা কথা বলতে লাগলো।
হুজুর (সাঃ) উঠে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর প্রশংসা জ্ঞাপন পূর্বক ঘোষণা করলেন, আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সকল দ্বার বন্ধ করে দেয়ার জন্যে শুধু আলীর দরওয়াযা ছাড়া। আর এটা তোমাদের মধ্যে নানা আপত্তি ও আলোচনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খোদার কসম, আমি কোনো দরওয়াযা বন্ধও করিনি আর কোনো দরওয়াযা খুলেও দেই নি। বরং যা আল্লাহর নির্দেশ ছিল তাই পালন করেছি মাত্র।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৪১/২৭৩২, মুসনাদ্ আহমাদ ১:৩৩১, ফাযায়েলূস্ াহাবা ২:৫৮১/৯৮৫, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩;১২৫, খাসায়েসে নাসায়ী :১৩)
১০৫. সুন্নাতের রাস্তায় সংগ্রামী পুরুষ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত আলীকে উদ্দেশ করে বলেনঃ
قُمْ فَوَاللهِ لَأََرْضِيَنَّكَ، أََنْتَ أَخِي وَ أَبُو وُلْدِي، تُقَاتِلُ عَلَي سُنَّتِي، مَنْ مَاتَ عَلَي عَهْدِي فَهُوَ فِي كَنْزِ اللهِ، وَ مَنْ مَاتَ عَلَي عَهْدِكَ فَقَدْ قَضَي نَحْبَهُ، وَ مَنْ مَاتَ يُحِبُّكَ بَعْدِ مَوْتِكَ خَتَمَ اللهُ لَهُ بِالْأَمْنِ وَ الْإِيمَانَ مَا طَلَعَتْ شَمْسٌ أََوْ غَرُبَتْ.
ওঠো! আল্লাহর কসম, সার্থক জনম তোমার, তুমি আমার ভাই এবং আমার সন্তানদের পিতা, তুমি আমার সুন্নাতের ওপর দুশমনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ো। যে ব্যক্তি আমার সাথে প্রতিশ্রুতিশীল অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে নিঃসন্দেহে সে আল্লাহর ছায়াতলে আশ্রয় লাভ করবে। আর যে ব্যক্তি তোমার সাথে প্রতিশ্রুতিশীল অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে সে তার অঙ্গীকারের ওপর মৃত্যুবরণ করলো এবং স্বীয় কর্তব্য পালন করলো। আর যে ব্যক্তি তোমার শাহাদাতের পরে তোমার বন্ধুত্ব ও ভালোবাসায় মারা যাবে যতদিন সূর্যের উদয় অস্ত চলবে ততদিন যাবত আল্লাহ তার জন্যে নিরাপত্তা ও ঈমান লিপিবদ্ধ করবেন।
(ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৬৫৬/১১১৮, আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১২৪, যাখায়িরুল উকবা : ৬৬, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১২১)
১০৬. আল্লাহর বন্ধু
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
أُوصِي مَنْ آمَنَ بِي وَ صَدَّقَنِي بِوِلَايَةِ عَلِيِّ بْنِ أبِي طَالِبٍ ، فَمَنْ تَوَلَّاهُ فَقَدْ تَوَلَّانِي، وَ مَنْ تَوَلَّانِي فَقَدْ تَوَلَّي اللهَ، وَ مَنْ أَحَبَّهُ فَقَدْ أَحَبَّنِي، وَ مَنْ أَحَبَّنِي فَقَدْ أَحَبَّ اللهَ، وَ مَنْ أبْغَضَهُ فَقَدْ أَبْغَضَنِي، وَ مَنْ أَبْغَضَنِي فَقَدْ أَبْغَضَ اللهَ عَزَّوَجَلَّ.
আমার প্রতি যে ঈমান আনে ও বিশ্বাস স্থাপন করে তার প্রতি আমার উপদেশ হলো তার নিজের জন্য যেন আলী ইবনে আবি তালিবের
অভিভাবকত্বকে মেনে নেয়। কারণ, যে ব্যক্তি নিজেকে আলীর বেলায়েতের অধীনে নিয়োজিত করে আমি তার অভিভাবক হই, আর আমি যার অভিভাবক হই আল্লাহ তাকে স্বীয় বেলায়েতের অধীনে গ্রহণ করেন। আর যে ব্যক্তি আলীকে ভালোবাসবে সে আমাকেও ভালোবাসবে, আর যে আমাকে ভালোবাসবে আল্লাহ তাকে ভালোবাসবে। আর যে ব্যক্তি আলীকে ঘৃণা করবে সে আমাকেও ঘৃণা করবে। আর যে আমাকে ঘৃণা করবে আল্লাহ তাকে ঘৃণা করবেন।
(আলমানাকিব-ইবনে মাগাযেলী : ২৩০/২৭৭, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১০৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬১০/৩২৯৫৩)
১০৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে সৃষ্টি করা মাটি দ্বারা সৃষ্ট
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَحْيَا حَيَاتِي وَ يَمُوتَ مَمَاتِي وَ يَسْكُنُ جَنَّةُ عَدْنٍ غَرَسَهَا رَبِّي فَلْيُوَالِ عَلِيّاً مِنْ بَعْدِي، وَ يُوَالِ وَلِيَّهُ وَلْيَقْتَدِ بِأََهْلِ بَيْتِي مِنْ بَعْدِي، فَإِنَّهُمْ عِتْرَتِي، خُلِقُوا مِنْ طِينَتِي وَ رُزِقُوا فَهْمِي وَ عِلْمِي.
যে ব্যক্তি আমার মতো জীবন যাপন এবং আমার মতো মৃত্যুবরণ করে খুশী হতে চায় আর আমার আল্লাহ যে চিরকালীন বেহেশত প্রস্ত্তত করেছেন সেখানে শান্তির আবাস লাভ করতে চায় তাকে আমার পরে আলীর বেলায়েতকে গ্রহণ করতে হবে এবং তাঁর অভিভাবকত্বকে স্বীকার করে নিতে হবে। আর আমার আহলে বাইতকে অনুসরণ করতে হবে। তারা আমার বংশধর, আমার সৃষ্টি করা মাটি দিয়েই তারা সৃষ্ট। আর তাদেরকে আমার জ্ঞান ও ধীশক্তি প্রদান করা হয়েছে।
(শারহে নাহজুল বালাগা -ইবনে আবিল হাদীদ ৯/১৭০, হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:১৬, কানযুল উম্মাল ১২:১০৩/২৪১৯৮)
১০৮. আরশ মুয়াল্লায় বিবাহ…
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত আলীকে বলেনঃ
هَذَا جَبْرَائِيلُ يُخْبِرُنِي أَنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ زَوَّجَكَ فَاطِمَةَ، وَ أَشْهَدَ عَلَي تَزْوِيجِكَ أَرْبَعِينَ أَلْفَ مَلَكٍ ، وَ أَوْحَي إِلَي شَجَرَةِ طُوبَي: أََنِ انْثُرِي عَلَيْهِمُ الدُّرَّ وَ الْيَاقُوتَ، فَنَثَرَتْ عَلَيْهِمُ الدُّرَّ وَالْيَاقُوتَ، فَابْتَدَرَتْ إِلَيْهَ الْحُورُ الْعَيْنَ يَلْتَقِطْنَ مِنْ أَطْبَاقِ الدُّرِّ وَ الْيَاقُوتِ، فَهُمْ يَتَهَادُونَهُ بَيْنَهُمْ إِلَي يَوْمِ الْقِيَامَةِ.
এই মাত্র জিবরাঈল আমার জন্যে সংবাদ আনলেন যে, মহান আল্লাহ তোমাকে ফাতিমার সাথে বিবাহ দিয়েছেন। এই বিবাহে চার হাজার ফেরেশতা সাক্ষী দিয়েছে। তুবা বৃক্ষের প্রতি ইশারা করলেন যাতে তাদের ওপর মণিরত্ন এবং ইয়াকুত ছড়ায়। তখন তুবা সেটাই করলো। আর কৃষ্ণ চক্ষুর বেহেশতী হুরগণ সে মণিরত্ন আর ইয়াকুতগুলোকে কুড়িয়ে বড় বড় তশতরিতে রাখলো। কেয়ামতের দিন সেগুলোই তারা একে অপরকে উপহার প্রদান করবে।
(আর রিয়াদুন্ নাদ্রাহ ৩:১৪৬, যাখায়িরুল উকবা :৩২)
১০৯. সত্যিকার পরহেযগার
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ، إِنَّ اللهَ قَدْ زَيَّنَكَ بِزِينَةٍ لَمْ يُزَيِّنُهُ الْعِبَادَ بِزِينَةٍ أَحَبُّ إِلَيْهِ مِنْهَا، هِيَ زِينَةُ الْأَبْرَارِ عِنْدَ اللهِ تَعَالي، الزُّهْدُ فِي الدُُّنْيَا، فَجَعَلَكَ لَا تَرْزَأَ مِنَ الدُُّنْيَا شَيْئًا وَ لَا تَرْزَأ الدُُّنْيَا مِنْكَ شَيْئاً وَ وَهَبَ لَكَ حُبَّ الْمَسَاكيِنَ فَجَعَلَكَ تَرْضَي بِهِمْ أَتْبَاعاً وَ يَرْضَوُنَ بِكَ إِمَاماً.
হে আলী! আল্লাহ তোমাকে এমন গুণে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করেছেন যার চেয়ে পছন্দনীয় গুণ মানুষের জন্য আর নেই। আল্লাহর দরবারে সৎকর্মশীলদের সেই গুণবৈশিষ্ট্যের নাম হলো দুনিয়ার জীবনে পরহেযগারী। আল্লাহ এমন করেছেন যে তুমি দুনিয়া থেকে কিছুই গ্রহণ করোনি আর দুনিয়াও তোমার থেকে কিছুই গ্রহণ করেনি। এর বিনিময়ে আল্লাহ অসহায়দের ভালোবাসা তোমাকে দান করেছেন। তুমিও খুশী হয়েছ যে তারা তোমার অনুসারী হয়েছে আর তারাও এই জন্য খুশী যে তুমি তাদের ইমাম!
(হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৭১, শারহে নাহজুল বালাগা- ইবনে আবিল হাদীদ ৯:১৬৬)
১১০. অতুলনীয় মর্যাদার অধিকারী
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইমাম আলীকে বলেনঃ
أُوتِيتَ ثَلَاثاً لَمْ يُؤَتَهُنَّ أَحَدٌ وَ لَا أنَا، أُوتِيتَ صِهْراً مِثْلِي وَ لَمْ أُوْتَ أنَا مِثْلُكَ، وَ أُوتِيتَ زَوْجَةً صِدِّيقَةً مِثْلُ ابْنَتِي، وَ لَمْ أؤْتَ مِثْلَهَا زَوْجَةً، وَ أُوتِيتَ الْحَسَنَ وَ الْحُسَيْنَ مِنْ صُلْبِكَ، وَ لَمْ أُؤتَ مِنْ صُلْبِي مِثْلَهُمَا، وَ لَكِنَّكُمْ مِنِّي وَ أنَا مِنْكُمْ.
তোমাকে তিনটি মর্যাদা দেয়া হয়েছে যা কাউকে এমনকি আমাকেও দেয়া হয়নি। আমার মতো ব্যক্তির জামাতার মর্যাদা যা শুধু তোমাকে দেয়া হয়েছে, আমাকে নয়। আমার কন্যার মতো পুণ্যবতী সহধর্মিণী তুমি পেয়েছ, তার মতো সহধর্মিণী আমার নেই। আর হাসান ও হুসাইনের ন্যায় সন্তানদ্বয় তোমাকে দেয়া হয়েছে, তাদের মতো সন্তান আমাকে দেয়া হয়নি। তবে তোমরা সবাই আমা থেকে আর আমি তোমাদের থেকে।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৭২, নাযমু দুরারিস সামতাঈন :১১৩)
প্রকাশনা : দারুল কুরআন ফাউন্ডেশন, ঢাকা
গ্রন্থসূত্রঃ
১. আল ইহসান বি তারতিবি সাহীহ ইবনে হাববান – ইবনে বালাবান, মৃঃ ৭৩৯ হিঃ, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত, প্রথম মুদ্রণ।
২. আল ইস্তিয়াব (আল ইসাবাহ্ গ্রন্থের হাশিয়াতে মুদ্রিত)ঃ ইবনে আব্দুল বার, মৃঃ ৪৬৩ হিঃ, দারু এহইয়াউ তুরাছিল আরাবী, বৈরুত, প্রথম মুদ্রণ।
৩. উসদুল গবাহ ফি মারিফাতিস সাহাবা – ইবনুল আছির, মৃত্যু ৬৩০ হিঃ, দারু এহইয়াউ তুরাছিল আরাবী, বৈরুত।
৪. আল ইসাবা- ইবনে হাজার আসকালানী, মৃত্যু ৮৫২ হিঃ, দারু এহইয়াউ তুরাছিল আরাবী, বৈরুত।
৫. আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া- ইবনে কাছীর দামেস্কী, মৃত্যু ৭৭৪ হিঃ, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত।
৬. তারীখে বাগদাদ- খাতীবুল বাগদাদী, মৃত্যু ৪৬৩ হিঃ, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত।
৭. তারীখুত তাবারী (তারীখুল উমাম ওয়াল মুলুক) – মুহাম্মদ ইবনে জারীর তাবারী, মৃত্যু ৩১০ হিঃ, দারুত তুরাছ, বৈরুত।
৮. ইমাম আলী (আঃ) (তারীখে দামেস্ক থেকে অনুবাদকৃত)- ইবনে আসাকির, মৃত্যু ৫৭১ হিঃ, মাহমুদী ফাউন্ডেশন, বৈরুত।
৯. তাফসীরুত তাবারী (জামেউল বাইয়্যান ফি তাফসীরিল কুরআন) – আবি জাফর তাবারী, মৃত্যু ৩১০ হিঃ, দারুল মাআরিফা, বৈরুত।
১০. জামিউল উসুল মিন আহাদীসুর রাসূল (সাঃ)- ইবনুল আছির আল জাযরী, মৃত্যু ৬০৬ হিঃ, দারু এহইয়াউ তুরাছিল আরাবী, বৈরুত।
১১. আল জামিউস সাগীর- সিয়ূতী, মৃত্যু ৯১১ হিঃ, দারুল ফিক্র, বৈরুত।
১২. হিল্লীয়াতুল আউলিয়া ওয়া তাবাকাতুল আসফিয়া- আবি নাঈম আল ইস্পাহানী, মৃত্যু ৪৩০ হিঃ, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ্, বৈরুত।
১৩. খাসায়েউ আমিরুল মুমিনীন (আঃ)- নাসায়ী, মৃত্যু ৩০৩ হিঃ।
১৪. আদ দুররুল মানছুর- সিয়ূতী, মৃত্যু ৯১১ হিঃ, দারুল ফিক্র, বৈরুত, প্রথম মুদ্রণ।
১৫. দালায়িলুন নবুওয়্যাহ- বায়হাকী, মৃত্যু ৪৫৮ হিঃ, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত।
১৬. যাখায়িরুল উকবা- মুহিববুত তাবারী, মৃত্যু ৬৯৪ হিঃ, দারুল মাআরিফাহ্, বৈরুত।
১৭. আর রিয়াদুন নাদরাহ- মুহিববুত তাবারী, মৃত্যু ৬৯৪ হিঃ, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত।
১৮. সুনানুত তিরমীযী (আল জামিউস সাহীহ্)- আবি ঈসা আত তিরমিযী, মৃত্যু ২৯৭ হিঃ, দারু এহইয়াউ তুরাছিল আরাবী, বৈরুত।
১৯. সুনানে ইবনে মাজাহ- মুহাম্মদ ইবনে ইয়াযিদ আল কাযভীনী, মৃত্যু ২৭৫ হিঃ, দারুল ফিক্র।
২০. সিয়ারু আ’লামুন নুবালা- যাহাবী, মৃত্যু ৭৪৮ হিঃ, রেসালা ফাউন্ডেশন, বৈরুত, তৃতীয় মুদ্রণ, ১৪০৫ হিঃ।
২১. শারহে নাহজুল বালাগা- ইবনে আবিল হাদীদ, মৃত্যু ৬৫৬ হিঃ, দারু এহইয়াউ তুরাছিল আরাবী, বৈরুত।
২২. সাহীহ আল বুখারী- আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল বুখারী, মৃত্যু ২৫৬ হিঃ, আলামুল কুতুব, বৈরুত।
২৩. সাহীহ মুসলিম- মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ আল নিশাবুরী, মৃত্যু ২৬১ হিঃ, দারুল ফিক্র, বৈরুত।
২৪. আস সাওয়ায়িকুল মুহরিকা- ইবনে হাজার আল হায়সামী আল মাক্কী, মৃত্যু ৯৭৪ হিঃ, রিসার্চঃ আব্দুল ওয়াহাব আব্দুল লাতিফ, মাক্তাবাতুল কায়রো, মিসর, দ্বিতীয় মুদ্রণ, ১৩৮৫ হিঃ।
২৫. ফারায়িদুস সামত্বাঈন : হামাভী, মৃত্যু ৭৩০ হিঃ, আল- মাহমুদ ফাউন্ডেশন, বৈরুত।
২৬. ফিরদাউসুল আখবার- শিরাবিয়া ইবনে শাহারদার আদ দাইলামী, মৃত্যু ৪৪৫ হিঃ, দারুল কুতুবুল আরাবী, বৈরুত।
২৭. ফাযায়িলুস সাহাবা- আহমাদ ইবনে হাম্বাল, মৃত্যু ২৪১ হিঃ, রিসার্চঃ ওয়াসী উল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ আববাসী, ১৪০৩ হিঃ।
২৮. আল কামিল ফিত তারীখ- শায়বানী (ইবনে আছীর), মৃঃ ৬৩০ হিঃ, দারু সাদির, বৈরুত।
২৯. কানযুল উম্মাল- মুত্তাকী আল হিন্দী, মৃঃ ৯৭৫ হিঃ, আল-রিসালা ফাউন্ডেশন, বৈরুত।
৩০. মাজমাউয যাওয়ায়েদ ওয়া মাম্বায়ূল ফাওয়ায়েদ- হায়ছামী, মৃঃ ৮০৭ হিঃ, দারুল কিতাবুল আরাবী, বৈরুত।
৩১. মুখতাসারু তারীখে দামেস্ক- ইবনুল মানযুর, মৃঃ ৭১১ হিঃ, দারুল ফিক্র, বৈরুত, প্রথম মুদ্রণ।
৩২. আল মুস্তাদরাক আলাস সাহীহাঈন- হাকেম আল নিশাবুরী, মৃত্যু ৪০৫ হিঃ, দারুল মাআরিফা, বৈরুত।
৩৩. মুসনাদে আহমাদ-আহমাদ ইবনে হাম্বাল, মৃত্যু ২৪১ হিঃ, দারুল ফিক্র, বৈরুত।
৩৪. মুশকিলুল আছার- তাহাভী, মৃত্যু ৩২১ হিঃ, দারুল বায।
৩৫. মাসাবিহুস সুন্নাহ- বাগাভী, মৃত্যু ৫১৬ হিঃ, দারুল মাআরিফা, বৈরুত।
৩৬. মাআলিমুত তানযীল- বাগাভী, মৃত্যু ৫১৬ হিঃ, দারুল ফিক্র, বৈরুত, ১৪০৫ হিঃ।
৩৭. আল মু’জামুল আওসাত- তাবারানী, মৃঃ ৩৬০ হিঃ, মাকতাবাতুল মাআরিফ, আল-রিয়াদ, প্রথম মুদ্রণ।
৩৮. আল মু’জামুল কাবীর- তাবারানী, মৃত্যু ৩৬০ হিঃ, দারু এহইয়াউ তুরাছিল আরাবী, বৈরুত।
৩৯. মাকতালুল হুসাইন (আঃ)- খারেযমী, মৃত্যু ৫৬৮ হিঃ, মাকতাবাতুল মুফীদ, কোম।
৪০. আল মানাকিব- খারেযমী, মৃত্যু ৫৬৮ হিঃ, মাকতাবাতু নেইনাভা আল হাদীস, তেহরান, মাকতাবাতু জামিয়াতুল মুদাররেসীন, কোম।
৪১. মানাকিবুল ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব (আঃ)- ইবনুল মাগাযেলী, মৃত্যু ৪৮৩ হিঃ, দারুল আদ্ওয়া, বৈরুত।
৪২. মুন্তাখাবু কানযুল উম্মাল (মুসনাদে আহমাদ এর হাশিয়াতে মুদ্রিত) – মুত্তাকী আল হিন্দী, মৃত্যু ৯৭৫ হিঃ, দারুল ফিক্র।
৪৩. আল মুনাতাখাবু মিন মুসনাদে আব্দু ইবনে হামীদ- আবু মুহাম্মদ আব্দু ইবনে হামীদ, মৃত্যু ২৪০ হিঃ, রিসার্চঃ সুবহী আল বাদ্রী ওয়া মাহমুদ আস সায়ীদ, আলামুল কুতুব ওয়া মাকতাবাতুন নাহদাতুল আরাবীয়া কর্তৃক প্রকাশিত, বৈরুত, প্রথম মুদ্রণ, ১৪০৮ হিঃ।
৪৪. নাযমু দুরারুস সামত্বাঈন- মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ আল যারান্দী, মৃত্যু ৭৫০ হিঃ, মাখযানুল আমীনী প্রকাশিত, নাজাফ আল-আশরাফ।
৪৫. ওয়াসীলাতুল মুতাআবেবদীন (সীরাতুল মুল্লা) – ইবনে হাফ্স উমর ইবনে মুহাম্মাদ আল মুল্লা আল মুসেলী, মৃত্যু ৫৭০ হিঃ, আল হিন্দ, প্রথম মুদ্রণ।
৪৬. ইয়ানাবিয়্যুল মুওয়াদ্দাহ- কান্দুযী, মৃত্যু ১২৯৪ হিঃ, দারুল কুতুবুল ইরাকীয়া, কাযেমীয়া, ১৩৮৫ হিঃ।