নবী‌ ও ‌রাসুলের‌ ‌মধ্যে‌ ‌পার্থক্য‌‌ ‌‌কী‌?‌

নবী হচ্ছেন তিনি যার ওপর আসমানী কিতাব নাযিল হয় নি। আর রাসূল হচ্ছেন তিনি যার ওপর আসমানী কিতাব নাযিল হয়েছে।

নবী রাসুলের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। তন্মধ্যে কয়েকটি হলোঃ

(১) রাসুল হলেন যার উপর আসমানি কিতাব নাযিল হয়েছে।

  নবী হলেন যার উপর আসমানি কিতাব নাযিল হয়না।

(২)  রাসুল স্বয়ংসম্পূর্ণ শরীয়ত নিয়ে আসেন।

  নবী পুর্ববর্তী রাসুলের শরীয়তের প্রসারের জন্য আসেন।

(৩)  প্রায়শ নবী একেক জনগোষ্ঠীরর জন্য এসে থাকেন।

রাসুল অনেক জনগোষ্ঠীর জন্য এসে থাকেন।

(৪) রাসুল নতুন শরীয়ত নিয়ে আসেন।

(৫) রাসুল হতে হলে তাকে অবশ্যই নবী হতে হবে।

কিন্তু আমাদের নবী খাতেমিন নাব্যিয়্যিন। অর্থাৎ ওনার মাধ্যমে নব্যুয়্যাতের ও নবীগনের সমাপ্তি সুচিত হয়েছে।

যেহেতু আর কোন নবী আমাদের মাঝে আসবেন না সেহেতু রাসুল এরও সমাপ্তি হয়েছে।

যেকোন নবী তার পূর্ববর্তী রাসুলের বা সমকালীন রাসুলের সাহায্যার্থে এসে থাকেন ও তার শরীয়তের উপর প্রতিষ্ঠীত থাকেন।

(৬) নবী ও রাসুল মাসুম হয়ে থাকেন

(৭) পুরুষদের মধ্য হতে নবী – রাসুল ও ইমাম হয়ে থাকেন। আর মহিলাদের মধ্য হতে বাতুুল উপাধি আল্লাহ দিয়ে থাকেন। যাদের সকলের কাছে জিব্রাইল (আ:) এসে থাকেন।

  • রাসুল কিভাবে হয় বা কাকে বলে ?রাসুলের দায়িত্ব কি ?রাসুল সম্বন্ধে কিছু কথাঃ 

প্রত্যেক বস্তু আমি জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি ,যেন তোমরা উপদেশ গ্রহন করতে পার। (সুরা যারিয়াত=৪৯)

আর যিনি সৃষ্টি করেছেন সবকিছুর জোড়া। (সুরা যুখরূফ=১২) যেমন: নবী ও রাসুল; ফরজ ও নফল; নারী ও পুরুষ;

{রাসুল অর্থ-বার্তাবাহক ,অর্থাত্‍ যে বা যা আল্লাহর বার্তাবহন করেন। কোরআন আল্লাহর বার্তাবহন করে। সেই সূত্রে আমরা এও বলতে পারি কোরআনই হলো রসুল ।} 

আসুন নিম্নোক্ত আয়াত দ্বারা আমরা সমাধান নেই- 

রাসুলের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্ট বাণী পৌঁছে দেয়া। (সুরা নাহল=৩৫) {কোরআনের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্ট আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেয়া।} 

রাসুলের দায়িত্ব শুধু প্রচার করা । (সুরা মায়েদা=৯২ ও ৯৯) {কোরআন আল্লাহর বাণী প্রচার করে ।}

আমি প্রত্যেক রসুলকে তার স্বজাতির ভাষাভাষি করে পাঠিয়েছে তাদের নিকট সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করার জন্য। (সুরা ইব্রাহিম=৪) {কোরআন প্রত্যেকের স্বজাতির ভাষাভাষি করে প্রেরণ করা হয়েছে তাদের নিকট সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করবার জন্য ।} 

কারনঃ ভাষা ও বর্ণের সৃষ্টিই আল্লাহ পাকের নিদর্শন। নিশ্চয়ই এতে রয়েছে জ্ঞানীবানদের জন্য নিদর্শন। (সুরা রূম=২২)

আমি তো আপনাকে প্রেরণ করেছি স্বাক্ষ্য প্রদানকারী সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী রূপে। (সুরা ফাতহ=৮)

{কোরআন আল্লাহ প্রেরণ করেছেন শুধু সতর্ককারী ,সুসংবাদ দাতা ও স্বাক্ষী হিসেবে}

সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী হিসেবে রসুলদের আমি এজন্য প্রেরণ করেছি যাতে ,রসুলদের আগমনের পর আল্লাহর সামনে মানুষের কোন ওজর আপত্তি না থাকে। আল্লাহ পরাক্রমশালী ,হেকমতওয়ালা। (সুরা নিসা=১৬৫)

প্রত্যেক জাতির জন্য রয়েছেন এক এক জন রসুল ।আর যখন তাদের রসুল এসেছে ,তখন তাদের মাঝে ন্যায়ভাবে মিমাংসা করা হয়েছে এবং তাদের প্রতি জুলুম করা হয়নি। (সুরা ইউনুস=৪৭)

আর যদি আল্লাহ চাইতেন ,তবে অবশ্যই তিনি তোমাদের সবাইকে এক জাতি করে দিতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের পরীক্ষা করতে চান যা তিনি তোমাদের দিয়েছেন তার মাধ্যমে। (সুরা মায়েদা=৪৮)

আমি প্রত্যেক রাসুলকে তাহার স্বজাতির ভাষাভাষি করে পাঠিয়েছি তাদের নিকট সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করাবার জন্য। (সুরা ইব্রাহিম=৪)

আর আপনার রব জনপদ সমূহকে ধ্বংস করেন না ,যে পর্যন্ত না তিনি তার কেন্দ্রস্থলে রসুল প্রেরণ করেন ।যিনি তাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করেন ।এবং আমি তো জনপদসমূহকে কেবল তখনই ধ্বংস করি ,যখন তার অধিবাসীরা জুলুম করে। (সুরা কাসাস=৫৯)

যেমন আমি পাঠিয়েছি তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্য একজন রসুল ,যিনি আমার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করে তোমাদের শুনান ।তোমাদের পবিত্র করেন ,কিতাব ও হেকমত তোমাদের শিক্ষা দেন এবং তোমাদের এমন বিষয় শিক্ষা দেন তা তোমরা কখনও জানতে না। (সুরা বাকারা=১৫১)

এর তাৎপর্য হলো এই যে, শরীয়ত তোমাকে যে শিক্ষা দিয়েছে সেভাবেই তুমি আল্লাহকে স্মরণ কর। ঐ সব সুফীবাদের তরিকত উদ্দেশ্য নয় যা শুধু শরীয়তের ব্যবস্থাপনার সঠিক জ্ঞানের অভাবে মনগড়াভাবে তৈরি করা হয়েছে। 

আমি যদি তাদেরকে রসুল প্রেরণের পূর্বে কোন আযাব দিয়ে ধ্বংস করতাম ,তবে তারা অবশ্যই বলতঃ হে আমাদের রব! তুমি আমাদের কাছে একজন রসুল কেন পাঠালে না ?যদি পাঠাতে তাহলে আমরা লান্ছিত ও অপমানিত হওয়ার পূর্বে তোমার আদেশ মেনে চলতাম। (সুরা ত্বাহা=১৩৪) 

এটা এজন্য যে ,আপনার রব কোন জনপদের অধিবাসীকে ধ্বংস করেন না ,তাদের জুলুমের কারণে এমন অবস্থা তথাকার অধিবাসীরা বেখবর থাকে। (সুরা আনআম=১৩১)

এমন কোন জনপদ নেই যা আমি কিয়ামতের দিনের পূর্বে ধ্বংস করব না ,অথবা যাকে কঠোর শাস্তি দিব না ,একথা তো কোরআনে লিপিবদ্ধ রয়েছে। (সুরা নিসা=১১৬)

প্রত্যেক জাতির জন্য রয়েছে এক নির্ধারিত সময় ।সুতরাং যখন তাদের নির্ধারিত সময় এসে যাবে ,তখন তারা এক মুহুর্ত পেছনেও যেতে পারবে না এবং এগিয়েও আসতে পারবে না। (সুরা আরাফ=৩৪)

সেদিন আমি প্রত্যেক জাতি থেকে একজন স্বাক্ষী দ্বার করাব ।সেদিন কাফেরদেরকে কৈফিয়তের অনুমতি দেওয়া হবে না এবং তাদের তওবাও কবুল করা হবে না। সুরা নাহল=৮৪)

বলুনঃ যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন ,তবে আমি কোরআনের আয়াত তোমাদেরকে পাঠ করে শুনাতাম না ।এবং তিনিও তোমাদের আয়াত জানাতেন না ।আমি তো অবস্থান করেছি তোমাদের মধ্যে এর পূর্বে জীবনের দীর্ঘ সময় ।তবে কি তোমরা এতটুকু বুঝ না? (সুরা ইউনুস=১৬)

## তুমি তাদের নিকট এক জনপদবাসীর দৃষ্টান্ত বিবৃত কর, যখন তাদের নিকট রাসূলগণ আগমন করেছিল। (এরূপে যে,) যখন আমরা তাদের নিকট দু’জন রাসুল প্রেরণ করছিলাম, কিন্তু তারা উভয়কে মিথ্যা প্রতিপাদন করেছিল। তখন আমরা তাদের তৃতীয় একজন (রাসুল) দ্বারা সাহায্য করেছিলাম। (সুরা ইয়াছিন=১৩-১৪। )

অধিকাংশ তাফসিরকারকের মতে জনপদটি ছিল আন্তাকীয়া এবং প্রেরিত রাসুলদ্বয় হলেন ইউহানা ও ইউনুস। আর তাঁদের সমর্থনে ও সাহায্যে যাঁকে তৃতীয় রাসুল হিসাবে প্রেরণ করা হয় তাঁর নাম ছিল শামাউন।– আল্লামা জাওয়াদী

  • রাসূলগণের সংখ্যা কত?

“তোমদের নিকট ওহী প্রেরণ করিয়াছি- যেমন নূহ ও তাহার পরবর্তী নবীগনের নিকট প্রেরণ করিয়াছিলাম; যথা ইব্রাহীম, ইসমাইল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাহার বংশধরগণ, ঈসা, আইয়ুব, ইউনুস, হারূন এবং সলায়মানের নিকট ওহী প্রেরণ করিয়াছিলাম এবং দাউদকে যাবূর দিয়াছিলাম।” (সূরা নিসা- ১৬৩)

“অনেক রাসূল প্রেরণ করিয়াছি-যাহাদের কথা পূর্বে তোমাক বলিয়াছি এবং অনেক রাসূল-যাহাদের কথা তোমাকে বলি নাই। এবং মুসার সহিত আল্লাহ সাক্ষাত বাক্যালাপ করিয়াছিলেন।” সূরা নিসা- ১৬৪

“সুসংবাদবাহী ও সাবধানকারী রাসূল প্রেরণ করিয়াছি-যাহাতে রাসূল আসার পর আল্লাহর বিরুদ্ধে মানুষের কোনো অভিযোগ না থাকে।” (সূরা নিসা- ১৬৫)

কুরআন মাজীদে নিম্নোক্ত রাসুলদের উল্লেখ রহিয়াছেঃ

তাফসীর ইবনে কাছীর খন্ড ৩, পৃ: ৩৬২ -৬৩

““ইবনে মারদুবিয়া (র)……হযরত আবুযার হতে তাঁহার রচিত তাফসীর গ্রন্থে বর্ণনা করিয়াছেন যে, হযরত আবুযার বলেনঃ একদা আমি নবী করীম (সা)-কে জিজ্ঞাসা করিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! নবীদের সংখ্যা কত? তিনি বলিলেনঃ এক লক্ষ চব্বিশ হাজার। আরয করিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! তাদের মধ্যে কতজন রাসূল ছিলেন? তিনি বলিলেনঃ তিনশত তেরজনের বিরাট একদল। আরয করিলাম তাদের মধ্যে কে প্রথম ছিলেন? তিনি বলিলেনঃ (হযরত) আদম (আ) । আরয করিলাম তিনি কি নবী ও রাসূল উভয়ই ছিলেন? তিনি বলিলেনঃ হ্যাঁ আল্লাহ তাঁহাকে স্বীয় কুদরতে সৃষ্টি করিয়াছেন।…””

আল্লাহপাক সৃষ্টির শুরুতে সকল (এক লক্ষ চব্বিশ হাজার) নবীদের রুহুকে ডাকলেন এবং তাদের থেকে নিম্নোক্ত প্রতিশ্রুতী নিলেনঃ

“(সে সময়কেও স্মরণ কর) যখন আল্লাহ নবীদের থেকে প্রতিশ্রুতী নিলেন যে, আমি তোমাদের গ্রন্থ ও হিকমত (প্রজ্ঞা) থেকে যা প্রদান করেছি এরপর তোমাদের নিকট কোন রাসূল আগমন করে যে তোমাদের নিকট যা আছে তা সমর্থন করে তাহলে তোমরা অবশ্যই তার প্রতি বিশ্বাস করবে এবং অবশ্যই তাকে সাহায্য করবে। এবং তিনি বললেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করে নিয়েছো এবং এর ওপর আমার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছ? তারা (সকলেই) বলল, ‘নিশ্চয়ই আমরা স্বীকার করলাম’; ‘তবে তোমরা (আজকের প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের ব্যাপারে) সাক্ষী থাক। আর তোমাদের সাথে আমিও এক সাক্ষী। (সুরা আলে ইমরান=৮১)

  • যারা নিজেকে রসুল বলছেন!
  • যারা নিজেদেরকে রাসুল দাবি করছেন তারা বস্তুত: হযরত মুহাম্মাদ (সা:) কে মৃত মনে করছেন (নাউযুবিল্লাহ)।

    আল্লাহ্ সূরা আলে ইমরানের ১৬৯ নং আয়াতে বলছেন:
    “তোমরা কি মনে করেছো যারা আল্লাহর রাহে নিহত হয় তারা মৃত, না-বরং তারা জীবিত, তাঁরা তাঁদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে রিজিকপ্রাপ্ত।”

    আল্লাহ্ সূরা বাক্বারার ১৫৪ নং আয়াতে এ প্রসঙ্গে আরো বলছেন:
    “ যারা আল্লাহর রাহে নিহত হয় তাদেরকে মৃত বলো না, বরং তারা জীবিত, তবে তোমরা তা উপলব্ধি করতে পারো না।”

    অথচ হযরত মুহাম্মাদ (সা:) আওয়াল ওয়া আখের ওয়া জাহের ওয়া বাতেন। তিনি প্রথমেও ছিলেন শেষেও থাকবেন, তিনি প্রকাশ্যেও আছেন আবার অন্তরালেও আছেন।তিনি সৃষ্টির শুরুতে ছিলেন শেষেও হাউজে কাওসারে দাড়িয়ে থাকবেন। তাঁর কোরআন ও আহলে বাইতের সাথে আমরা কি করেছি এ জানার জন্য। যারা মানবে তাদের তিনি হাউজে কাউসারের পানি পান করাবেন।

    আর হযরত মুহাম্মাদ (সা:) প্রকাশ্যে ও অন্তরালে আছেন বলতে তিনি আছেন তাঁর ইমামদের (আ:) মাধ্যমে।

    তিনি বলেছেন: আলী আমা হতে আমি আলী হতে।

    আলী আমার নফস। (আলে ইমরান ৬১ আয়াতে মোবাহেলা)

    আলী ও আমি একই নূরের দুই অংশ। {রাসুলে খোদা (দূরুদ) বলেছেন। হাদিসে কুদসীতে আল্লাহ পাক বলেছেন “”আমি আমার মুখ মন্ডলের নুর দ্বারা মুহাম্মদ (দূরুদ) কে সৃজন করেছি। [সীররুল আসসার ৩ পৃষ্ঠা ]এই খানে লক্ষনীয় বিষয় হচ্ছে আল্লাহ পাক নিজের চেহারা থেকে রাসুলে খোদা মুহাম্মদ (দূরুদ) সৃষ্টি করেছেন এবং ওপর এক জায়গায় রাসুল (দূরুদ) বলেছেন মাওলা আলী এবং নূরনবী (সা:) একই নূরের দুই খন্ড।। #সুবহানআল্লাহ।।। “”আনা ওয়া আলীউন নূরীন মিন ওয়াহিদ “” অর্থাৎ আমি এবং আলী একই নূরের দু’খন্ড।”””#আলী_মিন্নী_ওয়া_আনা_মিনাল_আলী “””#অর্থাৎ:- আলী আমা হতে এবং আমি আলী হতে।”””#ইন্নাহু_মিন্নী_ওয়া_আনা_মিনহু “””#অর্থাৎ:- নিশ্চই সে (আলী) আমার এবং আমি তার (আলীর)।””খাসায়েসুল কোবরা “” ২য় খন্ডের ২৭০ পৃষ্টায় বর্ণিত আছে যে ,হযরত নূরে খোদা মুহাম্মদ (দূরুদ) বলেছেন:””আলীর তুলনা একমাত্র আমার সাথে। “””কিন্তু আবার অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে নূরে মুহাম্মদ (দূরুদ) তো বলেছেন””” আনা মিন নুরীল্লাহ ওয়াল খালকো কুল্লুহিম মিন নুরী “””#অর্থাৎ:- আমি আল্লাহর নূর হতে এবং সমস্ত সৃষ্টি আমার নূর হতে।।। #ইয়া_নূরে_মাওলা।।।}

    আমি জ্ঞানের শহর আলী তার দরজা।

    এভাবেই একে একে রারো জন ইমামের নাম ধরে ধরে বলে শেষে তিনি বলেছেন: বারোতম জন আমার নামে নাম হবে। আমার মতো দেখতে হবে। সকল নবী ও রাসুলে মোযেজা থাকবে তার কাছে। তিনিই হলে ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে হাসান আল মাহদী (আ:)। আর আমরা সেই সব ইমাম বা আলে ইয়াসিন, কোরআনের নূর বা জ্যোতিদের স্থান দখলকারী যারাই হবেন তারাই এক একজন বড় বড় নমরুদ ফেরাউন যারা নিজেদেরকে খোদা বলে দাবি করতো। তাদের পরিনাম সকলেরই জানা।

    শয়তানও বতর্মানে তার নতুন খোদা বানাতে প্রস্তত। আর যারা নিজেদেরকে রাসুল বলে দাবি করছেন তারা আবার নিজেদেরকে আল্লাহও বলে দাবি করছেন। যারা শয়তানের গোলামী করছেন ও শয়তানের ওয়াস ওয়াসার স্বিকারে পরিনত হয়েছেন। তাদেরকে তওবা করে ফিরে আসার আহবান রাখছি।

    • এরপরও যারা নিজেকে রসুল বলছেন তারা কি পারিশ্রমিক, মজুরী গ্রহন করেন কী?

    বলঃ আমি এর জন্য তোমাদের নিকট কোন পারিশ্রমিক চাই না এবং যারা মিথ্যা দাবী করে আমি তাদের দলভুক্ত নই। (সুরা সাদ=৮৬)

    অনুসরণ কর তাদের ,যারা তোমাদের নিকট থেকে কোন মজুরী গ্রহণ করে না এবং সত্‍পথ প্রাপ্ত। (সুরা ইয়াছিন=২১)

    বলুনঃ এর জন্য আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না ।এতো বিশ্ববাসীর জন্য একটি উপদেশ মাত্র। (সুরা আনআম=৯০)

    (হে রাসুল!) তুমি বলে দাও, ‘আমি এর (বার্তা প্রচারের) জন্য তোমাদের নিকট হতে আমার (মাওয়াদ্দাতা ফিল কুরবা) পরমাত্মীয়গনের প্রতি সৌহার্দ্র (বা ভালবাসা যা প্রকাশ যোগ্য) ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদান চাই না,’ এবং যে ব্যক্তি উত্তম কর্ম করবে, আমি তার জন্য কল্যান বৃদ্ধি করে দেব। (সুরা শূরা=২৩)

    আল কুরআনুল কারীম ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৬৭ 

    (মাওলানা ফরমান আলী সাহেব-অনবাদ: মাওলানা শেখ ছাবের রেজা)

    তাফসীরে কাশ্শাফ, রুহুল বায়ান, তাফসীরে কাবীর, তাফসীরে দুররে মানসুর প্রভৃতিতে বর্ণিত হয়েছে যে, আয়াতটি নাযিল হলে মহানবী (সাঃ) বলেন, ‘ যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মদের ভালবাসার ওপর মৃত্যবরণ করে সে শহীদের মৃত্যুবরণ করে, সে পূর্ণ ঈমানসহ মারা যায়, তাকে মালাকুল মওত ও মুনকি-নাকির বেহেশতের সুসংবাদ দান করেন, তাকে বেহেশতে সেভাবে প্রেরণ করা হবে যেমন নববধূ স্বামীগৃহে যায়, আর যারা তাদের প্রতি শত্রুতায় মৃত্যূবরণ করে, কিয়ামতে তাদের ললাটে লেখা থাকবে, ‘এরা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত’। স্মরণ রেখ, তারা কাফির, তারা বেহেশতের সুগন্ধও পাবে না। তখন জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, ‘ তারা কারা, যাদের ভালবাসা (মাওয়াদ্দাত) আল্লাহ ফরয করেছেন?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘আলী, ফাতিমা, হাসান ও হুসাইন।’ তিনি আরো বলেন, ‘যারা এদের ওপর জুলুম করবে এবং এদের ব্যাপারে যারা আমাকে কষ্ট দেবে তাদের জন্য বেহেশত হারাম হবে।’ 

    তাফসীরে সা’লাবীতে ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত হয়েছে, ‘উত্তম কর্ম’ বলতে মহানবী (সা:)-এর বংশধরদের প্রতি ভালবাসাকে বুঝানো হয়েছে। তাফসীরে কাশশাফে সুদ্দী হতে বেওয়ায়েতটি বর্ণিত হয়েছে। তাফসীরে কাশ্শাফ, ৩য় খন্ড, পৃ: ৬৮)

    ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত হয়েছে, আয়াতে মাওয়াদ্দাত রাসূলের নিকটাত্মীয়দের প্রতি ভালবাসর আয়াত নাযিল হয়েছে।

    তাফসীরে মারেফুল কুরআন সউদী আরবের পৃষ্টপোসকতায় মুহাম্মদ শাফী (রহঃ) : পৃ: ১২১৫ 

    >নবী পরিবারের সন্মান ও মহব্বতঃ

    অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাঃ)- এর সাথে যার যত নিকট সম্পর্ক আছে, তার সম্মান ও মহব্বত এবং সে অনুপাতে জরুরী হওয়া অপরিহার্য। ঔরসজাত সন্তান সর্বাধিক নিকটবর্তী আত্মীয়। তাই তাদের মাওয়াদ্দাত বা মহাব্বত নিশ্চিতরূপে ঈমানের অঙ্গ। >>> তাদের মহাব্বত ও সম্মান সৌভাগ্য ও সওযাবের কারণ। অনেকেই এ ব্যাপারে শৈথিল্যের পরিচয় দিতে শুরু করলে হযরত ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) কয়েক লাইন কবিতায় তাদের তীব্র নিন্দা করেছেন। তাঁর কবিতা নিম্নে উদ্ধৃত হল। এতে প্রকৃতপক্ষে তিনি অধিকাংশ আলেমের মতাদর্শই তুলে ধরেছেন—

     ঃ হে আশারোহী, তুমি মুহাস্সাব উপত্যকার অদুরে থাম। প্রত্যুষে যখন হাজীদের স্রোত সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গের ন্যায় মীনার দিকে রওয়ানা হবে, তখন সেখানকার প্রত্যেক বাসিন্দা ও পথচারীকে ডেকে তুমি ঘোষণা কর, যদি কেবল মুহাম্মদ (সাঃ)-এর বংশধরের প্রতি মহব্বত রাখলেই মানুষ রাফেযী হয়ে যায়, তবে বিশ্বজগতের সমস্ত জিন ও মানব সাক্ষী থাকুক, আমিও রাফেযী।

    হে আহলে কিতাবগণ। তোমাদের কাছে আমার রাসুল আগমন করেছেন। কিতাবের যেসব বিষয় তোমরা গোপন করতে, তিনি তার মধ্য থেকে অনেক বিষয় প্রকাশ করেন এবং অনেক বিষয় মার্জনা করেন। তোমাদের কাছে একটি উজ্জ্বল জোতি (নুর) এসেছে এবং একটি সমুজ্জ্বল(নুর) গ্রন্থ (কোরআন)। সুরা মায়েদাহ=১৫)

    গাদীরে খুমে রসুল (সা:) বলেনঃ “নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মাঝে দুটি ভারী জিনিস রেখে যাচ্ছি একটি হলো আল্লহর কিতাব [কুরআন] {যেটি আল্লাহর নূর} ও অন্যটি আমার রক্তজ বংশধর- আমার পরিবার [আহলে বায়াত] {এটিও আল্লাহর নূর}। যদি তোমরা এ দুটিকে শক্ত করে আকড়ে থাকো তাহলে কোন দিনও পথভ্রষ্ট হবে না, কারণ এ দুটি কখনোই পরস্পর বিচ্ছিন্ন  হবে না যতক্ষন পর্যন্ত না তারা আমার কাছে হাউজে [কাউসারে] উপস্থিত হয়। আল-বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ, খন্ড-৫, পৃষ্ঠা- ৩৪৪।

    হে বণী আদম !যদি তোমাদের কাছে তোমাদের মধ্য থেকে রসুলগণ এসে যখন আমার আয়াত সমূহ তোমাদের শুনায় ,তখন যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে এবং নিজেকে সংশোধন করবে ,তাদের কোন ভয় নাই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। (সুরা আরাফ=৩৫)

    যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে এবং সে সম্বন্ধে অহংকার করেছে তারাই দোযখের অধিবাসী ।সেখানে তারা অনন্তকাল থাকবে। সুরা আরাফ=৩৬)

    আর আমি তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকি ,নিশ্চয়ই আমার কৌশল অতিশয় দৃঢ়। (সুরা আরাফ=১৮৩)

    আর অবশ্যই আমি তাদের কাছে পৌঁছায়েছি এমন এক কোরআন যা আমি পূর্ণজ্ঞানে বিস্তারিত বর্ণনা করেছি এবং যা হেদায়েত ও রহমত তাদের জন্য যারা ঈমান আনে। সুরা আরাফ=৫২)

    তার চেয়ে বড় জালিম কে ,যে আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে অথবা তার আয়াত সমূহকে অস্বীকার করে ? (সুরা আরাফ=৩৭)

    বরং তারা অস্বীকার করে সে বিষয়ে যার জ্ঞান তারা আয়ত্ব করতে পারেনি এবং এখনও এর পরিণাম তাদের কাছে আসেনি। এভাবে তাদের পূর্ববর্তীরাও অস্বীকার করেছিল ।অতএব ,লক্ষ্য কর ,কেমন হয়েছিল জালিমদের পরিণাম। (সুরা ইউনুস=৩৯)

    আর যারা অস্বীকার করে আমার আয়াতসমূহকে ,আমি তাদের এমন ভাবে ক্রমাম্বয়ে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাই যে ,তারা তা টেরও পায় না। (সুরা আরাফ=১৮২) 

    তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তিনি তোমাদের অনেক গোনাহ ক্ষমা করে দেন। (সুরা শুরা=৩০)

    এবং স্বল্প মূল্যে আমার আয়াত বিক্রি কর না। এবং আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন যা সে অনুযায়ী বিচার-ফয়সালা করে না, বস্তুত তারাই হল কাফের। (সুরা মায়েদাহ =৪৪)

    রfসুলের অনুসরণ হলো কোরআনের অনুসরণ এবং রfসুলের আনুগত্য হলো কোরআনের আনুগত্য এর প্রমাণ ।

    >>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>

    রfসুলের আনুগত্যঃ>আমি তো রাসুল শুধু এ উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেছি যে ,আল্লাহর কোরআনের বিধান অনুযায়ী তার আনুগত্য করা হবে । (সুরা নিসা=৬৪)

    তাহলে যারা নিজেদেরকে রাসুল দাবি করছে তাদেরকে জিব্রাইল মারফত নতুন একটি সহিফা বা কিতাব এনে তা পাঠ করতে বলা হোক বা আমল করতে ও মানতে বলা হোক। অথচ তারা কোরআনের আয়াত গুলো নিয়েই আলোচনা করেছে। কিংবা কোরানের শরিয়াতের উলঙ্ঘন করে চলেছে।। 

    যারা আল্লাহর যে কোরআন নাযিল করেছেন ,সে অনুযায়ী বিধান দেয় না তারাই কাফের । (সুরা মায়েদা=৪৪) 

    তবে কি তারা জাহেলী আমলের বিধান কামনা করে ?কে উত্তম আল্লাহর চাইতে বিধান প্রদানে দৃঢ় বিশ্বাসী লোকদের জন্য ? (সুরা মায়েদা=৫০) এসব নামধারী রাসুলগন জাহেলী বিধান কামনায় ও নিজের নফসের চাহিদাতেই ডুবে আছে। 

    রfসুলের অনুসরণঃ >তাড়াতাড়ি শিখে নেয়ার জন্য আপনি দ্রুত ওহী পাঠ করবেন না। এর সংরক্ষন ও পাঠ আমারই দায়িত্ব । অতঃপর আমি যখন আয়াত পাঠকরি তখন আপনি সেই পাঠের অনুসরণ করন । (সুরা ক্বিয়ামাহ=১৬থেকে১৯)

    নামধারী রাসুলগন কখনও কি ওহীর প্রত্যাদেশ নিয়ে এসেছেন।।?? নাকি শুধু মুখে মুখেই। আপনাকে বড় বলে বড় সেই নয় লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়।

    আমার প্রতি যে আয়াত নাযিল করা হয় আমি কেবল তারই অনুসরণ করি । (সুরা আহকাফ=৯)

    আমি তো শুধু তারই অনুসরণ করি যা আমার প্রতি আমার রবের তরফ থেকে প্রত্যাদেশ করা হয়েছে । এ কোরআন তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে নিদর্শন এবং হেদায়েত ও রহমত তাদের জন্য যারা ঈমান আনে । (সুরা আরাফ=২০৩)

    তোমরা অনুসরণ কর ,যে কোরআন তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে নাযিল করা হয়েছে ,কোরআনকে ছেড়ে অন্য কোন বন্ধুদের অনুসরণ করো না ।তোমরা খুব সামান্যই উপদেশ গ্রহণ কর ! (সুরা আরাফ=৩)

    আমি তো শুধু সে আয়াত অনুসরণ করি ,যা আমার প্রতি নাযিল করা হয় । আপনি বলে দিন ,অন্ধ ও চক্ষুস্মান ব্যক্তি কি সমান হতে পারে ? অতএব তোমরা কি ভেবে দেখো না ? (সুরা আনআম=৫০)

    অতএব আপনি কোরআনের উপর অটল থাকুল ,যা আপনার প্রতি ওহীর মাধ্যমে নাযিল করা হয়েছে। নিশ্চয় আপনি রয়েছেন সরল-সঠিক পথে ।

    আর এ কোরআন আপনার ও আপনার জাতির জন্য নিঃসন্দেহে অত্যন্ত সম্মানের বস্তু। আর আপনাদের সবাইকে অবশ্যই প্রশ্ন করা হবে । (সুরা যুখরুফ=৪৩,৪৪)

    আর কোরআনই আমার সরল সঠিক পথ । অতএব ,তোমরা এ পথেই চল এবং অন্যান্য পথে চল না । চললে সে সব পথ তোমাদের আল্লাহর পথ কোরআন থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে । তিনি তোমাদের এ নির্দেশ দিয়েছেন ,যেন তোমরা সাবধান হও । (সুরা আনআম=১৫৩)

    সুতরাং আপনি কি শুনাতে পারবেন বধির কে অথবা আপনি কি পথে আনতে পারবেন অন্ধকে এবং তাকে যে প্রকাশ্যে বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে ? (সুরা যুখরুফ=৪০)

    অথচ নামধারী রাসুলগণ সামান্য সন্মানিত ব্যাক্তি হওয়ারও যোগ্য নয়।। যা মানুষের মুখে মুখে রটে আছে।।

    আপনাদেরকে তাকে অর্থাৎ ••• একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে চেনার উপায় ••• বলে দিচ্ছি।

    পবিত্র ইমামগণ (আ.) বলেছেন, একজন সম্মানিত ব্যক্তি চেনার উপায় হলো, “সম্মানিত ব্যক্তিগণ শ্রদ্ধা পেলে বিনয়ী হন, কিন্তু একজন নীচ ব্যক্তি থেকে জোর করে ভদ্রতা পেতে হয়। আপনি যদি জানতে চান একজন মানুষ সম্মানিত কি না, তাহলে তার সাথে কিছু সময় উদার আচরণ করার মাধ্যমে তাকে বিনীত করার চেষ্টা করুন। এতে যদি ইতিবাচক ফল দেখা যায়, তবে তিনি একজন সম্মানিত ব্যক্তি; অন্যথায়, সে একজন নীচু স্বভাবের ব্যক্তি যাকে এড়িয়ে চলা উচিত।”

    Leave a Comment

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.