উত্তর: নির্দিষ্ট কিছু দিনে ঈদ বা আনন্দ অনুষ্ঠান রয়েছে যখন রোজাটি হারাম হয়ে যায়; এইগুলো:
১) শাওয়াল (ঈদুল ফিতর) মাসের প্রথম দিন রোজা রাখা।
২) যুলহজ্জ (ঈদুল-আঝা) মাসের দশম দিন রোজা রাখা।
৩) যুলহজ্জের একাদশ ও দ্বাদশ রোজা রোযা রাখা, তীর্থযাত্রী বা অ-তীর্থযাত্রী, যারা তখন মিনায় উপস্থিত থাকেন
৪) রোজা রাখার প্রয়োজন নেই যেমন অসুস্থ, স্ত্রীলোকটি ঋতুস্রাবকালীন বা প্রসবের সময় (প্রসবের পরে) বা সীমাবদ্ধ অপরাধের জন্য উপবাস করা (যেমন রোযা রাখতে সক্ষম হয়েছে বলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা আর একজন মুসলিম) এবং একজনের রোযা ব্যতীত যদি এ জাতীয় ব্যক্তি প্রিয় ও হালাল পার্থিব ইচ্ছা পূরণ করতে চায় এবং মদীনায় নবীর মাজার জিয়ারত করতে যায়।
৫)) আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশা নিয়ে নীরবতার রোজা। পরে যাকারিযা (আ।) এবং যীশুর মরিয়ম মা মরিয়ম (আ।) – ওনাদের উপর মহাপরাক্রমশালী কর্তৃক অনুমতি ও অনুমতি পাওয়ার পরে এই পবিত্র রোজা কয়েকজন পবিত্র পুরুষ ও মহিলাকে দেওয়া হয়েছিল।
৬)) সন্দেহের উপবাস: যদি কেউ নিশ্চিত না হয় যে সে রোজা রাখছে সেদিন শাবান মাসের অংশ বা রামধন মাসের অংশ কিনা।
৭) যে স্ত্রীর ইচ্ছাকৃতভাবে তার স্বামীর রোজা না করা তার বিরুদ্ধাচরণ করে।
- দ্রষ্টব্য: মহিলার স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে প্রস্তাবিত রোযা রাখা উচিত নয় এবং যদি সে তার রোজার প্রতি আপত্তি জানায় তবে তা করা তার জন্য নিষিদ্ধ।
৮) আশুরার রোযা: এদিন এর ব্যাপারে ইমাম জাফর সাদিক (আ:) বলেছেন: আশুরার রোযা তারাই রাখে যারা ইমাম হোসানের হত্যার সাথে জড়িত ছিল বা সন্তুষ্ট ও খুশি বা আনন্দিত আছে। আর তাই তারা রোজা বা আনন্দ করে।
ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে মাহের রমজানের শেষে ঈদুল ফিতরের দিন তথা শাওয়াল মাসের প্রথম দিন রোজা রাখা হারাম। কিন্তু কেন ইসলামে এমন বিধান রাখা হয়েছে, নিচে আমরা এ বিষয়ের উত্তরটি পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরছি-
পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন রোজা রাখা ঈদুল আযহার দিন রোজা রাখার ন্যায় হারাম বা অবৈধ। অবশ্য ইসলামের এ বিধানটিও অন্যান্য বিধানের মত; অর্থাৎ এর মূল কারণ একমাত্র আল্লাহ অবহিত। তিনিই এ বিধানের নেপথ্য কারণ জানেন। তবে যে বিষয়টি আমাদের নিকট সুস্পষ্ট তা হচ্ছে ইসলামের প্রত্যেকটি বিধানের অন্তর্নিহিত কারণ রয়েছে এবং আল্লাহ তার বিশেষ হিকমতের মাধ্যমে উক্ত কারণের কিছু অংশ আমাদের নিকট প্রকাশ করেন।
ঈদুল ফিতরের দিন রোজা হারাম হওয়ার সম্ভব্য কারণ হচ্ছে-
মানুষ যাতে কোন কিছুতে বাড়াবাড়ি না করে। কেননা রমজান মাসে এক মাস সিয়াম সাধনার পর রোজা পালনকারীদের জন্য শাওয়াল মাসের প্রথম দিন হচ্ছে আনন্দ ও উৎসবের দিন। কিন্তু এ দিনটিও যদি রোজা পালন করা হয় তাহলে তারা আনন্দ অনুভব করতে পারবে না। ইসলামে কোন বিষয়ে বাড়াবাড়ি ও কড়াকড়ির স্থান নেই। রোজা ও নামাযের ক্ষেত্রেও অনুরূপ বিধান রয়েছে। তাছাড়া রমজান মাস শেষে শাওয়াল মাসের শুরুতেও যদি রোজা রাখা হয়, তাহলে রমজান মাস ও শাওয়াল মাসের মধ্যে পার্থক্য সাধারণ মানুষের জন্য বোধগম্য হবে না।