বড়পীর সাহেব তার লিখিত “সিররুল আসরার” কিতাবের ১৭৫ পৃষ্টায়, কেরামত-১৩ অধ্যায় নিজের মুখে নিজেরই সুউচ্চ আধ্যাত্নিক অবস্থান ও কারামতির বর্ণনা করে বলেছেন—
“এক রাতে নিদ্রাবস্থায় আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আকাশ হতে কয়েকজন স্বর্গীয় দূত এসে আমাকে শূন্যে উড়িয়ে নিয়ে মদীনা শরীফে হযরত আয়েশা (রা)-এর নিকট রেখে তারা সকলে চলে গেল। হযরত আয়েশা (র) আমাকে অতিশয় স্নেহের সাথে আদর করে তার কোলে তুলে নিলেন। হযরত আয়েশা (রা) যখন সস্নেহে আমাকে বক্ষে ধারণ করলেন তখন তার স্তনযুগল হতে স্রোতস্বিনী ঝর্ণার ন্যায় দুগ্ধ বের হতে লাগল। আমি এই পবিত্র দুগ্ধ আকণ্ঠ পান করলাম। সেই সুধা পানে আমার প্রাণ শীতল হয়ে গেল এবং হৃদয়ে নিবিড় শান্তি অনুভব করলাম। দৈবশক্তি বলে আমি বলীয়ান হয়ে উঠলাম। আমার প্রতি লোমকূপ মারেফতের ইলমে পরিপূর্ণ হয়ে গেল।এমন সময় নবীয়ে দো-জাহান হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগমন করে হযরত আয়েশা (রা)-কে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা! ইনি আমাদেরই সন্তান, আমাদের চোখের মণি, দুনিয়া ও আখিরাতের জ্যোতি।”
মাজাল্লাহ! আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্নবাদী বিবেকের কাছে সবিনয়ে জিজ্ঞাসাঃ-নিজের মুখে নিজেরই সুউচ্চ আধ্যাত্নিক অবস্থান ও কারামতির বর্ণনাকারী কোন অলী কি আদৌ অলীআল্লাহ??
পীরানে পীর জিলানী সাহেবের নিজের মুখে নিজেরই সুউচ্চ আধ্যাত্নিক অবস্থান ও কারামতির বর্ণনা করতে অর্থ্যাৎ তার ভাষ্য অনুযায়ী দৈবশক্তি বলে তিনি বলীয়ান হয়ে লোমকূপ মারেফতের ইলমে পরিপূর্ণ করতে এতই নিলজ্জ হয়েছেন তার হাত থেকে নবী পত্নী ও রেহাই পাননি! তিনি নাকি স্বপ্নে উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা রাহ: দুধ পান করেছেন। হযরত আয়েশা ছিলেন নিঃসন্তান কিভাবে যে দুধ আসে সেটা বিবেচনা করে না! এটা কি করে সম্ভব উম্মুল মুমিনীন বেগানা পুরুষকে বুকের দুখ খাওনোর অনুমতি দিয়েছেন !?
আমার জানামতে, তাঁর নামে যতো কল্পকাহিনী রচনা করা হয়েছে ততো আর কারো নামেই হয় নি। তিনি ‘বড় পীর’ ও গ্বাওছূল্ আযম্ হিসেবে তথা সবচেয়ে বড় ওয়ালী-আল্লাহ্ হিসেবে পারিচিত তা স্রেফ প্রচারের ফল বৈ নয়, নচেৎ কি!?
বস্তুতঃ যারা মিথ্যা রচনা করে তাদের পক্ষে কখনোই এতো সব কিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে তা রচনা করা সম্ভবপর হয় না। তাছাড়া অপরাধ বিজ্ঞানের এ কথাটি হয়তো সঠিক যে, অপরাধী অপরাধ ধরা না পড়ার জন্য যতোই সতর্কতার আশ্রয় নিক না কেন, সে ধরা পড়ার মতো কোনো না কোনো ক্লু রেখে যাবেই। মিথ্যা রচয়িতাদের বেলায়ও এটি সত্য বলে মনে হয়। কারণ, মিথ্যা হচ্ছে সকল গুনাহর জননী।