লাইলাতুল ক্বদরের আমল সমূহ

লাইলাতুল ক্বদরের আমল সমূহ

শবে ক্বদর, আল্লাহ, ফেরেস্তা, আব্বাস কুম্মি, আল্লামা মাজলিসী, কুরআন, ফজর, গুনাহ, ইমাম হুসাইন, জওশানে কাবির

এস, এ, এ
লাইলাতুল ক্বদর এমন একটি রাত যা হাজার রাত অপেক্ষা উত্তম। এ রাতের জন্য যতটা ফজিলত নির্ধারণ করা হয়েছে তা অন্য কোন রাতের জন্য নির্ধারিত হয়নি। এ রাতে ফেরেস্তাগণ ও রুহ (শ্রেষ্ঠ ফেরেস্তা) মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নির্দেশক্রমে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন। আর যা কিছু প্রতিটি বান্দার জন্য নির্ধারিত হয়েছে তা ইমামের সম্মুখে উপস্থাপন করেন। পবিত্র এ রাতে বেশ কিছু আমল রয়েছে যা শেইখ আব্বাস কুম্মি রচিত মাফাতিহুল জিনান গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে।
মাফাতিহুল গ্রন্থে বর্ণিত আমলসমূহ নিম্নরূপ:

প্রথম : গোসল করা। (সূর্যাস্তের নিকটবর্তি সময়ে গোসল করা)

দ্বিতীয় : লাইলাতুল কদরের নিয়তে দুই রাকাত নামায পড়া (নিয়ত: শবে কদরের দুই রাকাত নামাজ পড়ছি কুরবাতান ইলাল্লাহ)। নামাযের নিয়ম হল; প্রতি রাকাতে সূরা হামদের পর ৭ বার সুরা ইখলাস পড়া এবং নামায শেষ হওয়ার পর ৭০ বার ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি’ পাঠ করা। একটি রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে যে, উক্ত আমলকারী ঐ ব্যক্তি তার স্থান হতে ওঠার পূর্বেই মহান আল্লাহ্ তাকে এবং তার পিতা-মাতাকে ক্ষমা করে দিবেন।

তৃতীয় : পবিত্র কুরআন শরিফ খুলে নিজের সামনে রেখে বলতে হবে :

 

اَللّهُمَّ اِنّی اَسئَلُکَ بِکِتابِکَ المُنزَلِ وَ ما فیهِ اسمُکَ الاَکبَرُ و اَسماؤُکَ الحُسنی وَ ما یُخافُ وَ یُرجی اَن تَجعَلَنی مِن عُتَقائِکَ مِنَ النّار.

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিকিতাবিকাল মুনযাল, ওয়া মা ফিহিসমুকাল আকবার, ওয়া আসমাউকাল হুসনা, ওয়া মা ইয়াখাফু ওয়া ইউরজা, আন ইয়াজআলানী মিন উতাকাইকা মিনান নার।

চতুর্থ : কোরআন শরিফ মাথায় রেখে বলতে হবে :

اَللّهمَّ بِحَقِّ هذاالقُرآنِ وَ بِحَقِّ مَن اَرسَلتَه بِه وَ بِحَقِ کُلِّ مومنٍ مَدَحتَهُ  فیهِ وَ بِحَقِّکَ عَلَیهِم فلا اَحَدَ اَعرَفُبِ بِحَقِّکَ مِنکَ.

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বিহাক্কি হাযাল কুরআন, ওয়া বিহাক্কি মান আরসালতাহু বিহি, ওয়া বিহাক্কি কুল্লি মু’মিনিন মাদাহতাহু ফিহি, ওয়া বিহাক্কিকা আলাইহিম, ফালা আহাদা আ’রাফু বিহাক্কিকা মিনকা।

পঞ্চম : অতঃপর বলতে হবে :
১০ বার : ((بِکَ یا الله))- বিকা ইয়া আল্লাহু
১০ বার : ((بِمُحَمَّدٍ))- বিমুহাম্মাদিন
১০ বার : ((بِعلیٍّ))- বিআলিয়্যিন
১০ বার : ((بِفاطِمَةَ))- বিফাতিমাহ
১০ বার : ((بِالحَسَنِ))- বিল হাসান
১০ বার : ((بِالحُسَین ِ))- বিল হুসাইন
১০ বার : ((بِعلیّ بنِ الحُسین))- বিআলী ইবনিল হুসাইন
১০ বার : ((بِمُحَمَّدِ بنِ عَلِیٍّ))- বিমুহাম্মাদ ইবনি আলী
১০ বার : ((بِجَعفَر بنِ مُحَمَّدٍ))- বিজাফার ইবনি মুহাম্মাদ
১০ বার : ((بِموُسی بنِ جَعفَر ٍ))- বিমুসা ইবনি জাফার
১০ বার : ((بِعلیِّ بنِ مُوسی))- বিআলী ইবনি মুসা
১০ বার : ((بِمُحَمَّدِ بنِ عَلِیٍّ))- বিমুহাম্মাদ ইবনি আলী
১০ বার : ((بِعَلِیِّ بنِ مُحَمَّدٍ))- বিআলী ইবনি মুহাম্মাদ
১০ বার : ((بِالحَسَنِ بنِ عَلِیٍّ))- বিল হাসান ইবনি আলী
১০ বার : ((بِالحُجَّةِ))- বিল হুজ্জাহ
অতঃপর দোয়া করা

পঞ্চম : যিয়ারতে ইমাম হুসাইন(আ.) পাঠ করা। রেওয়ায়েতে এসেছে যে, শবে কদরে আহবানকারী সপ্তম আসমান হতে আহবান জানায় যে, মহান আল্লাহ্ ঐ সকল ব্যক্তিদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন যারা ইমাম হুসাইন(আ.) এর মাজার যিয়ারতের জন্য এসেছে।

ষষ্ঠ : রাত্র জাগরণ। রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে যে, যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে জাগ্রত থাকে, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয়; যদিও তার গুনাহ আকাশের নক্ষত্রের সমপরিমাণ এবং পাহাড়সমূহের ন্যায় ভারী হয়….।

সপ্তম : পবিত্র এ রাতে একশত রাকাত নামায আদায় করার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। নামাযের নিয়ম হচ্ছে; প্রতি রাকাতে সূরা হামদের পর ১০ বার সূরা তওহীদ পাঠ করা।

 

অষ্টম: দোয়া-এ-জওশান কাবির তেলাওয়াত করা উত্তম।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *