‘আর সে হচ্ছে কিয়ামতের একটি নিদর্শন।’ (সূরা যুখরূফ : ৬১)
আহলে সুন্নাতের নিকট সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য হাদীস সংকলন ছয়টি যা ‘সিহাহ্ সিত্তাহ্’ নামে পরিচিত। হাদীসের প্রামাণ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করার জন্য আহলে সুন্নাতের হাদীস সংকলকগণ যে সব মূলনীতি প্রণয়ন করেছেন এ ছ’টি সংকলন সে সব মূলনীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এ ছ’টি গ্রন্থ হচ্ছে : সহীহ্ আল বুখারী, সহীহ্ আল মুসলিম, সহীহ্ আত্ তিরমিযী, সুনানে ইবনে মাজাহ্, সুনানে আবু দাউদ ও সহীহ্ আন্ নাসাঈ। ইমাম মাহ্দী (আ.) সম্পর্কে সিহাহ্ সিত্তাহ্ ও আহলে সুন্নাতের অন্যান্য সূত্রে অসংখ্য হাদীস রয়েছে। এখানে উদ্ধৃত নিম্নোক্ত হাদীস ও বর্ণনাগুলো এমন যেগুলোর সত্যতা ও প্রামাণ্যতার ব্যাপারে আহলে সুন্নাতের হাদীস বিশারদগণ একমত।
১. মহানবী (সা.) বলেছেন : ‘এমনকি সমগ্র বিশ্বের আয়ু যদি শেষ হয়ে গিয়ে থাকে এবং কিয়ামত হতে একদিনও অবশিষ্ট থাকে তাহলেও মহান আল্লাহ্ ঐ দিবসকে এতটা দীর্ঘায়িত করবেন যাতে তিনি ঐ দিবসেই আমার আহলে বাইতের মধ্য থেকে এক ব্যক্তির শাসনকর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করে দিতে পারেন যাকে আমার নামেই ডাকা হবে। পৃথিবী অন্যায়-অত্যাচারে ভরে যাওয়ার পর সে তা শান্তি ও ন্যায়ে পূর্ণ করে দেবে।’- তিরমিযী ২য় খণ্ড, পৃ. ৮৬, ৯ম খণ্ড, পৃ. ৭৪-৭৫; আবু দাউদ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৭; মুসনাদে আহমদ ইবনে হামবল, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৭৬, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৬৩; মুস্তাদরাকুস্ সাহীহাইন (হাকেম), ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৫৫৭; আল মাজমা (তাবরানী), পৃ. ২১৭; তাহযীবুস্ সাবিত (ইবনে হাজার আসকালানী), ৯ম খণ্ড, পৃ. ১৪৪; আস সাওয়ায়িকুল মুহ্রিকাহ্ (ইবনে হাজার হাইসামী), ১১শ অধ্যায়, উপাধ্যায় ১, পৃ. ২৪৯; কানযুল উম্মাল, ৭ম খণ্ড, পৃ. ১৮৬; ইকদুদ দুরার ফী আখবারিল মাহ্দী আল মুনতাযার, ১২শ খণ্ড, ১ম অধ্যায়; আল বায়ান ফী আখবারি সাহিবিয যামান (গাঞ্জী শাফিয়ী), ১২শ অধ্যায়; ফাতহুল বারী (ইবনে হাজার আসকালানী), ৭ম খণ্ড, পৃ. ৩০৫; আল তাযকিরাহ্ (কুরতুবী), পৃ. ৬১৭; আল হাভী (সুয়ূতী), ২য় খণ্ড, পৃ. ১৬৫-১৬৬; শারহুল মাওয়াহিবুল লাদুন্নীয়াহ্ (যুরকানী), ৫ম খণ্ড, পৃ. ৩৪৮; ফাতহুল মুগীস (সাখাভী), ৩য় খণ্ড, পৃ. ৪১; আরজাহুল মাতালিব (উবায়দুল্লাহ্ হিন্দী), পৃ. ৩৮০; আল মুকাদ্দিমাহ্ (ইবনে খালদুন), পৃ. ২৬৬; জামিউস সাগীর (সুয়ূতী), পৃ. ১৬০; আল উরফুল ওয়ারদী (সুয়ূতী), পৃ. ২।
আশ শাফিয়ী (ওফাত ৩৬৩/৯৭৪) বলেছেন যে, এ হাদীস বিপুল সংখ্যক সূত্রে বর্ণিত এবং বহু সংখ্যক বর্ণনাকারী কর্তৃক তা মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র বর্ণিত ও প্রচারিত হয়েছে। এছাড়া হাদীসটি ইবনে হিববান, আবু না’ঈম, ইবনে আসাকির প্রমুখ কর্তৃক লিখিত গ্রন্থাদিতেও উদ্ধৃত হয়েছে।
২. রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন : ‘মাহ্দী ফাতিমার বংশধর।’ (ইবনে মাজাহ্, ২য় খণ্ড, হাদীস নং ৪০৮৬; নাসাঈ; বাইহাকী; আস সাওয়ায়িকুল মুহ্রিকাহ্, অধ্যায় ১১, উপাধ্যায় ১, পৃ. ২৪৯ এর বর্ণনানুসারে অন্যান্য হাদীস সংকলকগণ)।
৩. মহানবী (সা.) বলেছেন : ‘আমরা আবদুল মুত্তালিবের বংশধরগণ বেহেশতবাসীদের নেতা : স্বয়ং আমি, হামযাহ্, আলী, জাফর, হাসান, হুসাইন এবং মাহ্দী।’ (ইবনে মাজাহ্, ২য় খণ্ড, হাদীস নং ৪০৮৭; মুস্তাদরাকে হাকেম (আনাস ইবনে মালিক-এর সূত্রে বর্ণিত); দাইলামী; আস সাওয়ায়িকুল মুহরিকাহ্, অধ্যায় ১১, উপাধ্যায় ১, পৃ. ২৪৫)
৪. মহানবী (সা.) বলেছেন : ‘আমার ও আমার আহলে বাইতের সদস্যদের জন্য আল্লাহ্ পারলৌকিক জীবনকে ইহলৌকিক জীবনের ওপর অগ্রাধিকার দিয়েছেন ও মনোনীত করেছেন। আমার (ওফাতের) পরে আমার আহলে বাইতের সদস্যরা অনেক কষ্ট ভোগ করবে এবং তাদেরকে ঘর-বাড়ি থেকে বলপূর্বক উচ্ছেদ করা হবে। তখন প্রাচ্য থেকে একদল লোক কালো পতাকাসহ আগমন করবে এবং তাদেরকে কিছু ভাল জিনিস (অধিকার) প্রদান করার জন্য তারা আবেদন করবে। কিন্তু তারা প্রত্যাখ্যাত হবে অর্থাৎ তাদেরকে সেই অধিকার দেয়া হবে না। এ কারণে তারা যুদ্ধ শুরু করবে। সে যুদ্ধে তারা বিজয়ী হবে এবং তারা যা প্রথমে চেয়েছিল তা-ই তাদেরকে দেয়া হবে। কিন্তু তারা তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করবে যতক্ষণ না আমার আহলে বাইত থেকে এক ব্যক্তি আবির্ভূত হবে এবং যেভাবে পৃথিবী অন্যায়-অবিচারে পূর্ণ হয়ে যাবে ঠিক সেভাবে তা ন্যায় ও সুবিচার দিয়ে পূর্ণ করে দেবে। তাই যে ব্যক্তি ঐ যুগ প্রত্যক্ষ করবে তার উচিত হবে বরফের ওপর দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাদের সাথে মিলিত হওয়া।’ (ইবনে মাজাহ্, ২য় খণ্ড, হাদীস নং ৪০৮২; তারিখে তাবারী; আস সাওয়ায়িকুল মুহ্রিকাহ্, অধ্যায় ১১, উপাধ্যায় ১, পৃ. ২৫০-২৫১)
৫. রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন : ‘মাহ্দী আমার আহলে বাইত থেকে আবির্ভূত হয়ে একটি বিপস্নব ঘটাবে এবং পৃথিবী অন্যায়-অবিচার ও অত্যাচারে পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর তাকে ন্যায় ও সাম্য দ্বারা পূর্ণ করে দেবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৮৪; জামিউস সাগীর, পৃ. ২ ও ১৬০; আল উরফুল ওয়ার্দী, পৃ. ২; কানযুল উম্মাল, ৭ম খণ্ড, পৃ. ১৮৬; ইকদুদ দুরার, ১২শ খণ্ড, অধ্যায় ১; আল বায়ান ফী আখবারি সাহিবিয যামান, ১২শ অধ্যায়; আল ফুসুসুল মুহিম্মাহ্, ১২শ অধ্যায়; আরজাহুল মাতালিব, পৃ. ৩৮০; আল মুকাদ্দিমাহ্, পৃ. ২৬৬)
৬. মহানবী (সা.) বলেছেন : ‘আল্লাহ্ শেষ বিচার দিবসের আগে, এমনকি এ পৃথিবীর আয়ুষ্কাল যদি একদিনও অবশিষ্ট থাকে, আমার আহলে বাইতের মধ্য থেকে মাহ্দীকে অন্তর্ধান থেকে আবির্ভূত করবেন। সে এ পৃথিবীতে ন্যায় ও সুবিচারের প্রসার ঘটাবে এবং সব ধরনের অন্যায়, অত্যাচার ও অবিচারের মূলোৎপাটন করবে।’ (মুসনাদে আহ্মাদ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৯৯)
সুনানে আবু দাউদেও উপরিউক্ত হাদীসের অনুরূপ একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। (ইংরেজি অনুবাদ, অধ্যায় ৩৬, হাদীস নং ৪২৭০)
৭. জাবির ইবনে আবদুল্লাহ্ আল আনসারী (রা.) বলেছেন : ‘আমি রাসূলুল্লাহ্কে বলতে শুনেছি : আমার উম্মাহ্ একদল ব্যক্তি শেষ বিচার দিবসের কাছাকাছি সময় পর্যন্ত সত্যের জন্য যুদ্ধ করতে থাকবে। তখন ঈসা ইবনে মারইয়াম অবতরণ করবেন এবং তাদের নেতা (মাহ্দী) তাঁকে নামায পড়ানোর জন্য অনুরোধ করবে; কিন্তু ঈসা অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে বলবেন : না, আপনাদেরকে মহান আল্লাহ্ অন্যদের (সমগ্র মানব জাতির) জন্য নেতা মনোনীত করেছেন।’ (মুসলিম, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৯৩; মুসনাদে আহমাদ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৪৫ ও ৩৮৪; আস সাওয়ায়িকুল মুহ্রিকাহ্, অধ্যায় ১১, উপাধ্যায় ১, পৃ. ২৫১; সুয়ূতী প্রণীত নুযূল ঈসা ইবনে মারইয়াম আখিরায যামান)
৮. জাবির ইবনে আবদুল্লাহ্ বলেছেন : ‘রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন : আমার উম্মতের মধ্য থেকে একদল লোক ঈসা ইবনে মারইয়ামের অবতরণ পর্যন্ত সত্যের জন্য যুদ্ধ করতে থাকবে। ঈসা ইবনে মারইয়াম অবতরণ করলে তাদের ইমাম (মাহ্দী) তাঁকে নামায পড়ানোর জন্য অনুরোধ করবে। কিন্তু ঈসা বলবেন : এ কাজ করার জন্য আপনি অধিক হকদার। আর মহান আল্লাহ্ এ উম্মতে আপনাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে অন্যদের ওপর মর্যাদা দিয়েছেন।’ (মুসনাদে আবু ইয়ালা; সহীহ্ ইবনে হিববান)
মনীষীদের অভিমত
ইবনে আবী শাইবাহ্ (আহলে সুন্নাতের প্রসিদ্ধ হাদীসশাস্ত্রবিদ এবং সহীহ্ বুখারী ও সহীহ্ মুসলিমের ব্যাখ্যাকার) ইমাম মাহ্দী (আ.) সম্পর্কে অনেক হাদীস বর্ণনা করেছেন যাতে বলা হয়েছে যে, ইমাম- যিনি নামাযে হযরত ঈসা ইবনে মারইয়ামেরও ইমাম হবেন তিনি মাহ্দী (আ.)।
সুয়ূতী উল্লেখ করেছেন : ‘হযরত ঈসা (আ.) যখন অবতরণ করবেন তখন ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর পিছনে নামায পড়বেন- এতদসংক্রান্ত হাদীসসমূহ যে সব ব্যক্তি অস্বীকার করেছে তাদের মধ্য থেকে কতিপয় ব্যক্তিকে আমি সত্য অস্বীকার করে বলতে শুনেছি : এমন ব্যক্তি যিনি নবী নন, তাঁর পিছনে নামায পড়া অপেক্ষা ঈসা (আ.)-এর মর্যাদা উচ্চতর।’ কিন্তু পরম সত্যবাদী মহানবী (সা.)-এর নিকট থেকে বহু সংখ্যক সহীহ্ হাদীসের মাধ্যমে ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর পিছনে হযরত ঈসা ইবনে মারইয়ামের নামায পড়ার বিষয়টি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এটি একটি অদ্ভুত অভিমত।’
আল্লামা সুয়ূতী এ ব্যাপারে বেশ কিছু হাদীস বর্ণনা করেছেন। (নুযূলু ঈসা ইবনে মারইয়াম আখিরায যামান)
ইবনে হাজার আসকালানী বলেছেন : ‘মাহ্দী এ উম্মতেরই একজন। হযরত ঈসা অবতরণ করে তাঁর পিছনে নামায পড়বেন।’ (ফাতহুল বারী, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৩৬২)
আহলে সুন্নাতের আরেক বিখ্যাত আলেম ইবনে হাজার হাইসামীও একই কথা উল্লেখ করে বলেছেন : ‘আহলে বাইত আকাশের তারকারাজির ন্যায় যাদের মাধ্যমে আমরা সঠিক দিকে পরিচালিত হই এবং তারকারাজি যদি অস্ত যায় (ঢাকা পড়ে যায়) তাহলে আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরা কিয়ামত দিবসের নিদর্শনাদির মুখোমুখি হব। আর হাদীস অনুযায়ী এটি তখনই ঘটবে যখন ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর আগমন হবে, নবী হযরত ঈসা (আ.) তাঁর পিছনে নামায পড়বেন এবং দাজ্জালকে হত্যা করা হবে। আর তখনই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহ একের পর এক প্রকাশ পেতে থাকবে।’ (আস সাওয়ায়িকুল মুহ্রিকাহ্, অধ্যায় ১১, উপাধ্যায় ১, পৃ. ২৩৪)
আবুল হুসাইন আল আজীরীর উদ্ধৃতি দিয়ে ইবনে হাজার বলেছেন : ‘ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর আবির্ভাব ও উত্থান সম্পর্কিত রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর হাদীসসমূহ বিপুল সংখ্যক সনদসহ বর্ণিত হয়েছে এবং তা মুতাওয়াতির হওয়ার পর্যায়কেও ছাড়িয়ে গেছে। এসব হাদীসে মহানবী (সা.)-এর নিকট থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, মাহ্দী তাঁর (রাসূলুল্লাহ্) আহলে বাইতভুক্ত হবেন, তিনি পৃথিবীকে ন্যায় ও সুবিচার দিয়ে পূর্ণ করে দেবেন এবং হযরত ঈসা মসীহ্ (আ.)ও ঐ একই সময় আগমন করবেন। মাহ্দী ফিলিস্তিনে দাজ্জালকে হত্যা করার ব্যাপারে ঈসা (আ.)-কে সাহায্য করবেন। তিনি এ উম্মতের নেতৃত্ব দেবেন এবং হযরত ঈসা (আ.) তাঁর পিছনে নামায পড়বেন।’ (আস সাওয়ায়িকুল মুহ্রিকাহ্, অধ্যায় ১১, উপাধ্যায় ১, পৃ. ২৫৪)
ইবনে আলী আশ শাওকানী (ওফাত ১২৫০/১৮৩৪) ‘আত তাওদীহ ফী তাওয়াতুরি মা জাআ ফীল মুনতাযার্ ওয়াদ দাজ্জাল ওয়াল মাসীহ্’ (প্রতীক্ষিত ইমাম মাহ্দী, দাজ্জাল ও মসীহ্ সংক্রান্ত হাদীসসমূহ মুতাওয়াতির হওয়ার ব্যাপারে ব্যাখ্যা) নামক গ্রন্থে ইমাম মাহ্দী সম্পর্কে লিখেছেন : ‘মাহ্দী সংক্রান্ত হাদীসসমূহ বহু নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে এবং এ কারণেই এসব হাদীস নিঃসন্দেহে নির্ভরযোগ্য; কারণ, ফিকাহ্শাস্ত্রে ঐ সব হাদীসের ক্ষেত্রেও মুতাওয়াতির হওয়ার বৈশিষ্ট্য প্রযোজ্য যেগুলো ইমাম মাহ্দী সংক্রান্ত হাদীসসমূহের সংখ্যার চেয়েও অল্প সংখ্যায় বর্ণিত হয়েছে। মহানবীর সাহাবীদের প্রচুর বাণী আছে যেগুলোতে স্পষ্টভাবে ও বিশদভাবে মাহ্দী (আ.) সংক্রান্ত আলোচনা বিদ্যমান। এসব বাণী মাহনবী (সা.)-এর নিকট থেকে বর্ণিত হাদীসসমূহের সমপর্যায়ভুক্ত। কারণ, ইজতিহাদের মাধ্যমে এসব বাণী প্রতিষ্ঠিত করায় কোন সমস্যা নেই।’ লেখক ‘আল ফাতহুর রাববানী’ নামক তাঁর অপর এক গ্রন্থেও একই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। (এতদসংক্রান্ত বিষয়ে দেখুন মাওযূআতুল ইমাম আল মাহ্দী, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩৯১-৩৯২, ৪১৩-৪১৪ ও ৪৩৪ এবং তুহাফুল আহ্ওয়াযী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৪৮৫)
আস সাবান তাঁর ইসআফুর রাগিবীন গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন : ‘ইমাম মাহ্দীর আবির্ভাব সংক্রান্ত হাদীসসমূহ যে মহানবী (সা.) কর্তৃক বর্ণিত তা বোঝা যায়। তিনি (মাহ্দী) মহানবীর আহলে বাইতের সদস্য এবং তিনি পৃথিবীকে ন্যায় ও সুবিচার দিয়ে পূর্ণ করে দেবেন।’
সুয়ূতী তাঁর সাবাইকুয যাহাব গ্রন্থে বলেছেন : ‘আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেন যে, মাহ্দী শেষ যুগে আবির্ভূত হয়ে সমগ্র বিশ্বকে ন্যায় ও সুবিচার দিয়ে পূর্ণ করে দেবেন। তাঁর আবির্ভাব সংক্রান্ত হাদীস বিপুল সংখ্যক।’
হাফেয আবুল হাসান সিজিস্তানী (ওফাত ৩৬৩ হি./ ৯৭৪ খ্রি.) বলেছেন : ‘মহানবী (সা.)-এর নিকট থেকে ইমাম মাহ্দী (আ.) সংক্রান্ত হাদীসসমূহ বিপুল সংখ্যক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। মাহ্দী (আ.) মহানবী (সা.)-এর আহলে বাইতভুক্ত হবেন এবং সমগ্র বিশ্বকে ন্যায় ও সুবিচার দিয়ে পূর্ণ করে দেবেন।’
পরবর্তী যেসব খ্যাতনামা আলেম এ বক্তব্য মেনে নিয়েছেন তাঁদের মধ্যে আছেন ইবনে হাজার আসকালানী (তাহ্যীবুত তাহ্যীব, ৯ম খণ্ড, পৃ. ১৪৪, ফাতহুল বারী, ৭ম খণ্ড, পৃ. ৩০৫), কুরতুবী (আত তাযকিরাহ্, পৃ. ৬১৭), সুয়ূতী (আল হাভী, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৬৫-১৬৬), মুত্তাকী হিন্দী (আল বুরহান ফী আলামাতি মাহ্দীয়ে আখিরিয যামান, পৃ. ১৭৫-১৭৬), ইবনে হাজার হাইসামী (আস সাওয়ায়িকুল মুহ্রিকাহ্, অধ্যায় ১১, উপাধ্যায় ১, পৃ. ২৪৯), যুরকানী (শারহুল মাওয়াহিবুল লাদুন্নীয়াহ্, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৩৪৮), সাখাভী (ফাতহুল মুগীস, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৪১)
দু’জন বিখ্যাত শাফেয়ী আলেম আল্লামা গাঞ্জী তাঁর প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘আল বায়ান’-এ এবং শাবলানজী তাঁর গ্রন্থ ‘নুরুল আবসার’-এ ‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি তাঁর রাসূলকে হেদায়াত ও সত্য দীনসহ প্রেরণ করেছেন যাতে তিনি তা সকল ধর্মের ওপর বিজয়ী করে দেন’- কুরআন মাজীদের এ আয়াতের ব্যাপারে সাঈদ ইবনে জুবাইর থেকে বর্ণনা করেছেন যে, মহানবী (সা.)-এর প্রতি মহান আল্লাহ্র এ প্রতিশ্রুতি আল মাহ্দীর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে যিনি হযরত ফাতিমার বংশধর।
ইবনে তাইমীয়াহ্ (ওফাত ৭২৮ হি./১৩২৮ খ্রি.) তাঁর গ্রন্থ ‘মিনহাজুস সুন্নাহ্’য় (৪র্থ খণ্ড, পৃ. ২১১-২১২) লিখেছেন যে, ইমাম মাহ্দী সংক্রান্ত হাদীসসমূহ অবশ্যই নির্ভরযোগ্য। আর তাঁর শিষ্য যাহাবী তাঁর শিক্ষকের এ গ্রন্থের সার সংক্ষেপে এ বিষয়টি স্বীকার করেছেন। (মুখতাসার মিনহাজুস সুন্নাহ্, পৃ. ৫৩৩-৫৩৪)
রাবেতায়ে আলমে ইসলামী কর্তৃক ১১ অক্টোবর ১৯৭৬ তারিখে প্রদত্ত এক ফতোয়ায় বলা হয়েছে যে, ২০ জনেরও অধিক সাহাবী ইমাম মাহ্দী (আ.) সংক্রান্ত এসব হাদীস বর্ণনা করেছেন। এছাড়া যে হাদীসশাস্ত্রবিদগণ এসব হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং যাঁরা ইমাম মাহ্দীর ওপর বই-পুস্তক লিখেছেন তাঁদের একটি তালিকাও এ ফতোয়ার সাথে প্রদান করা হয়েছে। এ ফতোয়ায় বলা হয়েছে : হাদীসের হাফেজ এবং হাদীসশাস্ত্র বিশারদগণ প্রত্যয়ন করেছেন যে, ইমাম মাহ্দী সংক্রান্ত হাদীসসমূহের মধ্যে অনেক সহীহ এবং হাসান হাদীস বিদ্যমান। এর অধিকাংশ হাদীসই বিপুল সংখ্যক সূত্রে বর্ণিত (অর্থাৎ মুতাওয়াতির বা অকাট্য)। তাঁরা আরও প্রত্যয়ন করেছেন যে, মাহ্দীর আগমনে বিশ্বাস স্থাপন ফরয এবং এটি হচ্ছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকীদার অন্যতম। সুন্নী মাজহাবের কেবল অজ্ঞ ব্যক্তিরা ও বিদআতপন্থীরা মাহ্দী সংক্রান্ত আকীদা অস্বীকার করেছেন। (এ ফতোয়ার পূর্ণ পাঠের জন্য আল বায়ান গ্রন্থের লেখক আল গাঞ্জী আশ শাফেয়ীর ভূমিকা দেখুন, বৈরুত ১৩৯৯ হি./ ১৯৭৯ খ্রি., পৃ. ৭৬-৭৯)
আহলে সুন্নাতের বিশিষ্ট আলেম শেখ খাজা মুহাম্মদ পার্সা নাকশবন্দীর বক্তব্য : ‘আবু মুহাম্মাদ হাসান আসকারী (আ.) আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত। তিনি ৬ রবিউল আওয়াল ২৬০ হি. শুক্রবার ইন্তেকাল করেন এবং তাঁকে তাঁর পিতার সমাধির কাছে সমাহিত করা হয়। তিনি তাঁর পিতার ইন্তেকালের পর ৬ বছর জীবিত ছিলেন এবং (মৃত্যুকালে) কেবল এক পুত্রসন্তান রেখে যান যিনি হচ্ছেন আবুল কাসেম মুহাম্মাদ (আ.)। তিনিই প্রতীক্ষিত ত্রাণকর্তা। প্রতীক্ষিত ত্রাণকর্তা ২৫৫ হিজরির ১৫ শাবান জন্মগ্রহণ করেন; তাঁর মায়ের নাম ছিল নারজিস (রা.)। যাখন তাঁর বয়স ৫ বছর তখন তাঁর পিতা ইমাম হাসান আসকারী (আ.) ইন্তেকাল করেন।’
শেখ ওয়াহাব ইবনে আহমাদ ইবনে আলীর বক্তব্য : ‘কিয়ামতের শর্তাবলীর অন্যতম ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর পুনরাবির্ভাব, দাজ্জালের আবির্ভাব, আকস্মিক নতুন নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব, পশ্চিম দিক হতে সূর্যোদয়, কুরআন উধাও হয়ে যাওয়া, ইয়াজুজ-মাজুজের আবির্ভাব ও বিজয়।’ এরপর তিনি বলেন : ‘এসব ঘটনা ঘটবে এবং ঐ সময় ঘটবে যখন ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর পুনরাবির্ভাবের প্রত্যাশা করা হবে, যিনি হবেন ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর পুত্র এবং ২৫৫ হিজরির ১৫ শাবান জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি এখনও জীবিত আছেন এবং ঈসা ইবনে মারইয়াম (আ.)-এর সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হবে।’ (আল ইয়াওয়াকীত ওয়াল জাওয়াহির ফী আকাইদুল আকবার, দ্বিতীয় সংস্করণ, পৃ. ১২৭)
আহলে সুন্নাতের বিশিষ্ট মনীষী ইমাম ইবনে জাওযীর বক্তব্য : ‘মুহাম্মাদ ইবনে হাসান বিন আলী বিন মুহাম্মাদ বিন আলী বিন মূসা বিন জাফর বিন মুহাম্মাদ বিন আলী বিন হুসাইন ইবনে আলী ইবনে আবী তালিব (আ.)। আবুল কাসিম আপনার উপাধি এবং আপনি খলিফা ও সকল যুগের ইমাম। আপনার মায়ের নাম সাকীল।’ (তাযকিরাতুল খাওয়াস, পৃ. ২০৪, মিশর থেকে প্রকাশিত)।
‘গ্রান্ড মুফতিয়ে দিয়ার’ (দেশের সর্বপ্রধান মুফতি) নামে খ্যাত আল হাযারমা আবদুর রহমান বিন মুহাম্মাদ ইবনে হুসাইন ইবনে উমর আল মসহুর আলাভীর বক্তব্য : ‘শেখ ইরাকীর মতে, ইমাম মাহ্দী (আ.) ২৫৫ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন। শেখ আলী আল খাওয়াসের জীবদ্দশায় অর্থাৎ ৯৫৮ হিজরিতে ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর বয়স ৭০৩ বছর হয়ে থাকবে। আহমদ রামলীও বলেছেন যে, ইমাম মাহ্দী (আ.) সত্য (বাস্তবে বিদ্যমান); আর ঠিক একই কথা ইমাম আবদুল ওয়াহাব শারানীও বলেছেন।’ (বাকীয়াতুল মুস্তারশিদীন, পৃ. ২৯৪, বৈরুত থেকে প্রকাশিত)
‘ইমাম কিরমানী’ নামে প্রসিদ্ধ আহমদ ইবনে ইউসুফ ওয়া মুশকীর বক্তব্য : ‘পিতার মৃত্যুর সময় ইমাম আবুল কাসেম মুহাম্মাদ ইবনে হাসান আসকারীর বয়স ছিল ৫ বছর। মহান আল্লাহ্ যেমন নবী হযরত ইয়াহ্ইয়া (আ.)-কে ঐ বয়সে জ্ঞান দিয়েছিলেন যখন তিনি ছিলেন অতি অল্প বয়স্ক শিশু, ঠিক তেমনি তিনি তাঁকে ঐ অল্প বয়সেই ঐশী ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দিয়েছিলেন। তিনি সুন্দর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন এবং তাঁর পবিত্র বদনমণ্ডল ছিল আলোকিত (নূরানী)।’ (এসব বৈশিষ্ট্যই ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর বিবরণ প্রদানকালে হাদীসের গ্রন্থাবলীতেও উল্লিখিত হয়েছে। তারিখে আখবারুদ দুওয়াল ফী আছারিল আউয়াল, পৃ. ১১৮, বাগদাদ, ইরাক থেকে প্রকাশিত)।
আহলে সুন্নাতের আরেক মনীষী ইমাম আল্লামা শেখ আবদুল্লাহ্ বিন মুহাম্মাদ বিন আমীর আশ শিবরাভীর বক্তব্য : ‘প্রতীক্ষিত ত্রাণকর্তা ইমাম মাহ্দী ইবনে হাসান আল খালিস (আ.) ২৫৫ হিজরির ১৫ শাবান সামাররায় জন্মগ্রহণ করেন। আববাসী শাসনকর্তার অত্যাচার ও নির্যাতনের কারণে ইমাম হাসান আসকারী মৃত্যুর পাঁচ বছর আগে ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর জন্মগ্রহণের বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। ইমাম মুহাম্মাদের উপাধিগুলো হচ্ছে মাহ্দী, কায়েম, মুনতাযার (প্রতীক্ষিত), খালাফে সালেহ্ (পুণ্যবান উত্তরাধিকারী) এবং সাহেবুয যামান; এসব উপাধির মধ্যে আল মাহ্দী সবচেয়ে প্রসিদ্ধ।’ (ইলা তাহাফি বিহুবিল আশরাফ, পৃ. ১৭৯-১৮০, মিশর থেকে প্রকাশিত)।
আহলে সুন্নাতের আরেক মনীষী ইমাম আল্লামা আল হাফেয মুহাম্মাদ বিন মুতামাদ খান আর বাদাখশানী। ‘নিশ্চয়ই আপনার শত্রু হবে নির্বংশ’-এ আয়াতের আবতার শব্দের ব্যাখ্যা করে বলেন : আবতার ঐ ব্যক্তি যার কোন ভবিষ্যতে আশা-আকাঙক্ষা বা ভবিষ্যৎ বংশধারা নেই। অতঃপর তিনি বলেন : ‘ইমাম হুসাইনের পুত্র আবুল হাসান আলী বিন হুসাইন যায়নুল আবেদীন (আ.), তাঁর পুত্র আবু জাফর মুহাম্মাদ আল বাকের (আ.), তাঁর সন্তান আবু আবদিল্লাহ্ জাফর আস সাদেক (আ.), তাঁর সন্তান আবু ইসমাঈল মূসা আল কাযেম (আ.), তাঁর সন্তান আবুল হাসান আলী আর রেযা (আ.), তাঁর সন্তান আবু জাফর মুহাম্মাদ আল জাওয়াদ (আ.), তাঁর সন্তান ছিলেন আবুল হাসান আলী আল হাদী (আ.) এবং তাঁর সন্তান ছিলেন আবু মুহাম্মাদ আয যাকী (আ.); আর তাঁর সন্তান হচ্ছেন আল মুনতাযার আবুল কাসেম মুহাম্মাদ আল মাহ্দী (আ.)।’ (নাযালুল আবরার, পৃ. ১৭৪-১৭৫; ইরাক থেকে মুদ্রিত)
আহলে সুন্নাতের বিশিষ্ট মনীষী আল্লামা কামালুদ্দীন মুহাম্মদ বিন তালহা শাফিয়ীর বক্তব্য : ‘আবুল কাসেম মুহাম্মদ বিন আল হাসান আল খালিস বিন আলী আল মুতাওয়াক্কিল বিন মুহাম্মদ আল কামিয়াহ্ বিন আলী আর রেযা বিন মূসা আল কাযেম বিন জাফর আস সাদেক বিন মুহাম্মদ আল বাকের বিন আলী যয়নুল আবেদীন বিন হুসাইন আয যাকী বিন আলী বিন আবী তালিব (আ.); তিনি প্রতীক্ষিত ত্রাণকর্তা। তাঁর মায়ের নাম ছিল সাকীলাহ্ এবং তিনি হাকীমাহ্ নামেও পরিচিতা ছিলেন। তাঁর নাম মুহাম্মদ; তাঁর কুনিয়াত আবুল কাসেম; তাঁর উপাধিসমূহের মধ্যে আল হুজ্জাত, খালাফে সালেহ্ ও আল মুনতাযার প্রসিদ্ধ।’ (মাতালিবুস সুউল ফী মানাকিবে আলে রাসূল, পৃ. ৮৯; মিশর থেকে প্রকাশিত।
তিনি উক্ত গ্রন্থে আরও লিখেছেন যে, ইমাম মাহ্দী (আ.) ইমাম আবু মুহাম্মাদ আল হাসান আল আসকারীর পুত্র। তিনি সামাররায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি (গ্রন্থকার) তাঁর আদ দুরারুল মুনাযযাম গ্রন্থেও একই কথা উল্লেখ করেছেন।
আহলে সুন্নাতের প্রখ্যাত আলেম শেখ আসলাহুদ্দীন তাঁর শারহে দায়িরাহ্ গ্রন্থে লিখেছেন যে, হযরত মাহ্দী (আ.) আহলে বাইতের ইমামদের মধ্যে দ্বাদশ ইমাম। ইমাম আলী ছিলেন প্রথম ইমাম এবং ইমাম মাহ্দী হচ্ছেন সর্বশেষ ইমাম।
আহলে সুন্নাতের অন্তত পঁয়ত্রিশ জন বিখ্যাত আলেম ইমাম মাহ্দী (আ.) সম্পর্কে ৪৬টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে :
১. কিতাবুল মাহ্দী : আবু দাউদ
২. আলামাতুল মাহ্দী : জালালুদ্দীন সুয়ূতী।
৩. আল কাওলুল মুখতাসার ফী আলামাতিল মাহ্দী আল মুনতাযার : ইবনে হাজার।
৪. আল বায়ান ফী আখবারি সাহিবিয যামান : আল্লামা আবু আবদিল্লাহ্ ইবনে মুহাম্মাদ ইউসুফ আদ দামেশকী।
৫. মাহ্দী আলে রাসূল : আলী ইবনে সুলতান মুহাম্মাদ আল হিরাভী আল হানাফী।
৭. মানাকিবুল মাহ্দী : আল হাফেয আবু নাঈম আল ইসফাহানী
৮. আল বুরহান ফী আলামাতিল মাহ্দী আখিরায যামান : মুত্তাকী আল হিন্দী।
৯. আরবাউনা হাদীসান ফীল মাহ্দী : আবদুল আলা আল হামাদানী।
১০. আখবারুল মাহ্দী : আল হাফেয আবু নুআইস।
(সূত্র : তেহরান, ইরান থেকে প্রকাশিত আল তাওহীদ, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০০৩ সংখ্যা থেকে সংকলিত।)
সৌজন্যে : প্রত্যাশা, একটি মানব উন্নয়ন বিষয়ক ত্রৈমাসিক, বর্ষ ২, সংখ্যা ১