কাবাঘরের চারদিকে তাওয়াফে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে কেন ঘোরা হয়

হুসাইন আর্দেকানী পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রীধারী একজন উদীয়মান গবেষক। তিনি ইরানের প্রথিতযশা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বহুল পরিচিত বিজ্ঞানী প্রফেসর হেসারীর অন্যতম ছাত্র। তিনি ফার্স সংবাদ সংস্থাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে উপরোল্লিখিত বিষয় প্রসঙ্গে একটি চমৎকার তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, নীতিগতভাবেই পবিত্র দ্বীন ইসলামে যেসব বিধিবিধান আছে, তার সবগুলোই বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। উদাহরণস্বরূপ হজের আহকামগুলোর মধ্যে আমরা একটি হুকুমের কথা বিবেচনা করতে পারি। হাজিগণ কাবাঘরকে ঘিরে যখন তওয়াফ করেন তখন ঘুরতে হয় হাতের বাম দিকে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটা যেদিকে ঘোরে তার বিপরীত দিকে। অধিকাংশ ধর্মীয় নেতা বলে থাকেন, তাওয়াফ কাবাঘর থেকে মাকামে ইবরাহীমের মাঝখান দিয়ে করা উত্তম, তার মধ্যেও বৈজ্ঞানিক যুক্তি রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এসব বিষয়ের সবগুলোই পদার্থবিজ্ঞানের নিরিখে প্রমাণযোগ্য। তিনি বলেন, আল্লাহর ঘর পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত। যখন যে কোন অণু বা বস্ত্ত ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘোরে তখন ৫টি শক্তি তার মধ্যে প্রবেশ করে। কেননা, এসব শক্তির সমষ্টি ভেতরের দিকে সমাবিষ্ট হয়। তাওয়াফের বেলায়ও এই নীতি প্রযোজ্য। এখানে অণু-পরমাণু হচ্ছে তাওয়াফকারী মানুষেরা আর এই অণুর শক্তিসমষ্টিও কেন্দ্রের দিকে অর্থাৎ কাবাঘরের দিকে ধাবিত হয়।

পদার্থবিজ্ঞানী হুসাইন আর্দেকানী আরোও বলেন, তাওয়াফের সময় যদি পরিক্রমণ ডানদিক দিয়ে সম্পন্ন হত তাহলে পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র অনুযায়ী বস্ত্তর কেন্দ্র হতে নিক্ষিপ্ত হওয়ার ঘটনা সংঘটিত হত। পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্র মতে অণুগুলো- এখানে যা মানুষ হিসাবে বিদ্যমান, বাইরের দিকে নিক্ষিপ্ত হত আর তাদের শক্তি কেন্দ্রের দিকে অর্থাৎ কাবাঘরের দিকে ধাবিত হত না।

আর্দেকানী আরো বলেন, এখন যদি আল্লাহর ঘর দক্ষিণ গোলার্ধ অংশে অবস্থিত হত, তাহলে অবশ্যই আমাদের ধর্মে এ কথার ওপর তাগিদ দেয়া হত যে, অবশ্যই ঘড়ির কাঁটার ঘূর্ণনের দিকে অর্থাৎ হাতের ডান দিকেই তাওয়াফে পরিক্রমণ করতে হবে। তিনি কাবাঘর ও মাকামে ইবরাহীমের মধ্যবর্তী অংশ দিয়ে তাওয়াফ করার গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, যে গতিশীল বস্ত্তর  চক্রাকার গতি থাকে, তার পরিধি যখন কম থাকে, তখন তার দ্রম্নততা এমনিতেই বৃদ্ধি পায়। তখন এর ঝোঁক ও কেন্দ্রিকতা ভেতরের দিকে বা কেন্দ্রের দিকে বেশি মাত্রায় হয়। এ কারণে অধিকাংশ ধর্মীয় নেতা বলেন, আল্লাহর ঘরের তাওয়াফ এই দূরত্বের মাঝখান দিয়ে সম্পন্ন হওয়া উচিত। কারণ, তখন এই কেন্দ্রিকতার ঊর্ধ্বগতি ও ঊর্ধ্বারোহণ সম্পন্ন হয়ে থাকে।

তরুণ পদার্থ বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে, পৃথিবীতে সবকিছুই পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্র মোতাবেক পর্যালোচনা করা হয়। তবে মানুষের জ্ঞানের পরিধি এত পরিমাণ নয় যে, তা দিয়ে সে সবকিছুকে আয়ত্ত করতে পারবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.