অযু কোরান থেকে

অযু হলো নামাযের প্রবেশের অনুমতি স্বরুপ এবং ইবাদত সম্পাদনের আত্বিক ক্ষেত্রস্বরুপ। অযু ছাড়া নামায বাতিল।
অযু হলো ঈমানের অজ্ঞ, অন্তরের জ্যোতি এবং আধ্যান্তিক মনো সংযোগ দানকারী।


অযুর নিয়ম সম্বন্ধে মহান আল্লাহতাআলা কোরানে শরীফে স্পষ্ট আকারে উল্লেখ করে দিয়েছেন যেমন, “হে মুমিনগন যখন তোমরা নামাযের জন্য উঠ, তখন স্বীয় মুখ মন্ডল ও হস্ত সমুহ কুনুই পর্যন্ত ধৌত কর এবং তোমাদের মাথা মাসাহ্ কর এবং পদযুগল গিটসহ।” (সুরা মায়েদা -৬.)


মাথা ও পা এর মাসাহ্ করতে হবে।( সহীহ আল বখারী,৪ খন্ড, পৃ:৪৪৬. সন ১৯৯১. ইসলামী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।)


যেহতু এখানে শুধু মাত্র ১ বার উল্লেখ রয়েছে ফাগ্বসিলু অর্থাৎ ধৌত কর। ফাগ্বসিলুর সাথে সম্পর্ক রয়েছে মুখ মন্ডল, চেহারা, হস্ত সমুহ ও কুনুই সমুহ পর্যন্ত। এবং ওয়া আমসাহুর সাথে সম্পর্ক রয়েছে মাথা ও পায়ের গোড়ালীদ্বয় পর্যন্ত। এখানে মাথা ও পদযুগলকে মাসাহ্ করতে বলা হয়েছে, ধৌত নয়। যদি পা কে ধৌত করার কথা বলা হতো তাহলে ওয়া আরজুলাকুম শব্দটি ফগ্বসিলুর সাথে যুত্তু হইত অথবা ওয়া আরজুলাকুমের পূর্বে ফাগ্বসিলু শব্দটি থাকতো। যেহেতু কোরআনে পা কে ধৌত করার কোন যুক্তি বা প্রমান নেই আছে মাসাহ্ করার তাই আমাদের সকলকে কোরআনমজিদ এর নিয়ম অনুযায়ী চলতে হবে।

যদি প্রশ্ন উঠে যে পায়ে নাপাকি থাকতে পারে তাই ধৌত করতে হবে। তাহলে তো আমাদেরকে মূল অযুর শুরুতেই পা কে ধুয়ে নিতে হবে কারন নাপাকি পায়ে নিয়ে অযু কোন মতেই শুন্ধ হয় না। পা কে ভালমত ধুয়ে শুকিয়ে অযু করতে হবে। তারপর কোরআনমজিদ এর আয়াত মতাবেক পা কে মাসাহ্ করতে হবে।

আল-আইশী, আবু বকর বিন হুজামের কাছ থেকে এটি বর্ণণা করেছেন:

‘একজন লোক ওযু করতে গিয়ে মোজার উপরে মাসেহ করল বা মোজা উপরে হাত মুছল এবং সে মসজিদে প্রবেশ করে নামাজ পড়ল। তখন আলি (আ:) এসে তার ঘাড় ধরে বলেছিল: ‘ধিক্কার আপনাকে! আপনিতো ওযু ব্যতীত নামাজ পড়ছেন? ’সুতরাং তিনি বললেন,‘ উমর বিন আল-খাত্তাব আমাকে এমন আদেশ করেছিলেন ’।

তিনি (বর্ণনাকারী বললেন), ‘সুতরাং তিনি (আ:) তাকে তাঁর হাত দিয়ে ধরে ওমরের কাছে নিয়ে গেলেন এবং রাগত স্বরে বললেন:‘ দেখুন তিনি আপনার বিরুদ্ধে কি অপবাদ দিচ্ছে’।

সুতরাং তিনি (উমর) বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি তাকে এরকম আদেশ দিয়েছি। রসুল (সা:) মুছেছেন (মোজার উপর)’।

তিনি (আ:) বললেন বলছিলেন: ‘এটা কি তিনি (সূরার প্রকাশ) আল-মা’ইদা এর আগে করেছিলেন নাকি এর পরে?’ তিনি (উমর) বললেন, ‘আমি জানি না’।

তিনি (আ:) বললেন: ‘তাহলে কেন আপনি না জেনে রায় (ফতোয়া) দিয়েছেন এবং আপনার জানার কথা (মুছে ফেলা) দুটি মোজার উপর যায়েজ ছিল কুরআনের সূরা আল মা’ইদা নাযিলের আগে ’।

সুত্র: তাফসীরে হুব্বে আলী পৃষ্ঠা ৪১, খন্ড: ৫।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.