সাদা রেখা কালো রেখা থেকে পৃথক:
এবং তাঁর কাছ থেকে (আল কুলায়নী), আলী বিন ইব্রাহিমের কাছ থেকে, এবং মুহাম্মদ বিন ইয়াহইয়া, আহমদ বিন মুহাম্মাদ থেকে, পুরোপুরি, ইবনে আবু উমিরের কাছ থেকে, আল হাল্বির বলেছিলেন যে, ‘আমি আবু আবদুল্লাহ (আ:) কে জিজ্ঞাসা করলাম এ আয়াত সম্পর্কে কালো রেখার [২: ১৮৭] থেকে সাদা রেখার ব্যাপারে বলুন, তাই তিনি (আ:) বলেছিলেন: ‘রাতের অন্ধকার থেকে দিনের শুভ্রতার’।মুহাম্মদ বিন ইয়াহইয়া, আহমদ বিন মুহাম্মদ থেকে, উসমান বিন ইসা থেকে, সামা‘আত বিন মিহরান বলেছিলেন যে, ‘আমি তাকে (আ:) ভোরের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দু’জনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছি। সুতরাং, দু’জনের একজন বলে, ‘এটি তা’ এবং অন্যজনটি বলেন, ‘আমি কোনও জিনিস দেখছি না’। তিনি (আ:) বলেছিলেন: ‘সুতরাং, সে যেন খায়, যার জন্য ভোরের সাদা রেখা প্রকাশিত হয়নি, এবং যে দাবি করেছে যে সে ভোরের রেখা দেখেছিল, তার উপরে তা খাওয়া নিষিদ্ধ’। আল্লাহ পরাক্রমশালী এবং মহামহিম বলছেন এবং খাওয়া-দাওয়া করবে যতক্ষণ না এটি আপনার জন্য পরিষ্কার হয়ে যায়, ভোরের কালো রেখা থেকে সাদা রেখার সাথে [২: ১৮৭] ’।মুহাম্মদ বিন ইয়াহইয়া, আহমদ বিন মুহাম্মাদ থেকে, উসমান বিন ইসা থেকে, সামাআত থেকে যারা বলেছিলেন, ‘আমি তাকে (আ:) রমজান মাসের উপবাসকারী লোকদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি, সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় কালো মেঘ তাকে ঢেকে ফেলেছিল। সুতরাং তারা মনে করেছিল যে এটি রাত, তাই তারা দ্রুত ইফতারি করে ফেলে। তারপরে মেঘ সরে যায়, এবং তারা দেখলো সূর্য (এখনও আছে)। সুতরাং তিনি (আ:) বলেছিলেন: ‘এটা তাদের উপরেই বর্তাবে যারা সেদিনের রোযা ভঙ্গ করে। মহান ও মহিমাম্বিত আল্লাহ তায়ালা বলছেন রাত অবধি রোযা সম্পূর্ণ করতে।[২: ১৮৭]। সুতরাং যে ব্যক্তি রাতের প্রবেশের আগে খায়, সেটি তার উপরেই বর্তাবে, কারণ তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে তা খেয়েছেন’।আলী বিন মুহিয়াদ, সাহল বিন জিয়াদ থেকে আসা আলী বিন মাহজিয়ার যিনি বলেছিলেন, ‘আবু আল-হাসান বিন আল-হুসেন ২য় জন যিনি আমার সাথে ছিলেন তিনি আবু জাফর (আ:) কে লিখেছিলেন,‘ আমি আপনার (আ:)জন্য কোরবানি হতে পারি! আপনার (আ:) সময়ের মধ্যে আল-ফজর এর সালাত সম্পর্কে ভিন্ন মত রয়েছে। সুতরাং, তাদের মধ্য থেকে এমন একজন আছেন, যিনি ভোরের সাদা রেখা আকাশের প্রথম অংশে প্রসারিত হয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে তার সাথে সাথে নামাজ আদায় করছে এবং তাদের মধ্য থেকে এমন ব্যক্তি আছেন, যিনি নামাজ আদায় করেন যখন তিনি দেখেন ভেরের সাদা রেখা আকাশের দিগন্তের নীচে কেবল মাত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তখন, এবং আমি এ দু পক্ষের মধ্যে কোনটি পছন্দ করবো বুঝতে পারছি না। দু’টি সময় এর মধ্যে কোন সময়কে সঠিক বিবেচনা করে আমি নামাজ পড়তে পারি। সুতরাং আপনি (আ:) মতামতের মাধ্যমে আপনি (আ:) আমাকে এ দুটি সময় সম্পর্কে শিক্ষা দান করুন এবং এর সময় সীমাও জানান। এবং মেঘ থাকলে আমার কি করা উচিত তাও জানাবেন। এবং ভ্রমণের সময় তার সময় সীমা কতক্ষণ এবং তা কতক্ষন স্থায়ী থাকে তাও জানাবেন? আল্লাহতায়ালা সহাই হওন’।
সুতরাং তিনি (আ:)তাঁর (আ:)নিজের হাতে লিখে পাঠিয়েছিলেন এবং আমি সেটি পড়েছিলাম: ‘ভোর, আল্লাহতায়ালার তোমাদের প্রতি দয়া করুন, সেটি হ’ল সাদা রেখা, যা দিগন্তে সমতলভাবে কেবল উঠেছে। এটি উল্লম্ব বা খাড়া সাদা রেখা নয়। অতএব, সলাত বা নামায পড়বেন না হোক সেটি সফরের সময় বা ঘরে স্থির থাকার সময় যতক্ষন পর্যন্ত না তা আপনার সম্মুক্ষে পরিষ্কার হচ্ছে। কারণ আল্লাহ তাআলা মহান ও মহিমান্বিত, কখনওই তাঁর সৃষ্টিকে এ বিষয়ে সন্দেহে ফেলে রাখবেন না। তাই তিনি বলেছেন [২: ১৮৭] এবং খাওয়া-দাওয়া করুন যতক্ষণ না পর্যন্ত ভোরের কালো রেখা থেকে সাদা রেখা আলাদা হয়ে যায়। সুতরাং সাদা রেখা, এটি সেই দিগন্তে সমতলভাবে অনুভূমিক (সাদা রেখা) যার দ্বারা সেহিরির সময় খাওয়া এবং পান করা নিষিদ্ধ করা হয় এবং অনুরূপভাবে, এটি সলাত বা নামাজের ক্ষেত্রেও প্রযোয্য। রাত পর্যন্ত রোযা পূর্ণ করুন।’
আলী বিন ইব্রাহিম, মুহাম্মদ বিন ইসা বিন উবাইদ থেকে, ইউনূস থেকে, আবু বাসের এবং সামআত থেকে (বর্ণিত হয়েছে) একদল লোক যারা রমযান মাসে রোযা রাখে তাদের সম্পর্কে আবু আবদুল্লাহাহ (আ:) থেকে বর্ণিত, তাই কালো মেঘ তাদের উপর ছেয়ে গেল সূর্য অস্ত যাওয়ার সময়। সুতরাং তারা এটিকে রাত হিসাবে মনে করছে এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ রোযা ভঙ্গ করে ফেলে। তারপরে মেঘ সরে যায়, সুতরাং সূর্য সেখানে (এখনও) আছে তা তারা দেখতে পায়। তিনি (আ:) বলেছিলেন: ‘ এটি তাদের উপর যারা সেদিনের রোজা ভঙ্গ করে ফেলেছে। মহান ও মহিমান্বিত আল্লাহ তায়ালা বলছেন রাত অবধি রোজা পূর্ণ করো [২: ১৮৭] সুতরাং যে ব্যক্তি রাতের প্রবেশের আগে খায়, তা তাদের উপরেই এটি বর্তাবে, কারণ তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে খেয়েছিলেন ’।
আল-কাসিম বিন সুলেমান, জারারাহ থেকে, (বর্ণিত হয়েছে) আল-সাদিকাসউস বলেছিলেন: ‘আল্লাহাজ্জ্ব্ব সায়েদ: অতঃপর রাত অবধি রোজা শেষ করুন [২: ১৮7] – এর অর্থ হল (মাস) রমজান এ রাত পর্যন্ত রোযা রাখা। সুতরাং যিনি দিনের বেলা শওয়ালের চাঁদ দেখতে পান, সে যেন তার রোজা শেষ করে (অর্থাত্ ইদ উদযাপন না করে)’’।
সূত্র: তাফসীরে হব্বে আলী, খন্ড: ২, পৃষ্ঠা: ২৫-২৬।
অনুবাদে: মো: মনিরুজ্জামান জনি
প্রচারে: বেলায়েত মিডিয়া