একদা একটি ছোট্ট জলাশয়ে তিনটি মাছ সাঁতার কাটছিল। এর মধ্যে একটি ছিল কমলা মাছ, আরেকটি ছিল সোনালি মাছ এবং তৃতীয়টি রুপালি মাছ। তারা ছিল খুবই সুখী এবং প্রত্যেক দিন তারা মনের আনন্দে খেলা করত।
একদিন দুই ব্যক্তি ঐ জলাশয়ের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মাছ তিনটিকে দেখতে পেল। তাদের মধ্যে একজন বলে উঠলো, ‘ঐ দেখ কী চমৎকার সুন্দর মাছ! চল, রান্না করে খাওয়ার জন্য এগুলো ধরি।’ অন্যজন বলল, ‘চমৎকার ধারণা! কিন্তু আমাদের তো জাল দরকার।’
সুতরাং তারা জাল যোগাড় করার উদ্দেশ্যে নিকটবর্তী গ্রামে গেল।
কমলা মাছ ছিল অপর মাছ দু’টির তুলনায় চালাক। ঐ দুই ব্যক্তি যখন কথাবার্তা বলছিল তখন সোনালি ও রুপালি মাছ ছিল খেলায় মত্ত। কিন্তু কমলা মাছ তাদের কথাবার্তা কান পেতে শুনল। সে তাদেরকে বলল, ‘আমার কথা শোন, আমরা কিন্তু এখন বিপদের সম্মুখীন। ঐ দুটি লোক খুব শিগগিরই একটি জাল নিয়ে আসবে আমাদের ধরার জন্য। আমাদের খুব দ্রুত একটা কিছু করতে হবে।’
সোনালি মাছ বলল, ‘এত ঘাবড়াবার কিছু নেই। একটা পরিকল্পনা করার মতো সময় আমাদের আছে। আগে আমাদের খেলাটা শেষ করি।’
রুপালি মাছ এতে রাজী হলো, কিন্তু কমলা মাছ তাদেরকে বলল, ‘এখানে নিকটে একটি গোপন নালা আছে। আমরা সেই নালায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েও আত্মগোপন করতে পারি। এতে আমরা নিরাপদ হব।’ কিন্তু কমলা মাছের একথা উপেক্ষা করলো অন্য মাছ দুটি। সুতরাং সে একাই গিয়ে সেখানে আশ্রয় নিল। লোক দুটি একটি জাল নিয়ে ফিরে এল মাছ ধরার জন্য। একজন বলল, ‘কি অদ্ভুত ব্যাপার! এখানে না তিনটি মাছ ছিল!’ অপরজন বলল, ‘তাড়াতাড়ি করো এবং এই দু’টিকেই ধর।’ এই কথা শুনে সোনালি মাছ খুবই ভীত হয়ে পড়ল এবং ধরা পড়ার আগেই প্রাণপণে ছুটে গিয়ে কোনমতে গোপন নালায় আশ্রয় নিল। কিন্তু রুপালি মাছ এত চালাক ছিল না। সে জালে ধরা পড়ে গেল।
প্রিয় শিশুরা! এই গল্প থেকে আমরা কি শিক্ষা পাই?
এখান থেকে আমরা যে শিক্ষা পেলাম সেটা হলো, কোন ভাল পরামর্শ বা উপদেশ যখন আমরা পাই তখন আমাদের উচিত হবে কোন প্রকার বিলম্ব না করে সেই মতো কাজ করা।
‘সুযোগ মেঘের মতো দ্রুত চলে যায়।’- হযরত আলী (আ.)
(নিউজলেটার, জানুয়ারি ১৯৯২)