মহানবী’র (সা.) জানাযা, গোসল, কাফন ও দাফন
টিভি শিয়া: যারা মহানবী হযরত মোহাম্মদের (সা.) পবিত্র জানাযা’র গোসল দিয়েছেন এবং তাঁর কাফন ও দাফন কার্যে শরিক হয়েছেন তারা হচ্ছেন:
১। হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)।
২। রাসুলের (সা.) চাচা আব্বাস।
৩। ফাযল ইবনে আব্বাস।
৪। (মহানবী’র আযাদ করা ক্রিতদাস) সালেহ।
অতএব, বলা যেতে পারে যে, রাসুলের সাহাবিরা তাঁর জানাযাকে পরিবারের সদস্যদের মাঝখানে ছেড়ে চলে গেছেন এবং হাতে এই গোনা কয়েকজন ব্যক্তিবর্গ রাসুলের (সা.) জানাযা’র গোসল ও কাফন-দাফনের দায়িত্ব পালন করেছেন। (তাবাকাত ইবনে সা’দ, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ৭০; কানযুল উম্মাল, ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা: ৫৪ ও ৬০; আওস ইবনে খাওলা আল আনসারি’র বর্ণনাতেও এ চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, দ্রষ্টব্য: আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ১১০)
অপর এক হাদীস মতে ফাযল ও কুসাম, আব্বাসের সন্তানগণ ও নবী’র (সা.) স্বাধীন করা ক্রিতদাস শুকরান এবং অপর এক বর্ণনা মতে ওসামা বিন যায়দকে সাথে নিয়ে হযরত আলী (আ.) রাসুলের (সা.) গোসাল ও কাফন-দাফনের কার্য সম্পাদন করেছেন। (আল ইকদুল ফারিদ, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ৬১; যাহাবিও তার তারিখের বইতে ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩২১, ৩২৪ ও ৩২৬ -এ ইকদুল ফারিদের মতই কথা বর্ণনা করেছেন)
আর আবুবকর ও ওমর এ কাজে উপস্থিত ছিলেন না। (কানযুল উম্মাল, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ১৪০)
নবী করিমের (সা.) চাচা আব্বাস এ সময় হযরত আলীকে (আ.) বল্লেন:
“یا ابن اخی هلمّ لأبایعک فلا یختلف علیک اثنان”
হে আমার ভাতিজা ! এগিয়ে এসো যাতে তোমার হাতে বাইআত করি, এরপর আর কেউ তোমার বিরোধিতা করবে না। (মুরুজুয যাহাব, মাউদি, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ২০০; তারিখুল ইসলাম, যাহাবি, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩২৯)
হযরত আলী (আ.) বল্লেন:
“لَنا بِجِهازِ رَسولِ الله شُغلٌ”
আপাতত আমাদের কাজ হল আল্লাহ’র রাসুলের (সা.) গোসল ও কাফন দাফন দেয়া। (শরহে নাহজুল বালাগা, ইবনে আবিল হাদিদ, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ১৩১)
হযরত আয়েশাও এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না এবং রাসুলের (সা.) গোসল ও কাফন-দাফনের কোনো খোজ খবর নেননি।
قَالَتْ عَائِشَةَ: “مَا عَلِمْنَا بِدَفْنِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى سَمِعنا صَوْتَ الْمَسَاحِي مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ لَيْلَةَ الْأَرْبِعَاءِ”
অবশ্য স্বয়ং তার নিজের বর্ণনা মতে বুধবারের মধ্য রাতে যখন তিনি বেলচার আওয়াজ শুনতে পেলেন ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি জানতেন না। (সিরাহ ইবনে হিশাম, ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩৪৪; তারিখু তাবারি, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ৪৫২ ও ৪৫৫; ইবনে কাসির, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৭০; উসদুল গাবা, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩৪; মুসনাদ আহমাদ, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা: ৬২, ২৪২ ও ২৭৪।)
সেই সময় সাক্বিফা বনী সায়েদা নামক স্থানে একদল আনসার তাদের মধ্য হতে নেতা নির্ধারণে ব্যস্ত ছিলেন। (মুসনাদ আহমাদ, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৬০; ইবনে কাসির, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ২৬০; সাফওয়াতুস সাফওয়া, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৮৫; তারিখুল খামিস, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ১৮৯; তারিখু তাবারি, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ৪৫১; তারিখু আবিল ফিদা, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ১৫২; উসদুল গাবা, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩৪; আল ইকদুল ফারিদ, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ৬১; তারিখুল ইসলাম যাহাবি, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৩২১; তাবাকাত ইবনে সা’দ, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ৭০; তারিখে ইয়কুবি, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ৯৪; আল ইসতিআ’ব, ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা: ৬৫।)