💦❄️❄️একটি দামি পিয়ারার গল্প::🌷🌷🌷
লিখেছেন= মো: মনিরুজ্জামান (জনি)
“দেখে নেও এ সেজেছে কি, আর এর ভেতরে কি???”
একদিন একলোক ফেরারী নিয়ে অফিসে যাচ্ছিল। তাকে পাহারা দেওয়ার জন্য বডি গার্ডও তার সাথে ছিল। এক একটা গাড়ির দাম প্রায় সাড়ে তিন লাখ ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় তিন কোটির মত। সামনে পিছনের ফেরারীতে তারা অবস্থান নিয়েছিল। একই রঙের ও একই রকম দেখতে ছিল। যা তার আজিজাত্য প্রকাশ করছিল। ড্রাইভার গুলোও ছিল সুট কোট পরা ও অস্ত্র সমেত। আর সে গাড়ীগুলোর সামনে ছিল পতাকা। যা তার ধনী হওয়ার ও সমাজে অনেক নামী দামী পদের অধীকারী হওয়ার প্রমান বহন করছিল। কারণ অনেক বেশি ধনী না হলে কেউ সাধারণত এত দামি গাড়িতে চড়তে পারে না, পতাকা ব্যবহার করতে পারে না ও এমন বডিগার্ডদের রাখতে পারে না। চলতি পথে হঠাৎ সে গাড়ী থামাতে বলে। তড়িঘড়ি করে সবাই গাড়ি থেকে নেমে সকলে নেমে দেখে যে, তাদের হুকুমদাতা রাস্তার পাশের বড় বাগনের পেয়ারা গাছ থেকে পেয়ারা ছিড়ছে ও গবগব করে খাচ্ছে। এদেখে তার অনুসারীরা সবাই হাসছে। এমন সময় সবাই অবাক হয়ে দেখলো একটা ছেলে বিশ একুশ বছর হবে। তাদের মালিকের হাত চেপে ধরল। আর চোর চোর বলে চিল্লাতে লাগল। গার্ড গুলোতো পিস্তল, বন্দুক তাক করে ফেলল ছেলে টিকে মেরেই ফেলবে।মানুষ্য প্রকৃতির স্বভাবের উপর নির্ভর করে বলা যায়, সাধারনত এমন পরিস্থিতিতে, দুটি দলের সৃষ্টি হয়:· এক দল বাগান মালিকের পক্ষ হয়ে উপযাজক হয়ে বলে যে, কেন না বলে সে পেয়ারা পাড়লো? আর,· দ্বীতিয় দলটিতে, দলে একটু ভারীই হয়ে থাকে। একটি পেয়ারার দামই বা কত?, অভিজাত লোকটির পক্ষ নিতে থাকে,তার সাথে যোগ দেয়, বাগান মালিক সেই ছেলেটির যারা শত্রু তারাও, অনেক সময় আভিজাত্ পোশাকও পাল্লা ভারী করতে ও লোক টানতে সাহায্য করে।মুল গল্পে ফিরে আসি, তো বাগানটির উত্তারাধিকারী ছেলেটিকে আশে পাশের লোকজন জিজ্ঞাসা করল, তোমার বাপতো তোমার জন্য ২৫ বিঘা সম্পত্তি তোমার জন্য রেখে গেছে, আর তোমার বাগানেতো মাশআল্লাহ ভালই পেয়ারা ধরেছে। তো এ সামান্য একটি পেয়ারার জন্য এমন বড় মাপের মানুষটির হাত ছাড়ছো না কেন? সে বলল, আমার কোন দু:খ নেই বা কষ্ট নেই যে, একটি পেয়ারা খেয়েছে। এমন অনেক পেয়ারা পাখিতেও খেয়ে যায়, পোকায় খেয়ে যায়, ইদুরেও খায়। কিন্তু যার সমর্থ আছে অথচ সে চুরি করে খাবে, এটা তো মেনে নেওয়া যায় না। ওনার পোশাক, বডিগার্ড, গাড়ী,ড্রাইভার, পতাকা কি প্রদর্শন করছে আর উনি ভেতরের মানুষটা কি এটা প্রমাণ করার জন্য আমি তার হাত ছাড়ছি না। ইতিহাস প্রমান করবে যে, উনি আমার বাগান থেকে পেয়ারা চুরি করে খেয়েছেন। তিনি যতই দেখান যে উনি উচ্চ পদস্থ, ধনী ও সম্ভ্রান্ত ঘরের মানুষ। আমি প্রমাণ দিয়ে যাচিছ সবার সামনে, আমি যে হাত দিয়ে তাকে ধরেছি, হাসরের ময়দানেও সে হাত দিয়েই এর হাত এমন করেই ধরবো ও একে বিচারের সম্মুক্ষিন করাবো। সে দিন না থাকবে কোন ঠাট বাট। না কোন মামা খালু। আর সে ছেলেটি বার বার বলতে লাগল, “দেখে নেও এ সেজেছে কি, আর এর ভেতরে কি???” “দেখে নেও এ সেজেছে কি, আর এর ভেতরে কি???”তখন সে অভিজাত লোকটি অনুনয় বিনয় করতে লাগলো আমাকে ছেড়ে দাও।ছেলেটি অভিজাত লোকটির হাত আরো শক্ত করে ধরে এবার বলতে লাগলো,“আল্লাহর কসম!! আমাদের সকলের মা, মা ফাতেমাতুজ্জোহরা (সা.আ.)ফাদাকের সম্পত্তির জন্য দরবারে গিয়েছিল। তাকেও আমার মতো বলা হয়েছিল এ সামান্য ফাদাকের জন্য তুমি দরবারে এসেছো। অনেকে ঘরে বসে বলেন, “সমস্ত জান্নাত ও কুলকায়েনাতের নেত্রী সামান্য ফাদাকের জন্য বিচার চেতে এসেছিল?”উত্তরে আমি এটাই বলবো ফাদাক ও আমার পেয়ারা তো বাহানা ছিল। আমি সারা জাহানকে দেখাতে চেয়েছি যারা ন্যায়বিচারক সেজে বসে আছেন তারা ভেতরে আসলে কি?? আর বাইরে কি?অতপর:সে অভিজাত লোকটির হাত ছেড়ে দিয়ে সবাইকে অবাক করে বলতে বলতে বাগানের ভিতর চলে গেল, “দেখে নেও এ সেজেছে কি, আর এর ভেতরে কি???” “দেখে নেও এ সেজেছে কি, আর এর ভেতরে কি???”