শহীদ আয়াতুল্লাহ মুর্তাজা মুতাহহারী
আবদুর রহমান ইবনে মুলজাম একদিন তার এক খারেজী বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে কেতামের সাথে পরিচিত হলো। কেতাম ছিল একজন খারেজী নেতার খুবই সুন্দরী কন্যা। কেতামের বাবা নাহরাওয়ানের যুদ্ধে চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (আ.)-এর সৈন্যদের হাতে নিহত হয়।
আবদুর রহমান প্রথম দৃষ্টিতেই কেতামের প্রেমে পড়ে গেল। আবদুর রহমানের মন কেড়ে নিল এই সুন্দরী যুবতী। সত্যি কেতাম ছিল অপরূপা। যেন ডানাকাটা পরী। আবদুর রহমান কেতামকে পাওয়ার নেশায় সবকিছু ভুলে গেল। ভুলে গেল তার কুফায় আগমনের কারণ। মক্কায় কা’বা ঘরে খারেজী দলের তিন যুব নেতা ইসলামী জাহানের তিন জন ব্যক্তিত্ব হযরত আলী (আ.), আমীর মুআবিয়া ও আমর ইবনুল আসকে হত্যা করার কসম খায়। ঠিক হলো ১৯ রমজান তারা কুফা, দামেস্ক ও মিশরে তিনজনকে হত্যা করবে। আবদুর রহমান রওয়ানা হলো আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী (আ.)-এর রাজধানী কুফার দিকে। বারাক চলে গেল আমীর মু’য়াবিয়ার রাজধানী দামেশকের দিকে। আর আমর ইবনে বকর রওয়ানা হলো আমর ইবনুল আসের কেন্দ্র মিশরের দিকে। বিদ্রোহী খারেজীরা তাদের বিভ্রান্ত দৃষ্টিতে মনে করেছিল, ইসলামী উম্মার তখনকার দুর্গতি ও যুদ্ধ-বিগ্রহের জন্য এ তিনজনই দায়ী, তাই তাদের হত্যা করা অপরিহার্য। ঘটনাক্রমে দামেশকে বারাকে তলোয়ারের আঘাতে আমীর মুআবিয়া নিহত হননি, আহত হয়েছিলেন। আর আমর ইবনে বকরের আঘাতে আমর ইবনুল আস নিহত হননি, নিহত হয়েছেন অপর এক ব্যক্তি। ইবনে বকর আমর ইবনুল আসকে চিনত না বলে ভুলবশত ইবনুল আসের প্রতিনিধিকে হত্যা করে।
এদিকে আবদুর রাহমান কুফায় পৌঁছেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। কিন্তু কেতামের মোহে পড়ে সে তার আসল লক্ষ্যই ভুলে যায়। অপূর্ব সুন্দরী কেতামকে তার পেতেই হবে। সে ঠিক করল যে করেই হোক কেতামকে বিয়ে করবে এবং সুখে-শান্তিতে কোথাও গিয়ে ঘর-সংসার শুরু করবে। শেষ পর্যন্ত আবদুর রহমান কেতামের কাছে তার অন্তরের কথা বলে বিয়ের প্রস্তাব দিল। কেতাম আবদুর রহমান ইবনে মুলজামের প্রস্তাবে সম্মতি জানালো। আবদুর রহমান যেন হাতে আকাশের চাঁদ পেল। এবার কাবিন ঠিক কারার পালা। আবদুর রহমান অধীর আগ্রহে তার প্রিয়তমার মোহরানা জানতে চাইলো। কিন্তু মোহরানার ফিরিস্তি শুনে আবদুর রহমানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। চোখেমুখে সে অন্ধকার দেখতে লাগলো। কেতাম বলল, আমার কাবিন তিনটি : ১. তিন হাজার দেরহাম, ২. একজন গোলাম ও একজন দাসী, আর ৩. আলী ইবনে আবু তালিবের খুন!
আবদুর রহমান বলল, অর্থবিত্ত ও দাসদাসী যা চাও দেব, কিন্তু আলীকে হত্যা করা দুরূহ কাজ। তাছাড়া আমরা তো সুখে-শান্তিতে ঘর সংসার করতে চাই। কি করে আলীকে হত্যা করব। এরপর নিজের প্রাণ বাঁচাব এবং তোমাকে নিয়ে ঘর করব?
কেতাম : আমার মোহরানা যা বলেছি তাই-ই। কোন রদবদল হবে না। আলীকে যুদ্ধের ময়দানে হত্যা করা যাবে না। তাকে তার ইবাদতের সময় আতর্কিত হামলা করতে হবে। যদি আলীকে হত্যার পর প্রাণ নিয়ে পালাতে পার তাহলে বাকী জীবন আনন্দে-উল্লাসে যেখানে তোমার খুশি সেখানে কাটিয়ে দেব। যদি নিহত হও তাহলেও আল্লাহর কাছে দুনিয়ার এই আনন্দ-উল্লাসের চেয়েও সুখকর ও শান্তিময় পুরস্কার ও সম্মান পাবে। এছাড়া আমি তোমার এ কাজে আরো কিছু অভিজ্ঞ সাহসী লোক নিয়োগ করে দেব। তুমি একা থাকবে না।
আবদুর রহমান কেতামের প্রেমে এতই মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়লো যে, তার হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেল। এ ছাড়া কেতামের প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসাপরায়ণতা আবদুর রহমানের অতীত প্রতিশ্রুতিকেই স্মরণ করিয়ে দিল। আবদুর রহমান এতদিনে তার মনে গোপন কথা প্রকাশ করার মতো লোক পেল। সে কেতামকে বলল, আসল কথা কি জান। আমি এ শহরে নতুন ও পলাতক। আমি তো এ শহরে এসেছি কেবল আলীকে হত্যার জন্যই।
কেতাম আবদুর রহমানের কথা শুনে অতিশয় খুশি হলো। এরপর কেতাম বেরদান নামক আরেক খোদাদ্রোহী খারেজীকে আবদুর রহমানের সঙ্গী হিসেবে নিয়োগ করল। এছাড়াও আবদুর রহমান কুফায় ঘটনাচক্রে তার এক পুরানো বন্ধুকে পেয়ে গেল। শাবিব বিন বুজরা ছিল আবদুর রহমানের বিশ্বস্ত বন্ধু। প্রাথমিক কথাবার্তার পর আবদুর রহমান শাবিব বিন বুজরাকে বলল, আমার সাথে এমন একটি সম্মানজনক কাজে কি অংশগ্রহণ করবে যাতে দুনিয়াতেও সওয়াব আখরাতেও সওয়াব।
শাবিব : কি কাজ?
আবদুর রহমান : আলী ইবনে আবু তালিবকে হত্যা করা।
শাবিব : বলছিস কি? আল্লাহ তোকে মেরে ফেলুক। আলীকে হত্যা? ইসলামে যে লোকের এত অবদান?
আবদুর রহমান : জ্বী হ্যাঁ। সে কি সিফফিনের যুদ্ধে ফায়সালা মেনে কাফের হয়ে যায়নি? ইসলামে তার অতীত অবদান যাই হোক না কেন সবই পণ্ড হয়ে গেছে। এছাড়া সে কি নাহরাওয়ানের যুদ্ধে আমাদের সূফি দরবেশ ও তাহাজ্জুদ গুজার ভাইদের (খারেজী) হত্যা করেনি? আমরা শরীয়ত অনুসারেই কেসাস হিসাবে তাকে হত্যা করতে পারি।
শাবিব : কিন্তু কিভাবে, আলীর উপর হাত তোলা সম্ভব?
আবদুর রহমান : মসজিদে লুকিয়ে থাকব। ফজরের নামায পড়ার জন্য মসজিদে এলে পোশাকের নিচে লুকাযিত শামশীর দিয়ে আমরা হামলা করব। ব্যস, খতম।
আবদুর রহমান : ইবনে মুলজাম শাবিব ইবনে বুজরাকে এত বুঝালো যে, শেষ পর্যন্ত সেও ওই অপকর্ম সাধনে রাজী হলো।
আবদুর রহমান এরপর শাবিবকে নিয়ে কুফার মসজিদে গেল এবং মসজিদে এতেকাফে অবস্থানরত কেতামকে ডেকে শাবিবের পরিচয় দিল। রমজান মাসে মসজিদে কেতামের এতেকাফ করার উদ্দেশ্য ছিল সন্ত্রাসীদের সব কর্মের তদারকী ও দেখাশুনা করা। এছাড়া খারেজীরা বাহ্যিক ইবাদত-বন্দেগিতে খুবই পাবন্দ ছিল। কেতাম অত্যন্ত খুশি হয়ে তাদের বলল : ‘বেশ ভালো হয়েছে। বেরদানও তোমাদের সাথে থাকবে। যে রাতে অভিযান চালাতে চাও ওই রাতে এসে প্রথমে আমার সাথে এখানে দেখা কর।’
আবদুর রহমান মক্কায় তার অপর দুই খারেজী বন্ধুর সাথে ওয়াদা করেছিল ১৯ রমযান (মতান্তর ১৭ রমযান) হামলা চালাবে। তাই সে ১৯ রমযান পর্যন্ত অপেক্ষা করল। ১৯ রমযান আবদুর রহমান ও শাবিব মসজিদে গিয়ে কেতামের সাথে দেখা করলো। কেতাম দু’জনের বুকেই দু’টুকরো রেশমি রুমাল বেঁধে দিল। এরি ভিতর বেরদান এসে উপস্থিত হলো। তিনজন এরপর মসজিদের ঐ দরজার পাশেই গিয়ে বসলো যেদিকে দিয়ে সাধারণত আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী (আ.) প্রবেশ করতেন। রমযান মাসের ওই রাত বেজোড় রাত বিধায় মসজিদে মুসল্লীদের অনেক ভীড় ছিল। সবাই ইবাদত-বন্দেগি ও নামাযে ব্যস্ত। তিন দুষ্কৃতকারীও সবার সাথে নামাযে মশগুল হয়ে পড়ল। তিনজনের মনের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল প্রবল বেগে ঝড়। তাদের অবস্থা যাতে কেউ টের না পায় এজন্য এত বেশি নামায, রুকু ও সেজদা চালাতে লাগল যেন তাদের খোদাপ্রেম ছাড়া দুনিয়াতে আর কোন কাম্যই নেই। তারা মোটেও ক্লান্ত হচ্ছিল না। কিংবা ক্লান্তির ভাব প্রকাশ করছিল না। মসজিদের নামাযীরা তাদের এত বিরামহীন ইবাদত দেখে বিস্মিত হয়েছিল। আহা! কত বড় দরবেশ!
এদিকে রমযানে হযরত আলী (আ.) বিশেষ রীতি গ্রহণ করেছিলেন। প্রতিদিন ইফতার করতেন তাঁর কোন এক ছেলে বা মেয়ের ঘরে। কোন রাতেই তিনি তিন লোকমার বেশি খেতেন না। ছেলে-মেয়েরা বেশি করে খাবার জন্য আবদার করতেন। তিনি বলতেন, ‘আমি চাই আল্লাহর সাথে যখন আমার সাক্ষাৎ হবে তখন যেন আমি ক্ষুধার্ত থাকি।’ তিনি বারবার বলতেন, ‘পয়গাম্বর আকরাম আমাকে যেসব আলামতের কথা বলে গেছেন তাতে মনে হচ্ছে অতি শিগগিরই আমার শ্বেত দাড়ি আমার মস্তকের খুনে রঞ্জিত হবে।’
১৯ রমযান হযরত আলী তাঁর ছোট মেয়ে হযরত উম্মে কুলসুম (রা.)-এর ঘরে মেহমান ছিলেন। অন্যান্য রাতের চেয়ে এ রাতে তাঁর চেহারা মুবারকে বেশি বেশি অস্থিরতা ও চাঞ্চল্য ফুটে ওঠে। অন্যরা গভীর রাতে ঘুমিয়ে পড়লে তিনি মনোনিবেশ করেন ইবাদতে।
সুবহে সাদেকের সময় বড় ছেলে হযরত হাসান (আ.) এলেন পিতার খোঁজে। হযরত হাসানকে লক্ষ্য করে হযরত আলী (আ.) বললেন : “বাবা হাসান। আজ সারা রাত আমি ঘুমাইনি। ঘরের লোকেরাও এতে আরামে ঘুমুতে পারেনি। আজ জুমআ রাত। এছাড়া এ রাত মিলে গেছে শবে কদরের (বা শবে বদরের) সাথে। একবার সালাম ফেরানোর পর বসা অবস্থাতেই হঠাৎ করে আমার চোখে ঘুম এসে গেল। নিদ্রায় দেখতে পেলাম পয়গাম্বর আকরাম আমার সামনে উপস্থিত হয়েছেন। তাঁকে দেখেই বললাম, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার উম্মতের হাতে আমি অনেক কষ্ট ভোগ করেছি।’ পয়গাম্বর বললেন, ‘ওদের অভিশাপ দাও।’ আমি অভিশাপ দিলাম। আমার অভিশাপ ছিল এই যে, ‘হে খোদা! আমাকে এ জাতির মধ্য থেকে তাড়াতাড়ি উঠিয়ে নাও। এদের চেয়ে যারা উত্তম তাদের সাথে হাশর করাও। এদের শাসক হিসাবে এমন কাউকে পাঠাও যে এদের উপযুক্ত, যে নাকি ওদের জন্য কঠোর ও বদ প্রকৃতি হবে’।”
এমন সময় মসজিদের মুয়াজ্জিন এসে হযরত আলীকে বললেন, ‘নামাযের ওয়াক্ত হয়ে এল, চলুন।’
হযরত আলী রওয়ানা হলেন মসজিদের দিকে। উম্মে কুলসুমের ঘরে বালিহাঁস ছিল। পাখিগুলো ও সময় উচ্চৈঃস্বরে চিৎকার জুড়ে দিল। একজন উঠে গিয়ে পাখিগুলোকে শান্ত করতে চাইল। হযরত আলী পেছন ফিরে বললেন, ‘থামিও না, ওদের চিৎকার করতে দাও। ওরা শোকের বিলাপ করছে।’
ওদিকে আবদুর রহমান ইবনে মুলজাম ও তার সঙ্গীরা অধীর আগ্রহে হযরত আলীর আগমনের অপেক্ষা করতে লাগল। এদের গোপন ষড়যন্ত্র কেতাম ও আশআশ বিন কায়েস ছাড়া আর কেউ অবগত ছিল না। আশআশ ছিল কুফার এক কুখ্যাত দুষ্কৃতিকারী এবং হযরত আলীর বিরোধী। সে উমাইয়াদের ঘোর সমর্থক। একটি ছোট ঘটনা সব রহস্য ফাঁস করে দিতে যাচ্ছিল। কিন্তু অবশেষে তা চাপা পড়ে গেল। আশআশ আবদুর রহমানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলল, ‘সকাল হওয়ার আর বেশি দেরি নেই। ভোরে আলোতে ধরা পড়ে যাবি। যা চাচ্ছিস তাতে তাড়াতাড়ি কর।’
হযরত আলীর ঘনিষ্ঠ সহচর ও অন্যতম সমর্থক হযরত হুজর ইবনে আদি (রা.) আবদুর রহমানের সাথে আশআশের ফিসফিস শব্দ লক্ষ্য করে ধারণা করলেন, নিশ্চয়ই কোন ষড়যন্ত্র চলছে। হুজর সবেমাত্র দীর্ঘ সফর থেকে ফিরেছেন। তাঁর ঘোড়াটি মসজিদের সামনেই বাঁধা। বোধহয় সরকারী কোন দায়িত্ব পালনে গিয়েছিলেন। হযরত আলীর কাছে রিপোর্ট করার জন্য উদ্যোগী হলেন। আশআশের ফিসফিস শব্দ শুনার পর তাকে লক্ষ্য করে চোখ রাঙিয়ে ধমকালেন এবং দ্রুত মসজিদ থেবে বেরিয়ে গেলেন। কিন্তু তিনি যখন হযরত আলীর বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন তখন হযরত আলী তাঁর কন্যা উম্মে কুলসুমের বাড়ি থেকে ভিন্ন পথে মসজিদে এসে পৌঁছে গেলেন।
হযরত আলীর কোন দেহরক্ষী দল ছিল না। সবার অনুরোধেও তিনি এ দল গঠন করেননি। একাকী চলাফেরা করতেন। সে রাতেও কেউ কেউ তাঁর সঙ্গে থাকার অনুমতি চাইলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
হযরত আলী মসজিদে প্রবেশ করেই মুসল্লীদের লক্ষ্য করে ঘোষণা দিলেন : ‘হে লোক সকল! নামাযের সময় হয়ে আসছে। তাড়াতাড়ি তৈরি হও।’
ঠিক এ সময় মসজিদের আঁধার ভেদ করে দু’টি শামশীর চকচক করে উঠল মাথার ওপর। দুই নরাধম চিৎকার করে উঠল, ‘শাসনের মালিক একমাত্র আল্লাহ। হে আলী! বুঝে নাও তোমার প্রাপ্য।’
প্রথম আঘাত হানল শাবিব ইবনে বুজরা। কিন্তু তার আঘাত গিয়ে ঠেকল মসজিদের দেয়ালে। দ্বিতীয় আঘাত হানল আবদুর রহমান। এ আঘাতে হযরত আলী (আ.)-এর মস্তক মুবারক ভেদ করল। অন্যদিকে হুজর ইবনে আদি দৌড়ে এসে পৌঁছলেন মসজিদে। কিন্তু ততক্ষণে তাঁর কানে ভেসে এল জনতার রোল, ‘আমীরুল মুমিনীন শহীদ হয়েছেন, আমীরুল মুমিনীন খুন হয়েছেন।’
হযরত আলীকে খুন করার পর তিন পাষণ্ডই মসজিদ থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। কিন্তু জনতা আবদুর রহমানকে ধরে ফেলে। শাবিব তার এক চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিলেও ওই চাচাতো ভাই যখন জানতে পারল তার অপকর্ম তখন তাকে সেখানেই হত্যা করে।
হযরত আলীর মাথায় যখন আঘাত লাগে তৎক্ষণাৎ জনতার কানে ভেসে এল হযরতের কণ্ঠ : ‘কা’বা ঘরের মালিকের কসম। আমি কামিয়াব হয়েছি।’
বিষমাখা তলোয়ারের মারাত্মক আঘাত হযরতের মগজে গিয়ে লাগে। সব ধরনের চিকিৎসা ব্যর্থ হয়। দু’দিন পর ২১ রমযান আল্লাহর এই ঘনিষ্ঠতম অলি শাহাদাতের শরবত পান করেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ওদিকে সুন্দরী রমণী কেতামকে নিয়ে ঘর-সংসার করার যে স্বপ্ন আবদুর রহমান দেখেছিল তা মরীচিকায় পরিণত হলো। হযরতের নির্দেশে তাঁর শাহাদাতের পর এই মুরতাদ পাষণ্ডকে তারই বিষমাখা শামশীরের এক আঘাতে জাহান্নামে পাঠানো হয়।
ভাষান্তর : মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন খান
(নিউজলেটার, মে ১৯৯২)