সিহাহ সিত্তার ছয় জন ইমামের মোট মুখস্তকৃত সহীহ হাদীস শরীফ সংখ্যা ২৩ লক্ষ।
উনাদের কিতাবে বর্ণনা করেছেন পূরাবৃত্তি ব্যাতীত সর্বমোট ২৩,৩৪৬ টি হাদীস শরীফ। মজার কথা হচ্ছে সালাফীরা আবার সিহাহ সিত্তার মধ্যে অনেক হাদীস শরীফকেও মওজু বলে। যাক সেটা অন্য কথা। এখন হাদীস শরীফ যদি ২৩,৩৪৬ টি হয় বাকি ২২,৭৬,৬৫৪ টি হাদীস শরীফের কি ফয়সালা? সেগুলো কোথায়?
সিহাহ সিত্তার বাইরে আরো অর্ধশত হাদীস শরীফের কিতাবের নাম
এখনকার সময়ের মানুষের জন্য আফসোস তারা পবিত্র হাদীস শরীফ সম্পর্কে জানে না। আর বিশেষ করে ওহাবী সম্প্রদায়ের অপপ্রচারের ফলে মানুষের অজ্ঞতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা প্রচার করে থাকে সিহাহ ছিত্তাহর বাইরে আর কোন হাদীস শরীফ নেই। নাউযুবিল্লাহ!!
মূলতঃ সিহাহ ছিত্তার বাইরেও অসংখ্য সহীহ হাদীসের কিতাব রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম নববী রহমাতুল্লাহি আলাইহি , ইবনুস সালাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি , হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রমূখ বিখ্যাত হাদীস শরীফ বিশারদগন বলেন, সিহাহ ছিত্তাহ ছাড়াও আরো ৫০ এরও বেশি সহীহ হাদীস শরীফের কিতাব আছে।
নিম্নে এর কতিপয় কিতাবের নাম মুবারক উল্লেখ করা হলো-
◾(১) মুসনাদুল ইমাম আবু হানীফা।
বিলাদাত- ৮০ হিজরী, ওফাত- ১৫০ হিজরী।
◾(২) আল মুয়াত্তা লি ইমাম মালেক।
জন্ম- ৯৫ হিজরী, ওফাত- ১৭৯ হিজরী।
◾(৩) আল মুয়াত্তা লি ইমাম মুহম্মদ ।
জন্ম- ১৩৫ হিজরী, ওফাত- ১৮৯ হিজরী।
◾(৪) আল মুছান্নাফ লি আব্দুর রাজ্জাক।
জন্ম- ১২০/১২৬ হিজরী, ওফাত- ২১১ হিজরী।
◾(৫) মুসনদে আহমদ বিন হাম্বল।
জন্ম- ১৬৪ হিজরী, ওফাত- ২৪১ হিজরী।
◾(৬) মুসনাদুত তায়লাসী।
জন্ম-___, ওফাত- ২০৪ হিজরী।
◾(৭) কিতাবুল আছার লি ইমাম আবু ইউছুফ।
জন্ম- ১১৩ হিজরী, ওফাত- ১৮২ হিজরী।
◾(৮) মুসনাদুল হুমায়দী।
জন্ম-____ , ওফাত- ২১৯ হিজরী
◾(৯) মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ।
জন্ম- ১৫৯ হিজরী, ওফাত- ২৩৫ হিজরী।
◾(১০) আল জামিউল মুসনাদুছ ছহীহুল মুখতাছারু মিন উমুরি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়া সুনানিহী ওয়া আইয়ামিহী ( বুখারী শরীফ)
জন্ম- ১৯৪ হিজরী, ওফাত- ২৫৬ হিজরী।
◾(১১) আছ ছহীহুল মুসলিম ।
জন্ম- ২০৪ হিজরী, ওফাত- ২৬১ হিজরী।
◾(১২) সুনানু আবু দাউদ।
জন্ম- ২০২ হিজরী, ওফাত- ২৭৫ হিজরী।
◾(১৩) আল জামিউ ওয়াস সুনানুত তিরমিযী।
জন্ম- ২১০ হিজরী, ওফাত ২৭৯ হিজরী।
◾(১৪) সুনানুন নাসায়ী।
জন্ম- ২১৫ হিজরী, ওফাত- ৩০৩ হিজরী।
◾(১৫) সুনানু ইবনে মাজাহ।
জন্ম- ২০৯ হিজরী, ওফাত- ২৭৩ হিজরী।
◾(১৬) সুনানুদ দারিমী।
জন্ম- ১৮১ হিজরী, ওফাত- ২৫৫ হিজরী।
◾(১৭) মুসনাদুল বাযযার।
জন্ম-_____ , ওফাত- ২৯২
◾(১৮) শরহু মা’আনিল আছার (ত্বাহাবী শরীফ)
জন্ম- ২২৯ হিজরী, ওফাত- ৩২১ হিজরী।
◾(১৯) ছহীহ ইবনে হিব্বান।
জন্ম- ৩৫৪ হিজরী, ওফাত- ৪৬৫ হিজরী।
◾(২০) মাছাবিহুস সুন্নাহ ও মিশকাত।
জন্ম- ৪৩৬ হিজরী, ওফাত- ৫১৬ হিজরী।
◾(২১) আল মু’জামুছ ছগীর লিত তাবরানী।
জন্ম- ২৬০ হিজরী, ওফাত- ৩৬০ হিজরী।
◾(২২) আল মু’জামুল আওসাত লিত ত্বাবরানী।
জন্ম- ২৬০ হিজরী, ওফাত- ৩৬০ হিজরী।
◾(২৩) আল মু’জামুল কবীর লিত তাবরানী।
জন্ম- ২৬০ হিজরী, ওফাত- ৩৬০ হিজরী।
◾(২৪) আল মুস্তাদরাক আলাছ ছহীহাইন।
জন্ম- ৩২১ হিজরী, ওফাত- ৪৫০ হিজরী।
◾(২৫) ছহীহ ইবনু খুযাইমাহ।
জন্ম- ২২৩ হিজরী, ওফাত- ৩১১ হিজরী।
◾(২৬) আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৪৫৮ হিজরী।
◾(২৭) আস সুনানুছ ছগীর লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৪৫৮ হিজরী।
◾(২৮) শুয়াইবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৪৫৮ হিজরী।
◾(২৯) মা’রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৩৫৮ হিজরী।
◾(৩০) শরহুস সুন্নাহ লিল বাগবী।
জন্ম- ৪৩৬ হিজরী, ওফাত- ৫১৬ হিজরী।
◾(৩১) মা’রিফাতুছ ছাহাবা লি আবী নুয়াইম।
জন্ম- ৩৩৬ হিজরী, ৪৩০ হিজরী।
◾(৩২) জামিউল আহাদীস লিছ সূয়ুতি।
জন্ম- ৮৪৯ হিজরী, ওফাত- ৯১১ হিজরী।
◾(৩৩) গায়াতুল মাক্বছাদ ফী যাওয়ায়িদিল মুসনাদ।
জন্ম- ৭৩৫, ওফাত- ৮০৭ হিজরী।
◾(৩৪) কানযুল উম্মাল।
জন্ম-_____ , ওফাত- ৯৭৫ হিজরী।
◾(৩৫) আখবারু মক্কতা লি আযরাক্বী।
◾(৩৬) ছহীহ ইবনে ওয়ায়না।
◾(৩৭) সহীহ ইবনুস সাকান।
◾(৩৮) সহীহ মোন্তাকা।
◾(৩৯) মুখতাসা রেজিয়াহ।
◾(৪০) সহীহ যুরকানী।
◾(৪১) সহীহ ইসফেহানী।
◾(৪২) সহীহ ইসমাঈলী।
◾(৪৩) কিতাবুল খেরাজ।
◾(৪৪) কিতাবুল হেজাজ।
◾(৪৫) কিতাবুল আ’মলী।
◾(৪৬) মুসনাদে শাফেয়ী।
◾(৪৭) মুসনাদে আবু ইয়ালা।
◾(৪৮) মুসনাদে দারে কুতনী।
◾(৪৯) কিতাবুল ই’তিকাদ।
◾(৫০) কিতাবুদ দোয়া।
◾(৫১) মুসনাদে হারেস ইবনে উমামা।
◾(৫২) মুসনাদে বাজ্জার।
◾(৫৩) সুনানে সাঈদ ইবনে মনছুর।
◾(৫৪) সুনানে আবী মুসলিম।
◾(৫৫) শিফা শরীফ।
◾(৫৬) আল হুলইয়া।
◾(৫৭) তাহযীবুল আছার।
◾(৫৮) আল মুখতারা।
◾(৫৯) জামিউল মাসানিদ ওয়াস সুনান
(((( রহমাতুল্লাহি আলাইহিম )))
এছাড়াও আরো অসংখ্য অগনিত সহীহ হাদীস শরীফের কিতাব রয়েছে। সুবহানাল্লাহ্!
মুলত হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়াতে তাশরীফ মুবারক হতে শুরু করে বিছাল শরীফ পর্যন্ত অর্থাৎ ৬৩ বছর পর্যন্ত যত কথা, কাজ, সম্মতি প্রকাশ করেছেন সবই পবিত্র হাদীস শরীফের অন্তর্গত। কিন্তু উছুল অনুযায়ী যদি ৪০ বছর মুবারক থেকে ৬৩ বছর মুবারক পর্যন্ত ২৩ বছরও যদি ধরি, এই ২৩ বছরে যত কথা, কাজ, সম্মতি প্রদান করেছেন সবই হাদীস শরীফ।
অংক করে দেখুন,
২৩×৩৬৫= ৮৩৯৫ দিন।
আবার, ৮৩৯৫×২৪= ২০১৪৮০ ঘন্টা।
আবার, ২০১৪৮০×৬০= ১২০৮৮৮০০ মিনিট।
অর্থাৎ মিনিটে হিসাব করলেও এক কোটি বিশ লক্ষ আটাশি হাজার আটশত মিনিট।
এখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতিটা কওল, ফেল, তাকরীর সবই যদি হাদীস শরীফ হয় চিন্তা এবং ফিকিরের বিষয় ২৩ বছরে কতগুলো হাদীস শরীফ হবে।
অথচ আজকাল কিছু ওহাবী খারেজীরা বলে বুখারী মুসলিম ছাড়া আর কিছু মানি না। নাউযুবিল্লাহ!!
তাদের কাছে প্রশ্ন তবে কি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২৩ বছরে মাত্র দশ হাজার কওল (কথা), ফেল (কাজ), তাকরীর( মৌন সম্মতি) করেছেন ?
বিবেক বোধ কি কিছু আছে নাকি নষ্ট হয়ে গেছে ???
এই কিতাবের তালিকাই দেখুন। ওহাবীরা এর কয়টা নাম জানে ? এসব কিতাব কি তারা কখনো দেখেছে না গবেষনা করেছে ?
এসব কিতাব দেখাতো দূরের কথা তারা মূল আরবি বুখারী শরীফ মুসলিম শরীফই চোখে দেখে নাই। শুধু বুখারী শরীফ পড়তেই এদের সারা জীবন লেগে যাবে আর এসকল কিতাব যাচাই করবে কখন? উক্ত তালিকায় এমনও অনেক কিতাব আছে যার এক একটাতেই ২০-৫০ হাজারেরও বেশি হাদীস শরীফ আছে। কয়টা তারা পড়েছে? কয়টার রাবির জীবনি সম্পর্কে ধারনা আছে? কোন যোগ্যতায় তারা হাদীস অস্বীকার করে?