মহিলাদের কর্মক্ষেত্রে ইসলামী পরিবেশ

সমাজে পুরুষদের মতো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মহিলাদেরও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের অধিকার আছে। তবে মহিলাদের কাজের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত দিকগুলোর প্রতি দৃষ্টি রাখতে হবে।

সমাজের কল্যাণ : একটি নির্দিষ্ট কাজ সমাজে কী প্রভাব ফেলবে সে বিষয়টির ব্যাপারে মহিলাদের পূর্ব থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কাজটি নেতিবাচকনা ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে এবং সমাজের সুস্থ উন্নয়নে সহায়তা করবেনা নৈতিক অবক্ষয় ঘটাবে- তা বিবেচনা করতে হবে।

পরিবারের কল্যাণ : পরিবারকে যেহেতু সামাজিক জীবনের ভিত্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয় সেহেতু এটাকে অবশ্যই সুস্থ ও সমৃদ্ধ রাখতে হবে। যদি কোন মহিলা বা মা কাজে নিয়োজিত থাকার কারণে পরিবারের স্বাস্থ্য ও স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে স্নেহময় সম্পর্কের অবনতি ঘটে তাহলে সেই কাজ ত্যাগ করা উচিত।

ব্যক্তিগত কল্যাণ : একজন মহিলার জন্য কাজের পরিমাণ কতটুকু যুক্তিযুক্ত তা বিবেচনা করা উচিত। এই কাজ কি একজন মহিলার পদমর্যাদা বৃদ্ধি করবে এবং তার মানসিক বিকাশে সহায়ক হবেতার কাজের সম্পর্ক কি পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে তার দূরত্ব সৃষ্টি করবেকাজটি কি তার পরিস্থিতির উপযোগীনা অনুপযোগীএই বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে।

সম্ভাবনা ও ক্ষমতা : অন্যদের কাজে নিয়োগের সময় কয়েকটি বিষয়ে বিশেষ সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। সেগুলো হচ্ছে : ঐ বিশেষ কাজটির জন্য কে অধিকতর উপযুক্তকার দ্বারা বেশি উৎপাদন পাওয়া সম্ভবকার সম্ভাবনা অধিকতর এবং কে সেই কাজটি দক্ষতার সঙ্গে করতে পারবে?

সাধারণভাবে উপরিউক্ত বিষয়গুলো মনে রাখলে প্রায় প্রতিটি কাজেই মহিলা নিয়োগ করা যায়। এ বিষয়গুলো মহিলাদের কাজের পথে কোনরূপ অন্তরায় হয় না। তবে এখানে সমাজের সাহায্য ও কল্যাণের কথাটি মনে রাখতে হবে। সমতার অর্থাৎ যদি দায়িত্বের সমান ভাগ হয় এবং পুরুষের মতোই মহিলারাও ভারী কাজ করবে বলে আশা করা হয়তাহলে সেটা সমতা হবে না। একথা মনে করা দরকার যেরাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে মহিলাদের অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি দেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই হচ্ছে নারী। তাদের রাজনৈতিক সচেতনতা ও অংশগ্রহণের ওপরই একটি সমাজের ভাগ্য পরিবর্তন এবং ভালো-মন্দ নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়ইরানে ইসলামী বিপ্লব যখন তুঙ্গে তখন এই ধরনের ঘটনা দৃষ্টিগোচর হয়। শিশু কোলে ও ছোট ছেলেমেয়েদের পাশে নিয়ে মহিলারা স্বৈরাচারী শাহের বিরুদ্ধে  বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। ঐ সময় বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে গিয়ে শাহের সৈন্যদের গুলিতে বেশ কয়েকজন মা ও তাদের শিশুসন্তান শহীদ হয়েছে। আজকের দিনে মহিলাদের বিপ্লবের স্তম্ভ’ বলে বিবেচনা করা হয়। তারা বিপ্লবের সাফল্য ও বিকাশে সম্ভাব্য সব উপায়ে সাহায্য করে যাচ্ছে।

(নিউজলেটারসেপ্টেম্বর ১৯৯১)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.