যাকাতুল ফিতরা প্রশ্ন ও উত্তর

যাকাতুল ফিতরা কী?

উত্তর: এটা এক প্রকার ধর্মীয় কর/দান (যাকাত) যা রমজান মাসের শেষে যখন মুসলমানরা রোজা ভঙ্গ করে সেই দিন আদায় করা হয়। এই দান যাকাত আল-ফিত্‌রা হিসাবে পরিচিত। অনেক ক্ষেত্রে যাকাত আল-ফিত্‌রাকে সাদাক্বাহ্‌ আল-ফিত্‌রা বলা হয়। ফিত্‌র শব্দটি ইফতার শব্দের সমার্থক; রোজা ভঙ্গ করা, এবং এটি একই মূলশব্দ ফুতুর থেকে এসেছে যার অর্থ উপবাসভঙ্গ। সুতরাং, ইসলাম মোতাবেক, রমজানের রোজা শেষে যেই দান দেওয়া হয় তার নাম যাকাত আল-ফিত্‌র।

প্রশ্ন: কোরআন এবং হাদীস ফিতরা ব্যাপারে কি বলে?
উত্তর: ইমাম (আঃ)-রা বলেন যে এই আয়াতগুলো: ‘নিশ্চই যে নিজেকে পবিত্র করে সাফল্য লাভ করবে, এবং তার রবের নাম মহিমান্বিত করে এবং প্রার্থনা করে’ (৮৭:১৪ ও ১৫) ফিত্রা দান এবং ঈদুল ফিত্রের নামাজের প্রতি নির্দেশ করে। ইমাম জাফর আস-সাদিক (আঃ) বলেছেন: তোমার রোজা কবুল করার জন্য যাকাত আদায় কর।

৪। উদ্দেশ্য
যাকাত আল-ফিত্রের মূল উদ্দেশ্য হল যারা রোজা রেখেছে রমজান মাসে তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতির প্রায়শ্চিত্ত করার পথ করে দেওয়া। যাকাত আল-ফিত্‌র গরীবদেরকে একটা উপায়ও দেয় যা দিয়ে তারা অন্যন্য মুসলমানদের সাথে রোজা ভঙ্গের উৎসব (ঈদুল ফিত্‌র) উদযাপন করতে পারে। 
ইবন আব্বাস রেওয়ায়াত করেছেন, ‘নবী (সাঃ) যাকাত আল-ফিত্‌র ফরজ করেছেন যাতে যারা রোজা রাখবে তারা তাদের অনর্থক আমল এবং লজ্জাকর কথা (রমজানে কৃত) হতে পবিত্র হতে পারে এবং যাতে গরীবরা খেতে পারে। যে-ই এটা নামাজের আগে পরিশোধ করে সে তা যাকাত হিসাবে গৃহীত করাবে, এবং যে এটা নামাজের পরে পরিশোধ করে সে যেন সদকাহ্‌ দিল।’ (আবু দাউদ- ইংরেজী অনুবাদ, খন্ড ২, পৃঃ ৪২১, নং ১৬০৫- শেইখ নাসের আল-আলবানী দ্বারা সহীহ্‌ সনদপ্রাপ্ত)

প্রশ্ন: ফিত্রা কখন ওয়াজিব হয়?
উত্তর: ফিত্‌রা ঈদুল ফিত্‌রের আগের দিনে সূর্যাস্তের পর পরিশোধ করা ওয়াজিব হয়ে যায়। ফিত্‌রা আলাদা সরিয়ে রাখা উচিৎ এবং ঈদুল ফিত্‌রে ঈদের নামাজের আগে বা যারা ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবে না তাদের মধ্যাহ্নের আগে পরিশোধ করতে হবে। শুধুমাত্র আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ফিত্‌রা আদায় করার ওয়াজিব নিয়ত রাখা জরুরী। শেষোক্ত মতটি ইবন আব্বাস হতে একটি হাদীসের উপর ভিত্তি করে, তিনি রেওয়ায়াত করেছেন, ‘রসুলুল্লাহ্‌ (সাঃ) যারা রোজা রাখে তাদের যাকাতুল ফিত্‌র দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন তাদেরকে অশ্লীল কাজ বা কথা হতে রক্ষা করবার জন্য এবং দরিদ্রদের খাদ্য দেবার উদ্দেশ্যে। যিনি তা ঈদের নামাজের পূর্বে পরিশোধ করবেন সেটা যাকাত হিসাবে গৃহীত হবে আর যিনি তা নামাজের পরে পরিশোধ করবে সেটা হবে সদকাহ্‌।’ [আবু দাউদ- ইংরেজী অনুবাদ, খন্ড ২, পৃঃ ৪২১, নং ১৬০৫- সহীহ্‌ হিসাবে গণ্য] 
নাফি রেওয়ায়াত করেছেন যে নবীর সাহাবী ইবন ওমর তাদেরকে দিতেন যারা তা গ্রহণ করত এবং লোকেরা তা ঈদের এক বা দুই দিন পূর্বে দিতেন। [বুখারী- আরবী/ইংরেজী, খন্ড ২, পৃঃ ৩৯৯, নং ৫৭৯]
প্রশ্ন: যদি কেউ ফিত্রা সময় মত দিতে ভুলে যায় বা না দেয় কী হবে?
হযরত ইমাম জাফর-এ-সাদিক (আঃ) বলেছেন যে রোজা ফিত্র ছাড়া পূর্ণতা পায় না ঠিক যেভাবে তাশাহুদে মুহম্মদ (সাঃ) এবং তার বংশধর (আঃ)-এর প্রতি সালাওয়াতুল্লাহ্‌ পাঠ ছাড়া নামাজ পূর্ণতা পায় না। 
উত্তর: যদি কেউ ফিত্রা নির্দিষ্ট সময়ে আদায় না করেন বা আলাদা সরিয়ে না রাখেন, উনাকে ফিত্রা পরে আদায় করতে হবে, এহ্তিয়াতের (সতর্কতা) উপর ভিত্তি করে, আদা বা কাযার নিয়ত না করে কেবল মাত্র ক্বুরবাতান ইলাল্লাহ।
এবং ইবন আব্বাস রেওয়ায়াত করেছেন যে নবী (সাঃ) বলেছেন, “যেই তা নামাজের পূর্বে আদায় করে সে তা যাকাত হিসাবে কবুল করিয়ে নিবে এবং যে তা নামাজের পরে আদায় করে সে তা পারবে না যেহেতু তা শুধু সাধারণ দান হিসাবে গণ্য হবে।” সুতরাং, যে এই যাকাতুল ফিত্‌র সময় মত দিতে ভুলে যায় তার উচিৎ তা যত জলদি সম্ভব আদায় করা যদিও তা যাকাতুল ফিত্‌র হিসাবে গণ্য হবে না।

প্রশ্ন: আমরা কি ফিত্রা অগ্রীম দিতে পারি?
উত্তর: ঈদুল ফিত্রের আগের দিনের পূর্বে ফিত্রা দেওয়া অনুমোদিত নয়। তবে আপনি যদি ফিত্রা আগে পাঠিয়ে দিতে চান যাতে করে তা গরীবদের কাছে সময় মত পৌঁছায় তাহলে আপনি সেটি গরীবদের কাছে একটা সাময়িক ঋণ হিসাবে পাঠিয়ে দিতে পারেন এবং তারপর ঈদুল ফিত্রের আগের দিন আপনার নিয়ত ঋণ থেকে ফিত্রায় পরিবর্তন করতে পারেন।
প্রশ্ন: কার প্রতি ফিত্রা ওয়াজিব?
উত্তর: হযরত ইমাম জাফর সাদিক (আঃ) উনার হিসাবরক্ষককে কোন ব্যাতিক্রম ছাড়া দাস এবং ভৃত্য নারী-পুরুষ সহ উনার বাড়ীর প্রত্যেক ব্যক্তির ফিত্র সরিয়ে রাখতে নির্দেশ করতেন, যেহেতু উনি শঙ্কিত হতেন যে যার ফিত্র সরিয়ে রাখা হবে না সে এক বছরের মধ্যে মৃত্যুবরণ করতে পারে।
হযরত ইমাম জাফর সাদিক (আঃ): ফিত্র প্রাপ্য মুমিনদের দিতে হবে যাদের সারা বছর তাদের পরিবারদেরকে খরপোশ করবার মত যথার্থ আয় নেই।
ফিত্র নিজের উপর নির্ভরশীল কাউকে দেওয়া যাবে না। কিন্তু, এটা অনির্ভর প্রাপ্য আত্মীয়দের দেওয়া উত্তম।
অগ্রাধিকারের এই ধারার পরে রয়েছে প্রাপ্য পড়শীরা এবং তারপর অন্যন্য প্রাপ্য তাকওয়াবান ব্যক্তিবর্গ।
সৈয়দদের থেকে ফিত্‌র সৈয়দদের বা অসৈয়দদের দেওয়া যাবে। অসৈয়দদের থেকে ফিত্‌র সৈয়দদের দেওয়া যাবে না।
ফিত্‌রা পরহেজগার ব্যক্তিদের দেওয়ার কথা বলা আছে এবং যারা গুনাহে লিপ্ত হয় তাদেরকে নয়।
যদি প্রাপ্য ব্যক্তিদের সত্যিকার অর্থে পাওয়া না যায় তাহলে ফিত্‌র ওইসব জায়গায় পাঠাতে হবে যেখানে সেরকম ব্যক্তি পাওয়া যায়, অথবা মূল্যটি একজন মুজতাহিদের কাছে পাঠাতে হবে যিনি তা বিতরন করবার প্রয়োজনীয় কাজটি করবে।
এটা জরুরী নয় যে ফিত্‌রের গ্রাহককে একজন ‘আদিল’ (ন্যায়বান) হতে হবে, তবে এটা নিশ্চিত করা জরুরী যে তা এমন কাউকে দেওয়া হচ্ছে না যিনি তা কোন গুনাহ্‌র কাজে ব্যবহার করতে পারে, যথা মদ্যপান, জুয়া ইত্যাদি।
ফিত্‌র দেওয়ার সময় ঈদুল ফিত্‌রের (রমজানের ঈদ) রাত হতে ঈদুল ফিত্‌রের দুপুর (জোহর) পর্যন্ত। যদি এটা কোন কারণে সম্ভব না হয় ফিত্‌রের অর্থটি তার অন্যন্য অর্থ হতে সরিয়ে রাখা উচিৎ এবং যখন প্রাপ্য ব্যক্তি পাওয়া যাবে তখন দিয়ে দিতে হবে অথবা তা কোন একজন মুজতাহিদের কাছে পাঠাতে হবে প্রয়োজনীয় বিতরনের জন্য।
ক) প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক (বালিগ), সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী এবং সজ্ঞান মুসলমানের উপর ঈদুল ফিত্‌রের আগের দিন ফিত্‌রা আদায় করা ওয়াজিব। ফিত্‌রা সকল অধীনস্থদের (যথা স্ত্রী, সন্তান), যাদেরকে একজন আর্থিকভাবে ভরনপোষণ করেন, পক্ষ হতেও পরিশোধ করা উচিৎ। সাদাক্বাহ্‌ আল-ফিত্‌র হলো এমন এক দায়িত্ব যা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ওয়াজিব (বাধ্যতামূলক), চাহে পুরুষ বা মহিলা, ছোট বা বড় যতক্ষণ পর্যন্ত তার তা করবার উপায় আছে।
এই রকমের দানটি যে বাধ্যতামূলক তার দলিল সুন্নাহ্‌তে পাওয়া যাবে যেখানে ইবন ওমর রেওয়ায়াত করেছেন যে রসুল (সাঃ) যাকাতুল ফিত্‌র মুসলমানদের মধ্যে প্রত্যেক দাস, আজাদ ব্যক্তি, নারী, পুরুষ, যুবক এবং বৃদ্ধের উপর বাধ্যতামূলক করেছেন; এক সা’ খুরমা বা এক সা’ যব। (বুখারী- আরবী/ইংরেজী, খন্ড ২, পৃ ৩৩৯, নং ৫৭৯)
বাড়ীর কর্তা অন্যন্য সদস্যদের জন্য নির্দিষ্ট মূল্যটি দিয়ে দিতে পারে। আবু সাঈদ আল-খুদরী বলেছেন, “আল্লাহ্‌র রসুল (সাঃ)-এর জীবনকালে আমরা আমাদের তরুণ এবং বৃদ্ধ, আজাদ এবং দাসদের পক্ষ হতে এক সা’ শস্য, পনির বা কিসমিস সরিয়ে রাখতাম।” (মুসলিম- ইংরেজী অনুবাদ। খন্ড ২, পৃঃ ৪৬৯, নং ২১৫৫)
হযরত আব্দুল্লাহ্‌ ইবন উমর (রাঃ) বলেছেন আল্লাহ্‌র রসুল (সাঃ) মুসলমানদের থেকে দাস ও আজাদ ব্যক্তি, নারী এবং পুরুষ, জওয়ান এবং বৃদ্ধদের যাকাত এক সা’ খুরমা বা এক সা’ যবের মাধ্যমে পরিশোধযোগ্য হবার নির্দেশ দিয়েছেন, এবং এটি মানুষ ঈদের নামাজের জন্য বের হবার পূর্বে আদায় করবার হুকুম দিয়েছেন।
(বুখারী ও মুসলিম)
প্রশ্ন: একজন অতিথিসেবকের উপর তার অতিথির জন্য ফিত্‌রা দিতে হয়?
হযরত ইমাম জাফর-এ-সাদিক (আঃ): যদি একজন মুসলিম বা অমুসলিম অতিথি একজনের বাসায় ঈদুল ফিত্রের আগের রাতে আসেন এবং তার অতিথিসেবকের সাথে খাবার খান, তাহলে অতিথিসেবকের উপর তার জন্য ফিত্রা দেওয়া অবশ্যক হয়ে পড়ে। অতিথি যদি সূর্যাস্তের পরে ঈদুল ফিত্রের আগের রাতে আসেন তাহলে ফিত্রা ওয়াজিব নয় যদি উনি তার সাথে খাবারও খান। যদি অতিথি সূর্যাস্তের পূর্বে এসে খাবার নাও খান অতিথিসেবকের উপর ফিত্‌র ওয়াজিব। এই ক্ষেত্রে এটা উত্তম যদি উভয় অতিথিসেবক এবং অতিথি ফিত্‌র দেন।
যদি একজন ব্যক্তি আরেকজন ব্যক্তিকে ঈদুল ফিত্‌রের আগের দিন তার বাসায় নিমন্ত্রণ করেন এবং যদি অতিথিটি অতিথিসেবকের বাসায় সূর্যাস্তের সময় উপস্থিত থাকেন তাহলে অতিথির জন্য ফিত্‌রা দেওয়া অতিথির উপর ওয়াজিব হয়ে পড়ে।
প্রশ্ন: অতিথি যদি ঈদের রাতে সূর্যাস্তের পর আসেন তাহলে কী হবে?
উত্তর: এই ক্ষেত্রে অতিথি উনার নিজের ফিত্রা দিবেন এবং অতিথিসেবকের উপর অতিথির জন্য ফিত্রা দেওয়া ওয়াজিব নয়।
প্রশ্ন: যদি একজন অতিথি ঈদুল ফিত্রের আগের দিন সূর্যাস্তের সময় অনামন্ত্রিত আসেন তাহলে কী হবে?
উত্তর: আয়াতুল্লাহ্ সায়্যিদ আস-সিস্তানী বলেন যে তবুও অতিথিসেবককে ওয়াজিব এহ্তিয়াত হিসাবে ফিত্রা আদায় করতে হবে। তবে মরহুম আয়াতুল্লাহ্ সায়্যিদ আল-খুয়ী এই মতের ছিলেন যে অতিথির জন্য অতিথিসেবকের ফিত্রা দেওয়া মুস্তাহাব।
প্রশ্ন: আমরা ফিত্রা কত দিব?
উত্তর: একজনের ফিত্রা তিন কিলগ্রাম (এক সা’) যে কোন খাদ্য পণ্যের, যেমন গম, যব, চাল, জনার, কিসমিস বা খেজুর, উপর দেওয়া হয়। আয়াতুল্লাহ্ সিস্তানী এই মতের যে পণ্যটি আপনার শহেরের প্রধান খাদ্য নয় তা ফিত্রা হিসাবে দেওয়া উচিৎ নয়।
উদাহরণ স্বরূপ, ধরুন, ভ্যানকুভারে জনার যদি প্রধান খাদ্য না হয় তাহলে ভ্যানকুভারের মুমিনীনরা জনারের উপর ফিত্‌রা দিবে না। এরকম দান যে ওয়াজিব তার প্রমাণ এই সুন্নাহ্‌তে পাওয়া যায় যেখানে ইবন ওমর রেওয়ায়াত করেছেন যে নবী (সাঃ) প্রত্যেক মুসলমান দাস, আজাদ ব্যক্তি, নারী, পুরুষ, জওয়ান ও বৃদ্ধের উপর এক সা’ (প্রায় ৩.২৫ কিঃগ্রাঃ) খুরমা বা এক সা’ যব যাকাতুল ফিত্‌রা ওয়াজিব করেছেন।
[সহীহ্‌ বুখারী- আরবী/ইংরেজী, খন্ড ২, পৃঃ ৩৩৯, নং ৫৭৯]
যাকাতের মূল্য প্রত্যেকের জন্য সমান তাদের ভিন্ন আয় এখানে অবিবেচ্য। নুন্যতম মূল্য হলো পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের জন্য এক সা’ (দুই মুঠো) খাদ্য, শস্য বা শুকনো ফল। এই হিসাবটি ইবন ওমরের এই রেওয়ায়াতের উপর ভিত্তি করে যে রসুল (সাঃ) যাকাতুল ফিত্‌র পরিশোধ ওয়াজিব করেছে এক সা’ খুরমা বা এক সা’ যবের মাধ্যমে।
সাহাবী, আবু সাঈদ আল-খুদরী বলেছেন, “নবীর সময়, আমরা এটা (যাকাতুল ফিত্‌র) দিতাম এক সা’ খাদ্য, খুরমা, যব, কিসমিস বা শুকনো পনীর হিসাবে।”
(আল-বুখারী- আরবী/ইংরেজী খন্ড ২, পৃঃ ৩৪০, নং ৫৮২)
প্রশ্ন: আমরা কি উপরোল্লেখিত যে কোন পণ্যের নগদ মূল্য দিতে পারি?
উত্তর: হ্যাঁ, ফিত্রা হিসাবে উল্লেখিত খাদ্যদ্রব্যের বদলে নগদ মূল্য দেওয়া যাবে। সুতরাং, যদি এক কিলো চালের দাম $২.০০, প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ফিত্‌রার নগদ মূল্য হবে $৬.০০। আমরা পরামর্শ দেই যে কানাডার অধিবাসীদের ফিত্রা বাসমতি চালের উপর ৭.০০ কানাডীয় ডলার এবং মার্কিন অধিবাসীদের জন্য ৬.০০ মার্কিন ডলার। (অনুগ্রহ করে আপনার এলাকায় অন্যন্য দ্রব্যের দাম সন্ধান করে নিন)
প্রশ্ন: আমরা ফিত্রা কাদেরকে দিব?
উত্তর: এটা দরিদ্রদের দেওয়া উচিৎ যারা নিজেদের বা তাদের অধীনস্তদের বাৎসরিক থাকার খরচ মেটাতে অক্ষম এবং তাদের আয়ের মাধ্যমেও তা করবার উপায় নেই। আয়াতুল্লাহ্ আস-সিস্তানী বলেন যে ফিত্রা যেই দরিদ্রকে দেওয়া হচ্ছে তাকে শিয়া ইস্না আশারী হতে হবে।
প্রশ্ন: ফিত্রা কাকে দেওয়া উচিৎ হবে না?
উত্তর: একজন দরিদ্র যে: মদ পান করে, প্রাত্যহিক নামাজ আদায় করে না (সালাত), প্রত্যক্ষে গুনাহ্ করে, বা যে তার ফিত্রা পাপী কাজে ব্যবহার করে বলে পরিচিত।
প্রশ্ন: আরও কি কোন বাড়তি নিয়ম আছে যার ব্যাপারে আমাদের সচেতন হওয়া উচিৎ?
উত্তর: নিম্নোক্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম:
১) একজন যেই শহরে থাকেন তার বাইরে ফিত্‌রা পাঠাতে হবে যদি সেই শহরে প্রাপ্য মুমিনীনরা থাকে।
২) একজন অসৈয়দ হতে একজন দরিদ্র সৈয়দকে ফিত্‌রা দেওয়া যাবে না; উল্টোটি জায়েজ।
৩) একজন দরিদ্রকে একটি ফিত্‌রা দেওয়া উচিৎ।
৪) দরিদ্রদের মধ্যে, ফিত্‌রা দেওয়ার সময় আত্মীয়দের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিৎ, তারপর রয়েছে পড়শীরা এবং তারপর আলেমরা।
হযরত ইমাম জাফর-এ-সাদিক (আঃ): একজন মানুষ সারা বছর যেই প্রধান খাদ্যদ্রব্য খায় তার উপর ফিত্রা নির্ভর করে। এগুলো চাল, গম, যব, খেজুর ইত্যাদি হতে পারে। বাড়ীতে যে সকল মানুষেরা খাবার খান (যে কোন গোত্র বা আক্বীদার উভয় লিঙ্গের) তাদের ফিত্র বাড়ীর কর্তার দেওয়া ওয়াজিব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.